Ajker Patrika

ফলন ও দামে খুশি কৃষকেরা

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ২৯ মে ২০২২, ১৫: ২৮
ফলন ও দামে খুশি কৃষকেরা

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গঙ্গাচড়ায় এবার ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। সেই সঙ্গে বাজারে এখন শস্যটির মূল্যও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে। এতে খুশি কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, এ রকম দাম পেলে ভবিষ্যতে ভুট্টার আবাদ আরও বাড়াবেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গঙ্গাচড়ায় এবার ৫ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। উপজেলার লক্ষ্মীটারী, মর্ণেয়া, কোলকোন্দ, নোহালী ও গজঘণ্টা ইউনিয়নে এই চাষ হয়েছে বেশি।

স্থানীয় বাজারে গত শুক্রবার কাঁচা ভুট্টা প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়। শুকনো ভুট্টার দাম ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কেউ জমি থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করছেন, কেউবা আবার দানা শুকাতে ব্যস্ত। কৃষকেরা বলছেন, শীতের বেশি প্রকোপ, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও রোদের প্রখরতা না থাকায় ভুট্টার মোচাগুলো বড় ও মোটা হয়েছে। এ ছাড়া দানাগুলো পরিপক্ব হাওয়ায় ওজন বেড়েছে। এক দোন (২৭ শতক) জমিতে প্রায় ৩০ মণ ভুট্টা পাওয়া যাচ্ছে।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের বিপুল রায় জানান, তিনি ১০০ শতক জমিতে ভুট্টার চাষ করেছিলেন। ফলন পেয়েছেন প্রায় ১১৫ মণ। তাঁর খরচ হয়েছিল সব মিলিয়ে ৩০ হাজার টাকার মতো। বর্তমান বাজারে ভুট্টা বিক্রি করলে দাম পাবেন ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ তাঁর লাভ হচ্ছে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা।

বিপুল বলেন, ‘এবার আমরা ভুট্টার দামে খুশি। যদি বাজারে ভুট্টার এই দাম থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে এলাকায় চাষ আরও বাড়বে।’

মর্ণেয়া ইউনিয়নের ছালাপাক গ্রামের হামিদুর ২০০ শতক জমিতে আগাম জাতের ভুট্টা লাগিয়েছিলেন। খরচ হয়েছিল ৭০ হাজার টাকার মতো। আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকায় তাঁর জমিতে ভুট্টা হয়েছে ২৫০ মণ, যা বিক্রি করে আসবে প্রায় ৩ লাখ টাকা।

হামিদুর জানান, তাঁদের এলাকায় ধানের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় তিনি ভুট্টা চাষ করছেন। তিনি সামনের মৌসুমে ভুট্টার চাষ আরও বাড়াবেন।

এদিকে ভুট্টাকে কেন্দ্র করে গ্রামগুলোতে অনেক যুবক মৌসুমি ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। তাঁরা কয়েকজন মিলে ভুট্টার ব্যবসা শুরু করেছেন। তাঁরা কৃষকদের বাড়িতে অথবা মাঠে গিয়ে দর-কষাকষি করে ভুট্টা কিনছেন। কোনো কোনো কৃষকের কাছ থেকে ভুট্টা কেনার জন্য আগাম টাকা দিচ্ছেন।

এ ছাড়া ভুট্টা মাড়াইয়ের জন্য গ্রামের অনেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্র কিনেছেন। তাঁরা কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অর্থ বা শস্যের বিনিময়ে ভুট্টা মাড়াই করে দিচ্ছেন।

কোলকোন্দ ইউনিয়নের কৃষক রায়হান বাবু বলেন, ‘৩০ শতক জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছিলাম। ফলন ভালোই হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাড়িতে মেশিন ভাড়া এনে মাড়াই করে নিয়েছি। আজকে (শুক্রবার) বাড়িতে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলাম। বাজারে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা নেই। বাজারে নিলে হাট ইজারাদারদের টাকা দিতে হয়। অত ঝামেলায় না গিয়ে বাড়িতে বিক্রি করাই ভালো।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এবারে উপজেলায় ৫ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত