নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতির লাগাম টানতে মামলা-গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। আরও মামলা হচ্ছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে।
গতকাল রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের মনিটরিং শুরু করা হয়েছে।
পীরগঞ্জে ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের এসব ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠন। এসব বিক্ষোভে সাধারণ মানুষকেও অংশ নিতে দেখা যায়। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
গত রোববার রাত ১০টার দিকে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া-বটতলা ও বড়করিমপুর গ্রামের অন্তত ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে বাড়ি ঘর, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী ও অলংকারসহ মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিন্দুদের পাশাপাশি এই ঘটনায় স্তব্ধ এলাকাবাসী। আতঙ্ক আর উদ্বেগে দিন কাটছে মানুষের।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় এক যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। তাঁর পোস্টে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে বলে একটি চক্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাঁরা ওই যুবকের বাড়ি ঘিরে ফেললে লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে আগুন দেয় হামলাকারীরা। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই ঘটনায় সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ইতিমধ্যে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। সেখানে ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা ৯০ টির বেশি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। সেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পীরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন তাদের নগদ অর্থ, শাড়ি-কাপড় বিতরণ করেছে। তাদের বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিদর্শনা দিয়েছেন, যার যা প্রয়োজন দেওয়া হবে। খুব শিগগিরই আমরা তাদের বাড়ি-ঘর তৈরি করে দেব।
গতকাল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, শোক আর ভয়ের এক পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো গ্রামটিতে। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে সবার। ক্ষতিগ্রস্তরা শুধু নয়, সবার মনের অবস্থাই একই রকম। দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের সামনে বুক চাপড়ে কাঁদতে দেখা গেছে অনেককে।
নিজের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই জানিয়ে কাঁদতে থাকেন ননি গোপাল। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়ির পাশে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পূজা করছিলাম। হঠাৎ বাইরে হইচই শুনতে পাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শত শত লোক দল বেঁধে আশপাশের বাড়ি ঘরে হামলা চালাতে শুরু করে। লুট করে নিয়ে যায় গরু ও স্বর্ণালংকার। একপর্যায়ে হামলাকারীরা মন্দিরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। চোখের সামনেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। ভয়ে মন্দির থেকে বের হয়ে ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম।
একই গ্রামের সুমতি রানি সর্বস্ব হারিয়ে বুক চাপড়ে আহাজারি করছিলেন। সুমতির ছেলে প্রদীপ চন্দ্র বলেন, হঠাৎ রাতে দলে দলে অনেক মানুষ বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মারধর করে, হুমকি দেয়, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিকেল রায় বলেন, যখন বাড়িঘরে আগুন জ্বলছিল, তখন বাচ্চাকে নিয়ে পাশের ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম। ঘর, ধান, চাল ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হামলাকারীরা বাড়ির সব টাকাপয়সা নিয়ে গেছে। বাচ্চাটার খাওয়ারও কিছু নাই। আমরা কী দোষ করছিলাম? এখন আমরা কোথায় থাকব, কী করব, কী খাব? এসবের কি বিচার কি আমরা পাব? এই নিষ্ঠুরতার বিচার চাই।
জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পাঁচ শ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই যুবককেও খোঁজা হচ্ছে। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কোনো ছাড় নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে অনেকের নাম পরিচয় পেয়েছি। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখছি। হামলাকারীরা হানাদার বাহিনীর মতো বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। যারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। হামলা ও লুটপাটের শিকার ৭৭টি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বল দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার বিতরণও করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ও পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরসহ উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দায়ী করে রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর ছাত্রলীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাসদ, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)।
এদিকে কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপের ঘটনায় নগরীর টাউন হলে গণ-জমায়েতসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল নানুয়াদীঘির পাড় পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় জেলার কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি থানায় এ পর্যন্ত আটটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াত সমর্থিত তিন কাউন্সিলর, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতিসহ ৭৯২ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় ৯২ জনের নাম এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির তিন কার্য দিবসে গতকাল তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৫ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১৩ অক্টোবর রাতে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুর্গা মন্দির ভাঙচুরসহ প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পৃথক ৫টি মামলা হয়েছে। চারটি মামলায় পুলিশ ও একটিতে মন্দির কমিটির সভাপতি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় ৩৫ জনের নাম করে এবং ছয় থেকে সাত শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত রোববার দিবাগত রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পিতলের মূর্তি চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বানিয়াচং উপজেলার ১১ নম্বর মক্রমপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামের দিঘীরপাড়ে এই মূর্তি চুরির ঘটনা ঘটে। মূর্তি চুরির ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আব্দুল মজিদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আটটি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতপরিচয়সহ প্রায় তিন শ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মইদাইল পূজামণ্ডপে হামলায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল করিম (৪০)-কে পুলিশ আটক করে পরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির দায়ের করা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তারেকুল ইসলাম (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আলীনগর ইউনিয়নের ও কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করায় গত শনিবার সকালে কামারছড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ফেনীতে তিনটি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করেছে র্যাব ও পুলিশ। এ সময় অজ্ঞাত চার শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মন্দিরে হামলা ও পুরোহিতকে মারধরের ঘটনায় লাবিব নামে এক কলেজ ছাত্রসহ ছয়জনকে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতির লাগাম টানতে মামলা-গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। আরও মামলা হচ্ছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে।
গতকাল রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের মনিটরিং শুরু করা হয়েছে।
পীরগঞ্জে ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের এসব ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠন। এসব বিক্ষোভে সাধারণ মানুষকেও অংশ নিতে দেখা যায়। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
গত রোববার রাত ১০টার দিকে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া-বটতলা ও বড়করিমপুর গ্রামের অন্তত ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে বাড়ি ঘর, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী ও অলংকারসহ মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিন্দুদের পাশাপাশি এই ঘটনায় স্তব্ধ এলাকাবাসী। আতঙ্ক আর উদ্বেগে দিন কাটছে মানুষের।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় এক যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। তাঁর পোস্টে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে বলে একটি চক্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাঁরা ওই যুবকের বাড়ি ঘিরে ফেললে লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে আগুন দেয় হামলাকারীরা। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই ঘটনায় সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ইতিমধ্যে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। সেখানে ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা ৯০ টির বেশি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। সেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পীরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন তাদের নগদ অর্থ, শাড়ি-কাপড় বিতরণ করেছে। তাদের বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিদর্শনা দিয়েছেন, যার যা প্রয়োজন দেওয়া হবে। খুব শিগগিরই আমরা তাদের বাড়ি-ঘর তৈরি করে দেব।
গতকাল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, শোক আর ভয়ের এক পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো গ্রামটিতে। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে সবার। ক্ষতিগ্রস্তরা শুধু নয়, সবার মনের অবস্থাই একই রকম। দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের সামনে বুক চাপড়ে কাঁদতে দেখা গেছে অনেককে।
নিজের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই জানিয়ে কাঁদতে থাকেন ননি গোপাল। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়ির পাশে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পূজা করছিলাম। হঠাৎ বাইরে হইচই শুনতে পাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শত শত লোক দল বেঁধে আশপাশের বাড়ি ঘরে হামলা চালাতে শুরু করে। লুট করে নিয়ে যায় গরু ও স্বর্ণালংকার। একপর্যায়ে হামলাকারীরা মন্দিরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। চোখের সামনেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। ভয়ে মন্দির থেকে বের হয়ে ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম।
একই গ্রামের সুমতি রানি সর্বস্ব হারিয়ে বুক চাপড়ে আহাজারি করছিলেন। সুমতির ছেলে প্রদীপ চন্দ্র বলেন, হঠাৎ রাতে দলে দলে অনেক মানুষ বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মারধর করে, হুমকি দেয়, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিকেল রায় বলেন, যখন বাড়িঘরে আগুন জ্বলছিল, তখন বাচ্চাকে নিয়ে পাশের ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম। ঘর, ধান, চাল ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হামলাকারীরা বাড়ির সব টাকাপয়সা নিয়ে গেছে। বাচ্চাটার খাওয়ারও কিছু নাই। আমরা কী দোষ করছিলাম? এখন আমরা কোথায় থাকব, কী করব, কী খাব? এসবের কি বিচার কি আমরা পাব? এই নিষ্ঠুরতার বিচার চাই।
জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পাঁচ শ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই যুবককেও খোঁজা হচ্ছে। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কোনো ছাড় নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে অনেকের নাম পরিচয় পেয়েছি। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখছি। হামলাকারীরা হানাদার বাহিনীর মতো বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। যারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। হামলা ও লুটপাটের শিকার ৭৭টি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বল দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার বিতরণও করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ও পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরসহ উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দায়ী করে রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর ছাত্রলীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাসদ, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)।
এদিকে কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপের ঘটনায় নগরীর টাউন হলে গণ-জমায়েতসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল নানুয়াদীঘির পাড় পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় জেলার কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি থানায় এ পর্যন্ত আটটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াত সমর্থিত তিন কাউন্সিলর, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতিসহ ৭৯২ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় ৯২ জনের নাম এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির তিন কার্য দিবসে গতকাল তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৫ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১৩ অক্টোবর রাতে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুর্গা মন্দির ভাঙচুরসহ প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পৃথক ৫টি মামলা হয়েছে। চারটি মামলায় পুলিশ ও একটিতে মন্দির কমিটির সভাপতি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় ৩৫ জনের নাম করে এবং ছয় থেকে সাত শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত রোববার দিবাগত রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পিতলের মূর্তি চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বানিয়াচং উপজেলার ১১ নম্বর মক্রমপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামের দিঘীরপাড়ে এই মূর্তি চুরির ঘটনা ঘটে। মূর্তি চুরির ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আব্দুল মজিদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আটটি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতপরিচয়সহ প্রায় তিন শ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মইদাইল পূজামণ্ডপে হামলায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল করিম (৪০)-কে পুলিশ আটক করে পরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির দায়ের করা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তারেকুল ইসলাম (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আলীনগর ইউনিয়নের ও কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করায় গত শনিবার সকালে কামারছড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ফেনীতে তিনটি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করেছে র্যাব ও পুলিশ। এ সময় অজ্ঞাত চার শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মন্দিরে হামলা ও পুরোহিতকে মারধরের ঘটনায় লাবিব নামে এক কলেজ ছাত্রসহ ছয়জনকে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতির লাগাম টানতে মামলা-গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। আরও মামলা হচ্ছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে।
গতকাল রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের মনিটরিং শুরু করা হয়েছে।
পীরগঞ্জে ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের এসব ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠন। এসব বিক্ষোভে সাধারণ মানুষকেও অংশ নিতে দেখা যায়। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
গত রোববার রাত ১০টার দিকে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া-বটতলা ও বড়করিমপুর গ্রামের অন্তত ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে বাড়ি ঘর, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী ও অলংকারসহ মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিন্দুদের পাশাপাশি এই ঘটনায় স্তব্ধ এলাকাবাসী। আতঙ্ক আর উদ্বেগে দিন কাটছে মানুষের।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় এক যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। তাঁর পোস্টে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে বলে একটি চক্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাঁরা ওই যুবকের বাড়ি ঘিরে ফেললে লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে আগুন দেয় হামলাকারীরা। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই ঘটনায় সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ইতিমধ্যে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। সেখানে ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা ৯০ টির বেশি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। সেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পীরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন তাদের নগদ অর্থ, শাড়ি-কাপড় বিতরণ করেছে। তাদের বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিদর্শনা দিয়েছেন, যার যা প্রয়োজন দেওয়া হবে। খুব শিগগিরই আমরা তাদের বাড়ি-ঘর তৈরি করে দেব।
গতকাল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, শোক আর ভয়ের এক পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো গ্রামটিতে। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে সবার। ক্ষতিগ্রস্তরা শুধু নয়, সবার মনের অবস্থাই একই রকম। দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের সামনে বুক চাপড়ে কাঁদতে দেখা গেছে অনেককে।
নিজের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই জানিয়ে কাঁদতে থাকেন ননি গোপাল। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়ির পাশে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পূজা করছিলাম। হঠাৎ বাইরে হইচই শুনতে পাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শত শত লোক দল বেঁধে আশপাশের বাড়ি ঘরে হামলা চালাতে শুরু করে। লুট করে নিয়ে যায় গরু ও স্বর্ণালংকার। একপর্যায়ে হামলাকারীরা মন্দিরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। চোখের সামনেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। ভয়ে মন্দির থেকে বের হয়ে ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম।
একই গ্রামের সুমতি রানি সর্বস্ব হারিয়ে বুক চাপড়ে আহাজারি করছিলেন। সুমতির ছেলে প্রদীপ চন্দ্র বলেন, হঠাৎ রাতে দলে দলে অনেক মানুষ বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মারধর করে, হুমকি দেয়, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিকেল রায় বলেন, যখন বাড়িঘরে আগুন জ্বলছিল, তখন বাচ্চাকে নিয়ে পাশের ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম। ঘর, ধান, চাল ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হামলাকারীরা বাড়ির সব টাকাপয়সা নিয়ে গেছে। বাচ্চাটার খাওয়ারও কিছু নাই। আমরা কী দোষ করছিলাম? এখন আমরা কোথায় থাকব, কী করব, কী খাব? এসবের কি বিচার কি আমরা পাব? এই নিষ্ঠুরতার বিচার চাই।
জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পাঁচ শ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই যুবককেও খোঁজা হচ্ছে। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কোনো ছাড় নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে অনেকের নাম পরিচয় পেয়েছি। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখছি। হামলাকারীরা হানাদার বাহিনীর মতো বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। যারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। হামলা ও লুটপাটের শিকার ৭৭টি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বল দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার বিতরণও করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ও পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরসহ উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দায়ী করে রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর ছাত্রলীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাসদ, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)।
এদিকে কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপের ঘটনায় নগরীর টাউন হলে গণ-জমায়েতসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল নানুয়াদীঘির পাড় পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় জেলার কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি থানায় এ পর্যন্ত আটটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াত সমর্থিত তিন কাউন্সিলর, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতিসহ ৭৯২ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় ৯২ জনের নাম এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির তিন কার্য দিবসে গতকাল তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৫ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১৩ অক্টোবর রাতে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুর্গা মন্দির ভাঙচুরসহ প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পৃথক ৫টি মামলা হয়েছে। চারটি মামলায় পুলিশ ও একটিতে মন্দির কমিটির সভাপতি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় ৩৫ জনের নাম করে এবং ছয় থেকে সাত শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত রোববার দিবাগত রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পিতলের মূর্তি চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বানিয়াচং উপজেলার ১১ নম্বর মক্রমপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামের দিঘীরপাড়ে এই মূর্তি চুরির ঘটনা ঘটে। মূর্তি চুরির ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আব্দুল মজিদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আটটি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতপরিচয়সহ প্রায় তিন শ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মইদাইল পূজামণ্ডপে হামলায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল করিম (৪০)-কে পুলিশ আটক করে পরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির দায়ের করা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তারেকুল ইসলাম (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আলীনগর ইউনিয়নের ও কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করায় গত শনিবার সকালে কামারছড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ফেনীতে তিনটি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করেছে র্যাব ও পুলিশ। এ সময় অজ্ঞাত চার শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মন্দিরে হামলা ও পুরোহিতকে মারধরের ঘটনায় লাবিব নামে এক কলেজ ছাত্রসহ ছয়জনকে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতির লাগাম টানতে মামলা-গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। আরও মামলা হচ্ছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে।
গতকাল রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের মনিটরিং শুরু করা হয়েছে।
পীরগঞ্জে ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের এসব ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠন। এসব বিক্ষোভে সাধারণ মানুষকেও অংশ নিতে দেখা যায়। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
গত রোববার রাত ১০টার দিকে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া-বটতলা ও বড়করিমপুর গ্রামের অন্তত ২৫টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে বাড়ি ঘর, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নগদ টাকা, খাদ্যসামগ্রী ও অলংকারসহ মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিন্দুদের পাশাপাশি এই ঘটনায় স্তব্ধ এলাকাবাসী। আতঙ্ক আর উদ্বেগে দিন কাটছে মানুষের।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় এক যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত। তাঁর পোস্টে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে বলে একটি চক্র উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাঁরা ওই যুবকের বাড়ি ঘিরে ফেললে লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে আগুন দেয় হামলাকারীরা। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই ঘটনায় সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ইতিমধ্যে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। সেখানে ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা ৯০ টির বেশি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। সেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পীরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন তাদের নগদ অর্থ, শাড়ি-কাপড় বিতরণ করেছে। তাদের বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিদর্শনা দিয়েছেন, যার যা প্রয়োজন দেওয়া হবে। খুব শিগগিরই আমরা তাদের বাড়ি-ঘর তৈরি করে দেব।
গতকাল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, শোক আর ভয়ের এক পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো গ্রামটিতে। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে গেছে সবার। ক্ষতিগ্রস্তরা শুধু নয়, সবার মনের অবস্থাই একই রকম। দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের সামনে বুক চাপড়ে কাঁদতে দেখা গেছে অনেককে।
নিজের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই জানিয়ে কাঁদতে থাকেন ননি গোপাল। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়ির পাশে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পূজা করছিলাম। হঠাৎ বাইরে হইচই শুনতে পাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শত শত লোক দল বেঁধে আশপাশের বাড়ি ঘরে হামলা চালাতে শুরু করে। লুট করে নিয়ে যায় গরু ও স্বর্ণালংকার। একপর্যায়ে হামলাকারীরা মন্দিরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। চোখের সামনেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। ভয়ে মন্দির থেকে বের হয়ে ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম।
একই গ্রামের সুমতি রানি সর্বস্ব হারিয়ে বুক চাপড়ে আহাজারি করছিলেন। সুমতির ছেলে প্রদীপ চন্দ্র বলেন, হঠাৎ রাতে দলে দলে অনেক মানুষ বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মারধর করে, হুমকি দেয়, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিকেল রায় বলেন, যখন বাড়িঘরে আগুন জ্বলছিল, তখন বাচ্চাকে নিয়ে পাশের ধানখেতে লুকিয়ে ছিলাম। ঘর, ধান, চাল ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হামলাকারীরা বাড়ির সব টাকাপয়সা নিয়ে গেছে। বাচ্চাটার খাওয়ারও কিছু নাই। আমরা কী দোষ করছিলাম? এখন আমরা কোথায় থাকব, কী করব, কী খাব? এসবের কি বিচার কি আমরা পাব? এই নিষ্ঠুরতার বিচার চাই।
জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পাঁচ শ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই যুবককেও খোঁজা হচ্ছে। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কোনো ছাড় নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে অনেকের নাম পরিচয় পেয়েছি। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখছি। হামলাকারীরা হানাদার বাহিনীর মতো বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। যারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। হামলা ও লুটপাটের শিকার ৭৭টি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বল দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাবার বিতরণও করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ও পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরসহ উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে দায়ী করে রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর ছাত্রলীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাসদ, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)।
এদিকে কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপের ঘটনায় নগরীর টাউন হলে গণ-জমায়েতসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল নানুয়াদীঘির পাড় পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় জেলার কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি থানায় এ পর্যন্ত আটটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াত সমর্থিত তিন কাউন্সিলর, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতিসহ ৭৯২ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় ৯২ জনের নাম এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদিকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির তিন কার্য দিবসে গতকাল তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৫ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১৩ অক্টোবর রাতে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুর্গা মন্দির ভাঙচুরসহ প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পৃথক ৫টি মামলা হয়েছে। চারটি মামলায় পুলিশ ও একটিতে মন্দির কমিটির সভাপতি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় ৩৫ জনের নাম করে এবং ছয় থেকে সাত শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত রোববার দিবাগত রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পিতলের মূর্তি চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বানিয়াচং উপজেলার ১১ নম্বর মক্রমপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামের দিঘীরপাড়ে এই মূর্তি চুরির ঘটনা ঘটে। মূর্তি চুরির ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আব্দুল মজিদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আটটি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতপরিচয়সহ প্রায় তিন শ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মইদাইল পূজামণ্ডপে হামলায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল করিম (৪০)-কে পুলিশ আটক করে পরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির দায়ের করা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তারেকুল ইসলাম (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আলীনগর ইউনিয়নের ও কামারছড়া চা বাগান মণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করায় গত শনিবার সকালে কামারছড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ফেনীতে তিনটি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করেছে র্যাব ও পুলিশ। এ সময় অজ্ঞাত চার শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মন্দিরে হামলা ও পুরোহিতকে মারধরের ঘটনায় লাবিব নামে এক কলেজ ছাত্রসহ ছয়জনকে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
১৯ অক্টোবর ২০২১‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
১৯ অক্টোবর ২০২১গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
১৯ অক্টোবর ২০২১গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এখন অনেকটাই শান্ত ওই এলাকা। তবে ওই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
১৯ অক্টোবর ২০২১গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫