Ajker Patrika

জারুল ফুলে সেজেছে প্রকৃতি

মো. শামীমুল ইসলাম, আগৈলঝাড়া
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ১০: ১৮
Thumbnail image

আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা, রাজিহার, বাকাল, বাগধা ও রত্নপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা মিলে অপরূপ এক দৃশ্যের। সবুজ প্রকৃতির মাঝে রোদ ঝলমলে জারুলগাছগুলোয় শোভা পাচ্ছে গাঢ় বেগুনি রঙের ফুল। চলার পথে পথিক থমকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন জারুল ফুলের বেগুনি রঙের আভা।

নীলাভ ও গোলাপি দুই রঙের জারুল ফুল বাংলাদেশে থাকলেও বেশির ভাগ জায়গায় নীল রঙের ফুলের গাছটিই বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

গাছের পাতা সবুজ এবং পুরু ও বেশ প্রশস্ত ধরনের। গাছের শাখা-প্রশাখা ও কাণ্ড শাখা প্রশাখার অগ্রভাগে দণ্ড বোঁটায় অসংখ্য ফুল ফোটে। বোঁটার নিচ থেকে প্রথম ফুল ফোটা শুরু হয়ে বোঁটার সামনের দিকে ধীরে ধীরে ফুল ফোটে।

এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত ফুল আসে। ফুল ঝরে পড়ার পর ফল পরিপক্ব হতে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগে। গাছ ফুলে ছেয়ে গেলেও চারপাশে তেমন সুগন্ধি ছড়ায় না। তবে এর দৃষ্টিনন্দন রং ও রূপের শোভায় সবারই চোখ আটকে যায়। জারুল ফুল ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। ফল ডিম্বাকার, শক্ত ও বাদামি। বীজ ১ সেন্টিমিটার চওড়া, পাতলা বাদামি রঙের। বীজে থেকেই এর বংশবৃদ্ধি হয়।

জারুল গাছ থেকে কাঠ করতে চাইলে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে। এর কাঠের রং লালচে ধরনের। জমি চাষের লাঙল, ঘর নির্মাণ, নৌকা ও আসবাবপত্র তৈরিতে এই কাঠ ব্যবহার করা যায়।

জারুলকে অনেকে বলেন বাংলার চেরি। গ্রীষ্মে অপূর্ব হয়ে ফোটে এই ফুল।

জারুলের রঙে মুগ্ধ হয়ে কবি আহসান হাবীব তাঁর স্বদেশ কবিতায় লিখেছেন

মনের মধ্যে যখন খুশি

এই ছবিটি আঁকি

এক পাশে তার জারুল গাছে

দুটি হলুদ পাখি,

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, জারুলের আদি নিবাস শ্রীলঙ্কায় হলেও এটি ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে জারুল গাছের দেখা মেলে। জারুল ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম লেজারস্ট্রমিয়া স্পেসিওসা। জারুল গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু হয়ে থাকে। গ্রীষ্মের শুরুতেই এর ফুল ফোটে এবং শরৎ পর্যন্ত দেখা যায়। জারুল গাছের বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাম হোসেন জানান, জারুল গাছের বিভিন্ন অংশের রয়েছে নানা ভেষজ গুণ। এই গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি মধুর সঙ্গে মিশিয়ে কয়েক দিন খেলে কাশি ভালো হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত