Ajker Patrika

বৃষ্টি হতে পারে, বন্যা নয়

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ৪৮
বৃষ্টি হতে পারে, বন্যা নয়

সুনামগঞ্জে আগামী চার দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া বিদ আব্দুর রহমান খান।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হাওর এলাকায় আকস্মিক বন্যা ও পূর্বাভাস সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন আব্দুর রহমান খান।

হগতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা হয়। এ সময় হাওরাঞ্চলে আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে আগাম বন্যার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র দপ্তর এবং দুর্যোগ বিষয়ক আঞ্চলিক সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্ট (সিআইএমওডি) এর যৌথ উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।

এতে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাউবোর প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জের বোরো ফসলরক্ষায় বাঁধের কাজে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখলে বাঁধে ঝুঁকি থাকবে না। আমাদের লক্ষ্য হাওরাঞ্চলের বোরো ফসল রক্ষা করা।

সভায় আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান জানান, আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না। তিনি বলেন, ভারতের মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি হওয়ায় জেলার নদ-নদীর পানি বেড়েছে। যেহেতু নদীর পানি বাড়ছে সুতরাং এই সময় কৃষকদের সচেতন থাকতে হবে।

বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে গাছের নিচে আশ্রয় না নিয়ে ঘরের ভেতর থাকার আহ্বান জানান তিনি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পাউবো প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূইয়া বলেন, অন্যান্য সময় মার্চের শেষের দিকে ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনে এপ্রিলের দিকেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি বলেন, আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এই তিন দিন যদি ১০০ মিলিমিটারের ওপরে বৃষ্টি হয় তাহলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। আর এর নিচে থাকলে সমস্যা হবে না।

এদিকে জেলার হাওরাঞ্চলে আর কদিন পরেই বোরো ধান পাকতে শুরু করবে। এর মধ্যেই ভারী বর্ষণ ও নদীর পানি বাড়ার পূর্বাভাসে চিন্তিত হাওরাঞ্চলের কৃষক। ইতিমধ্যেই নদ-নদীর পানি বাড়ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, হাওরে এবার বোরোর আবাদ হয়েছে দুই লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় পাউবো থেকে আবহাওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলতি মার্চ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এবার শতভাগ আবাদ করা হয়েছে। আশা করি ধানের ফলনও ভালো হবে।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ধান পাকতে শুরু করেছে। যেসব এলাকায় ধান পেকে যাবে সেসব এলাকায় দ্রুত ধান কেটে ফেলার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশ দেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন নেপালের আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র সিআইএমওডি এর কর্মকর্তা বীরেন্দ্র বাজরাঙ্গী। তিনি বলেন, এটি আঞ্চলিক সহযোগী সংস্থা। উন্নত স্যাটেলাইট ও জিআইএস প্রযুক্তির সাহায্যে বিভিন্ন দেশের দুর্যোগ প্রতিরোধ বিষয়ে সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পাউবোর প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম, মো. সামছোদ্দোহা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত