Ajker Patrika

এই বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের হবে যদি...

জেমি ডে সাবেক কোচ, বাংলাদেশ
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২২, ১১: ৩৯
এই বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের হবে যদি...

বাছাইপর্বের সেরা হয়েই বিশ্বকাপে খেলতে এসেছে ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষরা তুলনামূলক সহজ হওয়ায় সেখানে তারা ১০ ম্যাচের ৮টিতেই জিতেছে। আসল প্রশ্ন হচ্ছে, কাতারে এই দলটা কি সত্যি মূল মঞ্চে দাপট দেখাতে পারবে?

নেশনস কাপে যাচ্ছেতাই একটা অবস্থা হয়েছিল ইংল্যান্ডের। গ্রুপের তলানিতে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে হয়েছে, পুল ‘বি’তে অবনমিত হতে হয়েছে। দলকে দেখে মনে হয়েছে খাপছাড়া, উদ্দেশ্যহীন। খেলোয়াড়দের মধ্যে সৃজনশীলতার অভাবটাও বড্ড প্রকট ঠেকেছে।

সমর্থকদের জন্য আসল সমস্যা হলো, কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের খেলার দর্শন। অনেক ইংলিশ সমর্থক তাঁর কৌশলকে পছন্দ করছেন না। সাউথগেটে বেশ নেতিবাচকভাবে দলটাকে খেলাচ্ছেন। আক্রমণের চেয়ে খেলায় না হারার দিকেই তাঁর বেশি মনোযোগ। যেসব খেলোয়াড় তাঁর এই কৌশলে খাপ খাওয়াতে পারছে না, তাদের সাউথগেট বাদও দিয়ে দিয়েছেন।

১৯৬৬ সালের পর থেকে ইংল্যান্ড বড় কোনো শিরোপা জেতেনি। এবারের বিশ্বকাপে ফাইনালে যাওয়ার একটাই সম্ভাবনা আছে যদি খেলোয়াড়দের তাদের মতো করে খেলতে দেওয়া হয় এবং চাপ নামের শিকল ছিঁড়ে ফেলা সম্ভব হয়।

এই দলটা তারুণ্য আর অভিজ্ঞতায় মেশানো দারুণ একটা দল। প্রচুর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে সবার। তিন গোলরক্ষকও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিত খেলছে আর পরীক্ষিত। রক্ষণের খেলোয়াড়েরা আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের আক্রমণে সঙ্গ দিতে পারে আবার নিজেদের রক্ষণটাও ভালো করে সামলাতে পারে। নিজেদের কাজে তারা বেশ ‘সলিড’। রাইস, হেন্ডারসন, বেলিংহামরা মাঝমাঠ থেকে আক্রমণে বলের জোগানটা হ্যারি কেন, ফিল ফোডেন, বুকায়ো সাকা আর রহিম স্টার্লিংদের বেশ সুন্দর করে দিতে পারে। ফর্মে থাকলে হ্যারি কেনই হবে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের চাবিকাঠি। সুযোগ পেলে সে যেমন গোল করতে পারবে, তেমনি নেতৃত্বও ইংল্যান্ডকে দিতে পারে শিরোপার সুবাস।

সবশেষ টুর্নামেন্টগুলোয় ইংল্যান্ড ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলেছে। বিষয়টা আমার কাছে বেশ নেতিবাচক মনে হয়েছে। বিশেষ করে সমকক্ষ ও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৫ খেলোয়াড়কে রক্ষণে রেখে বলের জন্য হাঁসফাঁস করা আর সুযোগ পেলে প্রতি আক্রমণের অপেক্ষায় থাকাটা আমার ঠিক পছন্দ হচ্ছে না। আমার ব্যক্তিগত মত, ইংল্যান্ড ৪-২-৩-১ ছকে খেলতে পারে এবং যতটা সম্ভব কৌশলগত প্রতিভাধর ফুটবলারকে বিশ্বকাপে খেলানো উচিত। আমার মতে, ইংল্যান্ডের আসল শক্তি তাদের আক্রমণ। এই বিভাগে যতটা সম্ভব কার্যকর ফুটবলার খেলানো উচিত এবং আক্রমণে তাদের স্বাধীনতা দেওয়া উচিত।

শেষ পর্যন্ত যদি একটা দল হয়ে খেলা যায়, ভয়কে দূরে ছুড়ে ফেলা যায় আর দলের মূল তারকারা যদি জ্বলে উঠতে পারে, তাহলে বলব এবারের বিশ্বকাপটা আমাদেরই হবে।

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব আমরা সহজেই পার হয়ে যেতে পারব বলে মনে হয়। প্রতিপক্ষ যারা আছে, তাদের তুলনায় আমাদের দলটাই বেশি প্রতিভাধর। ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার সম্ভাবনা আছে। কারণ, তাঁরা অনেকটা ইংল্যান্ডের মতোই। অতীতেও তাঁরা ইংল্যান্ডের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে। দেখা গেল গ্যারেথ বেল কোনো জাদুকরি খেলায় ম্যাচের ফল পাল্টে দিল। বড় টুর্নামেন্টে তাঁর ভালো খেলার সুনাম আছে। অসাধারণ অবকাঠামো আর সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও ফুটবলে যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই মাঝারি মানের দল।

আমার মতে, ইরান এই গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল যদিও বিশ্বকাপের মতো আসরে সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবে কাউকে ভাবার সুযোগ নেই।আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানির মতো দলগুলো সবসময়ই ইংল্যান্ডের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ। ফুটবলাররা যদি ভয়ডরহীনভাবে খেলতে পারে, এদের হারানো কঠিন কিছু হবে না। অতীতেও আমরা দেখিয়েছি, এদের হারানো কঠিন কিছু না।

গত বিশ্বকাপের মতো এবারও ইংল্যান্ডের সেমিফাইনাল খেলার ভালো সম্ভাবনা আছে। সে পর্যন্ত খেলতে পারলে আমাদের জন্য বড় অর্জনই হবে। তবে শেষ পর্যন্ত যদি একটা দল হয়ে খেলা যায়, ভয়কে দূরে ছুড়ে ফেলা যায় আর দলের মূল তারকারা যদি জ্বলে উঠতে পারে, তাহলে বলব এবারের বিশ্বকাপটা আমাদেরই হবে। আর সেমিফাইনালের আগেই যদি ইংল্যান্ড বাদ পড়ে যায়, তাহলে সেটা হবে একটা বড় বিপর্যয় আর তখন সাউথগেটের উচিত হবে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত