Ajker Patrika

জ্বালানি সংকটে পোশাকশিল্পে লালবাতির দশা

ফারুক মেহেদী, ঢাকা
জ্বালানি সংকটে পোশাকশিল্পে লালবাতির দশা

তীব্র বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংকটে ধুঁকছে ঢাকা ও এর আশপাশের শিল্পকারখানা। চাহিদার তুলনায় কাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎ-গ্যাস না পাওয়ায় রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, বস্ত্র, চামড়াসহ বিভিন্ন খাতের হাজার হাজার ছোট-বড় শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অথচ কর্মীদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হচ্ছে।

এরই মধ্যে গতকাল পোশাক-মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে সামনে ২০ শতাংশ রপ্তানি কমে যাবে। ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের শিল্পমালিকেরা জানিয়েছেন, সরকার চাইলেই গ্যাসের সরবরাহ ব্যবস্থা সমন্বয় করে এবং আপৎকালীন স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করে শিল্পোৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে পারে। দ্রুত এ পদক্ষেপ না নিলে শিল্পকারখানা বসে পড়বে।

দেশের অন্যতম শীর্ষ নিট পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও ফতুল্লায় এ গ্রুপের বেশ কয়েকটি নিট কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় অন্তত ৪০ হাজার কর্মী কাজ করছেন। গতকাল এই গ্রুপের উদ্যোক্তা পরিচালক ড. কামরুজ্জামান কায়সার আজকের পত্রিকাকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের অর্ডার থাকলেও চাহিদামতো পণ্য উৎপাদন করতে পারছি না। গ্যাসের জাতীয় গ্রিডের ওপর আমরা নির্ভর করি। রাতে যখন প্রেশার আসে, তখন এক শিফট চালাতে পারি। বাকি সময়টা আমাদের ডিজেল দিয়ে চালাতে হয়। সব কটি কারখানায় প্রতিদিন ডিজেলের পেছনেই খরচ হয় প্রায় দুই লাখ টাকা।’ তিনি পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে জানিয়ে বলেন, খরচ বেড়ে গিয়ে সবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।

মাইক্রো ফাইবার গ্রুপের মতো রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের এ রকম হাজারো ছোট-বড় শিল্পকারখানায় সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। উদ্যোক্তারা এখন মরিয়া হয়ে ডিজেলে বাড়তি খরচ করেও শিল্প টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তাঁরা এখন কম গুরুত্বপূর্ণ খাত ও জায়গা থেকে সমন্বয় করে রাজধানীর আশপাশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তাঁরা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করে এসব স্থানে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরেও তাঁরা সরকারকে কাতার ও ওমানের সাথে চুক্তির আওতায় ১০০ এমএমসিএফ গ্যাস আনার পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকে আরও ১০০ এমএমসিএফ এলএনজি আমদানির সুপারিশ করেছেন।

ইভেন্স গ্রুপের উদ্যোক্তা ও বিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের শিল্পগুলো মারাত্মক গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটের কবলে। এ থেকে মুক্তি পেতে সরকারকে বলেছি স্পট মার্কেট থেকে অতিরিক্ত ১০০ এমএমসিএফ এলএনজি আমদানি করতে। এ জন্য বড়জোর ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার লাগবে। এটা দিয়ে আগামী ছয় মাস চলবে।

প্রয়োজনে আলোচনা করে আমরা বেশি দাম দিতেও রাজি আছি। সরকার যদি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে পুরো শিল্পকে টিকিয়ে রাখার উদ্যোগ না নেয়, তাহলে রিজার্ভ রেখে লাভ কী?’ তিনি বলেন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার সাথে আলাপ হয়েছে।

গ্যাস-সংকটে বেশি ভুগছে নিট রপ্তানি শিল্প। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। ডিজেল খরচ বেড়েছে। পরিবহন খরচ বেড়েছে। গ্যাস না থাকায় বাড়তি অর্থ খরচ করে সিএনজি কিনে চালাতে হচ্ছে।’

আজকের পত্রিকার গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার প্রতিনিধিরা রাজধানীর আশপাশের তিনটি অঞ্চলের শিল্পোৎপাদন পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তা ও তিতাস গ্যাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথেও আলাপ করেছেন।

আজকের পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি অরূপ রায় জানিয়েছেন, সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধিত শিল্প-বাণিজ্যিক স্থাপনা রয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০। এগুলোর জন্য দিনে ১৭০ এমএমসিএফ পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা রয়েছে, আর সরবরাহ করা হচ্ছে ১৪০-১৪২ এমএমসিএফ। ফলে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি কারখানাই গ্যাস-সংকটে পুরো উৎপাদন সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না। এতে দৈনন্দিন উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কর্মীরা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় অলস বসে থাকছেন। এতে উদ্যোক্তাদের লোকসান বাড়ছে।

স্থানীয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক অজিত চন্দ্র দেব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম থাকায় কারখানায় ঠিকমতো গ্যাস সরবরাহ দেওয়া যাচ্ছে না। এতে উৎপাদন কিছুটা কমছে বলে আমরা অভিযোগ পাচ্ছি।’

এদিকে রাজধানীর লাগোয়া শিল্পাঞ্চল গাজীপুরেও প্রায় একই অবস্থা চলছে। আজকের পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৬৫০ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেক। এতে লোডশেডিং বেড়েছে।

তিতাস গ্যাস-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ক্যাপটিভ পাওয়ার কেন্দ্র, সিএনজি স্টেশন ও আবাসিক মিলিয়ে প্রতিদিন ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। সেখানে গড়ে প্রতিদিন আড়াই শ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।

গাজীপুরের স্প্যারো অ্যাপারেলসের চিফ অপারেশন অফিসার শরিফুল রেজা জানান, তাঁদের কারখানায় প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয়। অন্যদিকে ১২-১৫ পিএসআই গ্যাসের চাপের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১ দশমিক ৫ থেকে ২ পিএসআই। ফলে কারখানা চালু রাখার জন্য ডিজেলে নির্ভর করতে হয়। এতে মাসে প্রায় এক কোটি টাকার ডিজেল খরচ হয়।

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সাদমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানা চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ-১-এর সিনিয়র জিএম যুবরাজ চন্দ্র পাল জানান, চাহিদার তুলনায় বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

তিতাস গ্যাসের জয়দেবপুর শাখার ব্যবস্থাপক নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, গাজীপুরের শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ক্যাপটিভ পাওয়ার কেন্দ্র, সিএনজি স্টেশন ও আবাসিক মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রতিদিন আড়াই শ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। কখনো এ ঘাটতি আরও বেড়ে যায়।

আজকের পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাবিত আল হাসান জানিয়েছেন, জেলায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে কলকারখানা রয়েছে অন্তত ছয় হাজার। এসব কারখানা সাম্প্রতিক সময়ের লোডশেডিং ও গ্যাস-সংকটে ভুগছে।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সহসভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, ‘আমাদের নতুন বিপত্তি গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকট। একদিকে টাকা আসছে না, অন্যদিকে ব্যাংক ইনস্টলমেন্টের জন্য চাপ দিচ্ছে, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে। আর গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, হাইকোর্টের রুল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত