আব্দুর রাজ্জাক
দুর্নীতি একটা মহামারি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান অবস্থা যে রকম দাঁড়িয়েছে, তাতে সঠিকভাবে, ন্যায্যভাবে কোনো কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা করপোরেশনে; যেকোনো অফিসে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। সেটা হয়তো সংখ্যায় খুব কম। এই কমসংখ্যক বাদ দিয়ে সর্বক্ষেত্রেই দুর্নীতি চলছে।
সর্বক্ষেত্রে একটি পারসেন্টেজ ধরা আছে। আপনাকে সেই পারসেন্টেজ অনুসারে ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে। যদি আপনি সরকারের কোনো বড় কর্মকর্তা বা ক্ষমতাসীন দলের বড় কোনো হোমরাচোমরা না হন অথবা যে অফিসে কাজ করতে গেলেন, সেই অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনার আত্মীয় না হন, তাহলে আপনাকে ওই ধার্য করা হারে পারসেন্টেজের টাকা দিতেই হবে। প্রথমে আরম্ভ হবে পিয়ন থেকে। তারপর কেরানি সাহেব, সেকশন অফিসার সাহেব—এ রকম করতে করতে যত দূর ফাইল যায়, তত দূর পর্যন্তই আপনাকে নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হবে।
সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যান, দলিল মূল্যের ২ শতাংশ হারে, ঘুষের নামে ‘স্পিড মানি’ দিতে হবে। ঠিকাদারি কাজে সুপারভাইজার, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে যত দূর পর্যন্ত আপনার কাজের তাগিদে যাওয়া প্রয়োজন হবে, তত দূর নির্দিষ্ট হারে টাকা দিয়ে যেতে হবে। কাস্টমস, ভ্যাট, আয়কর, ভূমি অফিস—যেখানেই যান না কেন, নির্দিষ্ট অঙ্কের হিসাব কষা আছে। সেই অনুসারে আপনাকে ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে। রাজউক, স্থানীয় সরকারসহ শিক্ষা অফিস বলেন আর ‘অশিক্ষা’ অফিস বলেন, আপনি এর থেকে মাফ পাবেন না।
বঙ্গবন্ধু এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে বলেছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর কথা বলেছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো সেই জিরো টলারেন্স দৃশ্যমান আছে। অবশ্য যেসব দুর্নীতির খবর মিডিয়ায় আসে, সেগুলোই সবার দৃষ্টিগোচর হয়। কিছু ক্ষেত্রে কিছু কিছু ‘অ্যাকশন’ দৃশ্যমান হয়।
এখন কথা হলো, সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা? সারা দেশ যদি (কিছু ব্যতিক্রম বাদে) ঘুষে জর্জরিত থাকে, তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন এই প্রক্রিয়া একা বন্ধ করবে কীভাবে? তা ছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের সবাই যে সম্পূর্ণ ধোয়া তুলসীপাতা, তা-ও বলা যাবে না। আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই দুর্নীতির ধারা প্রবহমান।
একটা মজার ব্যাপার সবাই লক্ষ করবেন—আমরা জাতি হিসেবে ধর্মভীরু। প্রতিটি সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত করপোরেশন ও অটোনোমাস বডিতে নামাজের জন্য জায়গা আছে। যথাসময়ে এই অফিসগুলোতে যথারীতি প্রার্থনা করা হয়। বেশির ভাগ মানুষই এই প্রার্থনায় অংশ নেন। এই প্রার্থনার সময় সরকারি অফিসে সব কাজকর্ম বন্ধ থাকে। তবে কথা হলো, এই প্রার্থনার পরেই আপনি কোনো কাজ নিয়ে যান, যাঁরা প্রার্থনায় ছিল তাঁদের মধ্যেই অনেকে নির্দিষ্ট হারের ‘স্পিড মানি’ বা বকশিশ ছাড়া কোনো কাজ করবেন বলে মনে হয় না।
আমাদের দেশের মতো ধর্মভীরু জাতি খুব কমই আছে। যার যার ধর্ম অনুসারে আমরা সবাই প্রতিদিন তা পালন করি; বিশেষ করে মসজিদগুলোতে সন্ধ্যার পরে প্রায় সবাই নামাজ পড়তে যান। শুক্রবার মসজিদে জায়গা সংকুলান হয় না। মসজিদের বাইরে রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে লাখ লাখ লোক আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন, সব ধরনের বালা মুসিবত থেকে আমরা যেন মুক্ত থাকি। এই যে আল্লাহর প্রতি আমাদের ভরসা, আমাদের মনের মধ্যে সব সময়ই পরকালের একটি শাস্তির ভয় কাজ করে, এটা জাতির জন্য যে কত সৌভাগ্যের, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহর প্রতি ভয় থাকা ভালো, মানুষ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে।প্রত্যক্ষ কোনো শাস্তির ভয়ের চেয়ে পরোক্ষভাবে পরকালের ভয়ে যদি কেউ পাপাচার থেকে মুক্ত থাকে, সেটা অধিক ফলপ্রসূ হয়।
এত কিছুর পরেও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হয় না কেন? এই ঘুষ-দুর্নীতিকে কি আমরা কোনো অন্যায়-অবিচারের মধ্যে ফেলি না? ধর্মকর্ম পালনে কোনো রকম ভুল-ত্রুটি হলে আমরা সোচ্চার হই। সামাজিকভাবে কেউ নিগৃহীত হলে, কোনো দুর্বলের প্রতি কোনো দুর্বৃত্ত যদি আঘাত করে তাহলে আমরা সোচ্চার হই। আমরা জাতি হিসেবে প্রায় ক্ষেত্রেই যার সামর্থ্য আছে হজ করি, জাকাত দিই, দান-খয়রাত করি, অর্থাৎ পরকালের শান্তির জন্য এই সব বিধিবিধান মেনে চলি। তবে কেন আমরা ঘুষ-দুর্নীতিকে গর্হিত অন্যায় মনে করি না? এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন সোচ্চার হই না? এই ঘুষ-দুর্নীতি কেন আমাদের সহ্যের মধ্যে এসে গেছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ থাকা, ঘুষের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি থাকার পরেও কেন আমরা এসব সহ্য করি?
এমনটাও শোনা যাচ্ছে যে বঙ্গবন্ধুর ঘুষ-দুর্নীতিবিরোধী ভাষণটি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ভালো কথা, এটা যত তাড়াতাড়ি করা হবে, ততই মঙ্গল। আমার মনে হয় সবার আগে এ রকম নাগরিক সচেতনতামূলক কাজই করা উচিত।
আমাদের দেশের অনেকগুলো ব্যবসায়ী সংগঠন আছে। এসব সংগঠন সরকারের কাছে বহু বিষয় নিয়ে দেনদরবার করে। এই সব সংগঠন অথবা বিজনেস কমিউনিটি ট্যাক্স কমানো, ট্যাক্স বাড়ানো, ব্যাংকের ঋণ মওকুফ করা, ব্যাংকের সুদ পুনঃ তফসিল করার জন্য সর্বদা সোচ্চার। কিন্তু এই সব বিজনেস কমিউনিটির কর্তাব্যক্তিরা কোনো দিন কোনো সেমিনার করে, ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ সম্মেলন বা কোনো সভা-সেমিনারের আয়োজন করেছেন বলে আমার জানা নেই।
একইভাবে নাগরিক সমাজ, ছাত্রসমাজ, বুদ্ধিজীবী সমাজও এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো সভা-সমাবেশ-সেমিনার করেছে বলে আমার মনে পড়ছে না। জাতি হিসেবে কি আমরা এটা মেনে নিয়েছি যে যেমন আছে, তেমনি চলবে? যার ক্ষমতা আছে, সে এই ঘুষ-দুর্নীতির প্রভাবের বাইরে থাকবে। বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ, যাদের বাইরে কথা বলার সামর্থ্য নেই, তারা এই ঘুষের আওতায় চলতেই থাকবে। এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, আমাদের দেশের আলেমসমাজ বিভিন্ন ওয়াজ-নসিহত করেন। তাঁরা পরকালের কথা বলেন, ধর্মের পক্ষে কথা বলেন, সবাইকে নামাজ আদায় করতে বলেন, রোজা থাকতে বলেন। কিন্তু কোনো বড় আলেম দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ওয়াজ করেছেন বলে আমার জানা নেই।
আমাদের দেশে এত ঘুষ-দুর্নীতির কারণ হলো, আমরা সবাই দুর্নীতির বিপক্ষে, শুধু নিজেরটা ছাড়া। ব্যক্তিগতভাবে অথবা কোনো টেবিল-টকে দেখবেন, সবাই এক বাক্যে ঘুষ-দুর্নীতির বিপক্ষে কথা বলবে। আমরা সবাই মনে করি, ‘ঘুষ-দুর্নীতি জাতির জন্য অমঙ্গল, সবার জন্য অমঙ্গল; তবে মাঝেমধ্যে আমি একটু-আধটু করব, সেটার দিকে যেন কেউ দৃষ্টি না দেয়!’ এটাই হলো ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ না হওয়ার মূল সমস্যা।
লেখক: প্রকৌশলী
দুর্নীতি একটা মহামারি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান অবস্থা যে রকম দাঁড়িয়েছে, তাতে সঠিকভাবে, ন্যায্যভাবে কোনো কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা করপোরেশনে; যেকোনো অফিসে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। সেটা হয়তো সংখ্যায় খুব কম। এই কমসংখ্যক বাদ দিয়ে সর্বক্ষেত্রেই দুর্নীতি চলছে।
সর্বক্ষেত্রে একটি পারসেন্টেজ ধরা আছে। আপনাকে সেই পারসেন্টেজ অনুসারে ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে। যদি আপনি সরকারের কোনো বড় কর্মকর্তা বা ক্ষমতাসীন দলের বড় কোনো হোমরাচোমরা না হন অথবা যে অফিসে কাজ করতে গেলেন, সেই অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনার আত্মীয় না হন, তাহলে আপনাকে ওই ধার্য করা হারে পারসেন্টেজের টাকা দিতেই হবে। প্রথমে আরম্ভ হবে পিয়ন থেকে। তারপর কেরানি সাহেব, সেকশন অফিসার সাহেব—এ রকম করতে করতে যত দূর ফাইল যায়, তত দূর পর্যন্তই আপনাকে নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হবে।
সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যান, দলিল মূল্যের ২ শতাংশ হারে, ঘুষের নামে ‘স্পিড মানি’ দিতে হবে। ঠিকাদারি কাজে সুপারভাইজার, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে যত দূর পর্যন্ত আপনার কাজের তাগিদে যাওয়া প্রয়োজন হবে, তত দূর নির্দিষ্ট হারে টাকা দিয়ে যেতে হবে। কাস্টমস, ভ্যাট, আয়কর, ভূমি অফিস—যেখানেই যান না কেন, নির্দিষ্ট অঙ্কের হিসাব কষা আছে। সেই অনুসারে আপনাকে ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে। রাজউক, স্থানীয় সরকারসহ শিক্ষা অফিস বলেন আর ‘অশিক্ষা’ অফিস বলেন, আপনি এর থেকে মাফ পাবেন না।
বঙ্গবন্ধু এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে বলেছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর কথা বলেছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো সেই জিরো টলারেন্স দৃশ্যমান আছে। অবশ্য যেসব দুর্নীতির খবর মিডিয়ায় আসে, সেগুলোই সবার দৃষ্টিগোচর হয়। কিছু ক্ষেত্রে কিছু কিছু ‘অ্যাকশন’ দৃশ্যমান হয়।
এখন কথা হলো, সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা? সারা দেশ যদি (কিছু ব্যতিক্রম বাদে) ঘুষে জর্জরিত থাকে, তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন এই প্রক্রিয়া একা বন্ধ করবে কীভাবে? তা ছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের সবাই যে সম্পূর্ণ ধোয়া তুলসীপাতা, তা-ও বলা যাবে না। আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই দুর্নীতির ধারা প্রবহমান।
একটা মজার ব্যাপার সবাই লক্ষ করবেন—আমরা জাতি হিসেবে ধর্মভীরু। প্রতিটি সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত করপোরেশন ও অটোনোমাস বডিতে নামাজের জন্য জায়গা আছে। যথাসময়ে এই অফিসগুলোতে যথারীতি প্রার্থনা করা হয়। বেশির ভাগ মানুষই এই প্রার্থনায় অংশ নেন। এই প্রার্থনার সময় সরকারি অফিসে সব কাজকর্ম বন্ধ থাকে। তবে কথা হলো, এই প্রার্থনার পরেই আপনি কোনো কাজ নিয়ে যান, যাঁরা প্রার্থনায় ছিল তাঁদের মধ্যেই অনেকে নির্দিষ্ট হারের ‘স্পিড মানি’ বা বকশিশ ছাড়া কোনো কাজ করবেন বলে মনে হয় না।
আমাদের দেশের মতো ধর্মভীরু জাতি খুব কমই আছে। যার যার ধর্ম অনুসারে আমরা সবাই প্রতিদিন তা পালন করি; বিশেষ করে মসজিদগুলোতে সন্ধ্যার পরে প্রায় সবাই নামাজ পড়তে যান। শুক্রবার মসজিদে জায়গা সংকুলান হয় না। মসজিদের বাইরে রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে লাখ লাখ লোক আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন, সব ধরনের বালা মুসিবত থেকে আমরা যেন মুক্ত থাকি। এই যে আল্লাহর প্রতি আমাদের ভরসা, আমাদের মনের মধ্যে সব সময়ই পরকালের একটি শাস্তির ভয় কাজ করে, এটা জাতির জন্য যে কত সৌভাগ্যের, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহর প্রতি ভয় থাকা ভালো, মানুষ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে।প্রত্যক্ষ কোনো শাস্তির ভয়ের চেয়ে পরোক্ষভাবে পরকালের ভয়ে যদি কেউ পাপাচার থেকে মুক্ত থাকে, সেটা অধিক ফলপ্রসূ হয়।
এত কিছুর পরেও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হয় না কেন? এই ঘুষ-দুর্নীতিকে কি আমরা কোনো অন্যায়-অবিচারের মধ্যে ফেলি না? ধর্মকর্ম পালনে কোনো রকম ভুল-ত্রুটি হলে আমরা সোচ্চার হই। সামাজিকভাবে কেউ নিগৃহীত হলে, কোনো দুর্বলের প্রতি কোনো দুর্বৃত্ত যদি আঘাত করে তাহলে আমরা সোচ্চার হই। আমরা জাতি হিসেবে প্রায় ক্ষেত্রেই যার সামর্থ্য আছে হজ করি, জাকাত দিই, দান-খয়রাত করি, অর্থাৎ পরকালের শান্তির জন্য এই সব বিধিবিধান মেনে চলি। তবে কেন আমরা ঘুষ-দুর্নীতিকে গর্হিত অন্যায় মনে করি না? এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন সোচ্চার হই না? এই ঘুষ-দুর্নীতি কেন আমাদের সহ্যের মধ্যে এসে গেছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ থাকা, ঘুষের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি থাকার পরেও কেন আমরা এসব সহ্য করি?
এমনটাও শোনা যাচ্ছে যে বঙ্গবন্ধুর ঘুষ-দুর্নীতিবিরোধী ভাষণটি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ভালো কথা, এটা যত তাড়াতাড়ি করা হবে, ততই মঙ্গল। আমার মনে হয় সবার আগে এ রকম নাগরিক সচেতনতামূলক কাজই করা উচিত।
আমাদের দেশের অনেকগুলো ব্যবসায়ী সংগঠন আছে। এসব সংগঠন সরকারের কাছে বহু বিষয় নিয়ে দেনদরবার করে। এই সব সংগঠন অথবা বিজনেস কমিউনিটি ট্যাক্স কমানো, ট্যাক্স বাড়ানো, ব্যাংকের ঋণ মওকুফ করা, ব্যাংকের সুদ পুনঃ তফসিল করার জন্য সর্বদা সোচ্চার। কিন্তু এই সব বিজনেস কমিউনিটির কর্তাব্যক্তিরা কোনো দিন কোনো সেমিনার করে, ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ সম্মেলন বা কোনো সভা-সেমিনারের আয়োজন করেছেন বলে আমার জানা নেই।
একইভাবে নাগরিক সমাজ, ছাত্রসমাজ, বুদ্ধিজীবী সমাজও এই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো সভা-সমাবেশ-সেমিনার করেছে বলে আমার মনে পড়ছে না। জাতি হিসেবে কি আমরা এটা মেনে নিয়েছি যে যেমন আছে, তেমনি চলবে? যার ক্ষমতা আছে, সে এই ঘুষ-দুর্নীতির প্রভাবের বাইরে থাকবে। বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ, যাদের বাইরে কথা বলার সামর্থ্য নেই, তারা এই ঘুষের আওতায় চলতেই থাকবে। এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, আমাদের দেশের আলেমসমাজ বিভিন্ন ওয়াজ-নসিহত করেন। তাঁরা পরকালের কথা বলেন, ধর্মের পক্ষে কথা বলেন, সবাইকে নামাজ আদায় করতে বলেন, রোজা থাকতে বলেন। কিন্তু কোনো বড় আলেম দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ওয়াজ করেছেন বলে আমার জানা নেই।
আমাদের দেশে এত ঘুষ-দুর্নীতির কারণ হলো, আমরা সবাই দুর্নীতির বিপক্ষে, শুধু নিজেরটা ছাড়া। ব্যক্তিগতভাবে অথবা কোনো টেবিল-টকে দেখবেন, সবাই এক বাক্যে ঘুষ-দুর্নীতির বিপক্ষে কথা বলবে। আমরা সবাই মনে করি, ‘ঘুষ-দুর্নীতি জাতির জন্য অমঙ্গল, সবার জন্য অমঙ্গল; তবে মাঝেমধ্যে আমি একটু-আধটু করব, সেটার দিকে যেন কেউ দৃষ্টি না দেয়!’ এটাই হলো ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ না হওয়ার মূল সমস্যা।
লেখক: প্রকৌশলী
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫