Ajker Patrika

জমে উঠেছে ঈদবাজার

রাশেদুজ্জামান, মেহেরপুর
জমে উঠেছে ঈদবাজার

করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর ঈদবাজার জমেনি। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই ব্যবসায়ীদের। সেই আক্ষেপ ঘোচাতে যেন এবার ক্রেতার ঢল নেমেছে ঈদবাজারে। এক সপ্তাহ ধরে জেলা শহরের প্রতিটি বিপণিবিতান, শপিংমলে ধুম লেগেছে বেচাকেনার। ক্রেতার চাপ সামলাতে বিক্রেতারা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।

মেহেরপুরের বিপণিবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। প্রচণ্ড গরমে এবার দোকানগুলোতে সুতি পোশাকের সমারোহ। ছেলেদের রয়েছে জিনস প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি ও গেঞ্জি। মেয়েদের রয়েছে হরেক রকমের পোশাক। ভারতীয় সিরিয়াল, নায়ক-নায়িকাদের নামের পোশাক প্রতিটি বিপণিবিতানে শোভা পাচ্ছে। এবারও মেয়েদের জন্য সায়ারা, মারাঠা, মিঠাই, পুষ্পারাজ, কুইন ফ্রক, গুজরাটি, গারারা, লেহেঙ্গা, পাকিস্তানি কুর্তি পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে সুতি কাপড়ের পোশাক।

ছেলেদের কালেকশনের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি কাবলি, শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি, আর আর আরসহ নানা নামের পোশাক। তবে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাহারি সব পোশাকের প্রতি মানুষের আকর্ষণ একটু কম। কারণ এবার ঈদ প্রচণ্ড গরমে হওয়ায় ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের পোশাক হয়েছে সুতি কাপড়ের।

এবার মেহেরপুরে রোজার শুরু থেকেই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বেচাকেনাও অন্য বছরের তুলনায় ভালো ছিল। ২০ রোজার পর পোশাক কিনতে এসে অনেককেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ পছন্দের পোশাকটি চাইলেও ক্রেতাদের দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

মেহেরপুর শহরের বড়বাজারের মিল্টন ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী মিল্টন হোসেন বলেন, ‘গেল কয়েক ঈদে করোনার কারণে তেমন একটা ব্যবসা করতে পারিনি। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় আগেভাগেই ভারত ও ঢাকা থেকে মালামাল এনেছি। প্রথমে বেচাকেনা ভালো ছিল, এখনো ক্রেতাদের প্রচণ্ড চাপ। বেচাকেনাই আমরা সন্তুষ্ট।’

শহরের চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী মানিক হোসেন বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে ঈদ হওয়ায় ক্রেতাদের চোখ বাহারি পোশাকে নয়। বেশির ভাগ ক্রেতা চাচ্ছেন সুতি নরম পোশাক। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমারও দোকানে সে ধরনের পোশাক তুলেছি। আর ছেলেদের বেশি পছন্দ পাঞ্জাবি ও জিনসের সঙ্গে গেঞ্জি। আর শিশুদের প্রথম পছন্দ স্কার্ট, গারারা, মনলাইট, টপস জাতীয় পোশাকের। এবারে নতুন পোশাকের মধ্যে ছেলেদের পুষ্পা প্যান্ট বিক্রি বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্টাইলিশ প্যান্টের চাহিদা রয়েছে।

মেহেরপুর শহরের কাশ্যবপাড়ার সুমন বলেন, ‘ঈদের পোশাক কিনতে এসেছিলাম। শার্ট, প্যান্ট আর পাঞ্জাবি কিনলাম। সবগুলোই দেশি পোশাক নিয়েছি। আমাদের দেশের পোশাকগুলো বেশ মানসম্মত। আর নিজ দেশীয় পণ্য নেওয়া একটা অহংকারের বিষয়। তাই আমার প্রথম পছন্দ দেশি পোশাক। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার দামটা একটু বেশি। প্রতিটি পোশাকেই গেল বারের চেয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি। ফলে বাজারে এসে আয়ের সঙ্গে ব্যয় মিলাতে পারছি না। ধার-দেনা করে হলেও পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে হবে। ঈদ বলে কথা।’

শহরের গড়পাড়ার সুখি ইসলাম বলেন, ‘এবারের ঈদের বাজারে শিশুদের পোশাকের দাম সবচেয়ে বাড়তি। প্রতিটি পোশাকের দাম আকাশ ছোঁয়া। গেল বার যে পোশাক ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় কিনেছি, সেই পোশাক এবার কিনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়।’

বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান দিপু বলেন, ‘বাজারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। ঝামেলা ও যানজটমুক্ত হয়ে বাজার করতে পারছেন মানুষ। কোনো চাঁদাবাজি নেই। ব্যবসায়ীরাও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করতে পারছেন।’ দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মোকাম থেকেই প্রতিটি পণ্য বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত