Ajker Patrika

গুদামে ধান দিতে অনীহা

হিরামন মণ্ডল সাগর, বটিয়াঘাটা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৫৭
গুদামে ধান দিতে অনীহা

সারা দেশের মতো খুলনার বটিয়াঘাটায়ও ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মমিনুর রহমান এ অভিযানের উদ্বোধন করেন। তবে ধানের সংগ্রহ মূল্য বাজারমূল্যের চেয়ে কম ধার্য করায় চাষিরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা আহম্মেদ আলী জানান, এ বছর বটিয়াঘাটায় ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সরকারিভাবে ধার্য করা হয়েছে ধান ৪৫১ মেট্রিক টন ও চাল ৭৪০ মেট্রিক টন। চালের সংগ্রহ মূল্য ধরা হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। ধানের সংগ্রহ মূল্য ২৭ টাকা। সদ্য যোগদানকারী এ কর্মকর্তা আশা করছেন, সরকার নির্ধারিত সময়ের আগে ধান ও চাল সংগ্রহ করতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সরকার এটা জাতীয় পর্যায়ে নিয়েছে। নিশ্চয়ই কৃষক বাইরে বেশি দাম পেলে তাঁরা সেখানে ধান বিক্রি করতে পারবেন। কৃষক যেখানে বেশি দাম পাবেন, সেখানেই ধান বিক্রি করবেন। এটা তাঁদের অধিকার। সরকারি খাদ্যগুদামে ধান-চাল বিক্রি করতে চাইলে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক কৃষকদের বিক্রি করতে হবে।

উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি গৌরদাস ঢালি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক খাদ্যগুদামে ধান দিতে হলে সেক্ষেত্রে কৃষকদের অনেক সমস্যা হবে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী একজন কৃষককে ধান লাগাতে খরচ হয় অনেক। ধান লাগাতে হয় সার, কীটনাশক ও বিভিন্ন ওষুধসহ নানা সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। ধান রোপণে চড়া দামে শ্রমিকও খাটাতে হয়।

এখন সরকারি মূল্য ধরা হয়েছে কেজিপ্রতি ২৭ টাকা। অথচ বর্তমান বাজারে এটি প্রায় ৩৭ টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে। ফলে এত অল্প দামে গুদামে ধান দিলে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। সরকার একটু সদয় হয়ে বিবেচনা করলে কৃষকেরা তাঁদের ক্ষতি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ধানের মূল্য মণপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা। নতুন ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকার বেশি। সেক্ষেত্রে কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান-চাল বিক্রি করলে তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।

বটিয়াঘাটা হেতালবুনিয়া এলাকার কৃষক অজিত রায় বলেন, ‘বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী খাদ্যগুদামের ধানের দাম অনেক কম। তাই আমিসহ আমাদের এলাকার বেশির ভাগ কৃষক এবার খাদ্যগুদামে ধান-চাল বিক্রি করতে রাজি নই। কারণ আমাদের ধান-চাল উৎপাদন করতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, তাতে গুদামে বিক্রি করলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

গত বছরে বটিয়াঘাটা খাদ্যগুদামে ধান-চালের মূল্য কম থাকায় সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকির হোসেন বলেন, ধান-চালের মূল্য কম থাকায় গতবার কৃষকেরা গুদামে ধান বিক্রয় করেছিলেন অনেক কম। যে কারণে সরকারের চাহিদা অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি।

এদিকে গত রোববার সকালে বটিয়াঘাটা খাদ্যগুদামে আমন ধান সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়। বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান এর উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকির হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রবিউল ইসলাম, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি গৌরদাস ঢালী, বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক এনায়েত আলী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম শাহীন, সাংবাদিক অজিত রায়সহ অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত