Ajker Patrika

চুলা থেকেই ৫৩টি অগ্নিকাণ্ড

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৪
চুলা থেকেই ৫৩টি অগ্নিকাণ্ড

প্রতিবছরই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নানা ক্ষয়ক্ষতি হয় । ২০২১ সালে মাগুরা জেলার চার উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে রান্নার চুলা ও গ্যাস থেকে এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটেছে বলে মাগুরা ফায়ার সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

চুলা থেকেই ৫৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ইলেকট্রিক চুলা, গ্যাস কিংবা অন্য কোনো মাধ্যম বলা হয়েছে। রান্নাঘরে সংঘটিত এসব আগুনে ক্ষতিগ্রস্তের প্রায় ৪৫ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বাসা বাড়ি কিংবা আবাসিক এলাকার ভবনে আগুনের ঘটনা যেখানে ৩৭টি। এসব আগুনে ক্ষতির পরিমাণ ২৯ লাখ টাকা।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস থেকে জানা গেছে, রান্নাঘরে গ্যাস ব্যবহারে ত্রুটি অনেকটা দায়ী এসব অগ্নিকাণ্ডের। তবে রান্না ঘরের অগ্নিকাণ্ডের পাশাপাশি খড়ের গাদা থেকেও আগুনে পুড়েছে ১৯টি। যেখানে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১১ লাখ টাকা। এসব অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ হিসেবে সিগারেটের টুকরোকে চিহ্নিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। শুধুমাত্র সিগারেটের টুকরো থেকে আগুন ধরেছে অন্তত ২৩টি। এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।

বৈদ্যুতিক গোলযোগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে ৪৫টি যেখানে ক্ষতির পরিমাণ ৭৩ লাখ টাকা। ভালো মানের তার ও সঠিক ভাবে ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ব্যবহার না করা অন্যতম কারণ এই অগ্নিকাণ্ড।

অন্যদিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড ঘটনা ৭টি। ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৫ লাখ টাকা। মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ও ত্রুটিপূর্ণ রেগুলেটর এ জন্য প্রধানত কারণ হতে পারে বলে জানা গেছে।

ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আগুনের মতো ঘটনা ১৫টি। সংখ্যা কম হলেও টাকার অঙ্কে এ ক্ষতি অনেক দেখা দিয়েছে। যেখানে মুদি দোকান ছাড়াও যেকোনো দোকান ও ভাসমান দোকানও উল্লেখ করা হয়েছে।

এখানে ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩৮ লাখ টাকা। বাসা বাড়ি বা আবাসিক ভবনে আগুনে ক্ষতির থেকেও অনেক বেশি।

অগ্নিকাণ্ডে মাগুরার হাটবাজারে ক্ষতির পরিমাণ ৪ লাখ টাকা। ৩টি মতো ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডের বেশির ভাগই মহম্মদপুর উপজেলা এলাকায়।

এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে কারণ হিসেবে জেলায় পোশাক শিল্পে ২টি তে ক্ষতি ১৩ লাখ টাকা, পাট গুদামে ১টি তে ক্ষতি ২৫ হাজার টাকা। গাড়ির আগুনে ১ টিতে প্রায় দেড় লাখ টাকা, বজ্রপাতে ১টি তে ২ হাজার, শত্রুতা করে অগ্নিসংযোগে ২ লাখ ৭০ হাজার এবং অজ্ঞাত কারণে অগ্নি কাণ্ডে ২৯ টিতে ক্ষতির পরিমাণ ৭ লাখ টাকা। মাগুরা ফায়ার সার্ভিস এ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এক প্রতিবেদন এসব উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে জেলায় অগ্নিকাণ্ডের ২৯টি কারণের ভেতরে অন্তত ১০টি উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে মোট ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৫৮৬৫০০ টাকা। এসব অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের দলটি উদ্ধার করেছে ৫ কোটি ৬২ লাখ ৩৫০০০ টাকার পরিমাপের সম্পদ।

অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সাধারণ মানুষের অবশ্যেই সচেতনতা দরকার বলে জানান মাগুরা ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মাসুদুর রহমান। তিনি জানান. সামান্য দেয়াশলাই থেকেও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। ইদানীং গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার বেড়েছে। আমরা গ্রাস সিলিন্ডার ব্যবহার যেন করি দেখেশুনে। মেয়াদ দেখে সঙ্গে সিলিন্ডার ঠিকঠাক আছে কিনা এটা দেখা জরুরি। সিগারেটের ফেলে দেওয়া জ্বলন্ত টুকরো থেকে খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। এ জন্য সচেতনতা দরকার। আসলে অগ্নিকাণ্ড কমানো সম্ভব যদি আমরা সকলে এটা ব্যবহারে সচেতন হই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত