Ajker Patrika

নিষেধাজ্ঞা না মেনে মাছ শিকার, নেই তদারকি

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, ১৩: ৪২
নিষেধাজ্ঞা না মেনে মাছ শিকার, নেই তদারকি

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করছেন জেলেরা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো জোরদার তদারকি না থাকায় জেলেরা বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। এ কারণে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের যে পদক্ষেপ, তা ভেস্তে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞাকালীন জেলেদের জন্য সরকার যে চাল বরাদ্দ দিয়েছে, তা এখনো তাঁদের ভাগ্যে জোটেনি বলে জানা গেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলেরা।

বাউফল মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ইলিশের ৫টি অভয়াশ্রমে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ২ মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে মৎস্য অধিদপ্তর। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বাউফলের চররুস্তম থেকে ভোলা জেলার চরভেদুরিয়া পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে। এ সীমানার মধ্যে কোনো প্রকার মাছ শিকারে জাল ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সরকারের। অথচ সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তেঁতুলিয়ায় মাছ শিকারে নামছেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ৬ হাজার জেলের তালিকা তৈরি করে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।

সরেজমিনে তেঁতুলিয়া নদীর কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, দিনের বেলায় জেলেরা নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করছেন। কোথাও কোথাও জেলেরা নৌকায় বসে নদীতে জাল ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে নদীর কোথাও দেখা মেলেনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। অভিযোগ রয়েছে, কালাইয়া নৌ পুলিশের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে উদাসীনতার কারণেই নদীতে বেপরোয়া জেলেরা।

ধুলিয়া এলাকার জেলে আব্দুর রহিম বলেন, ‘চলতি বছর নতুন করে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের অভাবের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি ঋণদান প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে আমাদের চলতে হয়। এরপর নদীতে জাল ফেলে যে মাছ পাই, তা বিক্রি করে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করি। তাই বাধ্য হয়ে নদীতে জাল ফেলতে হচ্ছে।’

শাহজাহান মাঝি নামের এক জেলে বলেন, ‘শুনেছি, এই দুই মাস নিষেধাজ্ঞায় আমাদের জন্য নাকি ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ১৫ দিনে হতে চলল, কিন্তু চালের দেখা নেই। অভাবের সংসার, ধারকর্জ করে চলতে হয়। কে কত দিন কাকে ধার দেয় বলেন! পেট তো চলে না। তাই নদীতে নামি। যা পাই, তা দিয়ে সংসার চালাই।’

ঢিলেঢালা অভিযানের অভিযোগ অস্বীকার করে কালাইয়া নৌ পুলিশের পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। অভিযান চলছে। অভিযুক্ত জেলেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।’

উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, ‘এত বড় এলাকায় আমাদের কমসংখ্যক লোকবল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। নদীর একদিকে অভিযান শুরু করলে অন্যদিকে জাল ফেলে মাছ শিকার করেন জেলেরা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত