Ajker Patrika

লাল শাপলার চেচুয়া বিল

সাইফুল আলম তুহিন, ত্রিশাল
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ০৬
Thumbnail image

প্রকৃতির অপরূপ সাজে সেজেছে ত্রিশালের লাল শাপলার বিল। চেচুয়া বিল নামে পরিচিত এ বিলে যত দূর চোখ যায়, লাল শাপলা ফুলের রক্তিম আভার হাতছানি। বিলের পানিতে মাথা উঁচু করে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা। মাঝে মাঝে দেখা যায় সাদা আর বেগুনি শাপলা ফুলও। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ এই সৌন্দর্য দেখতে এখন ভিড় জমাচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশাল এই বিলের যে অংশে শাপলা ফুটেছে, সেখানে যেতে বিড়ম্বনাও আছে পর্যটকদের। ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় অনেক পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয় শাপলার দেখা পেতে। তবুও ভ্রমণপিপাসুদের বিন্দুমাত্র পিছুটান নেই প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটারের পথ এই বিলের দূরত্ব। রামপুর ইউনিয়নের বিশাল বিলটি মানুষ চিনেছে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে। একদিন সকালে কিছু লোক দেখতে পায়, সেখানে জমাট বাধা কচু হঠাৎ সরে গিয়ে অনেকটা জায়গা ফাঁকা হয়েছে। এটাকে অলৌকিক ভেবে কয়েকজন গোসল করেন ও এর পানি খেয়ে রোগ থেকে মুক্ত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এটি দেখে হাজার হাজার মানুষ কাঁদাময় পথ পেরিয়ে গোসল, গড়াগড়ি ও কাদাযুক্ত পানি সংগ্রহ করতে ভিড় জমান।

এমন গুজবও ছড়ানো হয়েছিল, হাজারো মুশকিলের একমাত্র আসান এই চেচুয়া বিল। বিলের পানিতে এক ডুবেই সেরে যাবে যেকোনো রোগ। এখানকার মাটি ও পানিও নাকি সর্বরোগের ওষুধ। এই গুজবে হাজারো মানুষ ভিড় জমায় চেচুয়া বিলে।

পরে উপজেলা প্রশাসন চেচুয়া বিলের পানি, মাটি, কচুরিপানা ব্যবহার না করার জন্য প্রথমে মাইকে আহ্বান জানান। এতে কাজ না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লাঠি চার্জের আদেশ দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এদিকে সৌন্দর্য রক্ষায় বিলে ফুল তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঘুরতে আসা মানুষকে সহযোগিতা করছে এলাকাবাসী। এতে বিলটিতে দর্শনার্থীদের আগমনে ত্রিশাল উপজেলার নতুন একটি দর্শনীয় স্থানের সূচনা করবে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ-উল হাসান রাফি বলেন, ‘চেচুয়া বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর। দেখলে মনের ভেতর অন্যরকম প্রশান্তি কাজ করে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিদিন শিক্ষার্থী, শিক্ষকেরা আসছেন জায়গাটি দেখতে। তবে এখানে পৌঁছাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব নাজুক।’

শাপলা ফুলের সমাহার দেখতে আসা আবু রাইহান বলেন, ‘সত্যি অসাধারণ একটি জায়গা। শাপলা ফুলের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে এবং পর্যাপ্ত প্রচার পেলে এটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন যোগদানের পরই শুনেছি চেচুয়া বিলের গুজব কাণ্ডের কথা। তবে এখানে লাল পদ্মের সমাহার, যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমিকে মুগ্ধ করে। চেচুয়ার সৌন্দর্য ধরে রাখতে ও পর্যটকদের নিরবচ্ছিন্ন প্রকৃতি উপভোগের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত