Ajker Patrika

ডিজিটাল জন্মনিবন্ধনে ভোগান্তি চরমে

মো. রিয়াদ হোসাইন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ০০
Thumbnail image

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ তুলতে গিয়ে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও পৌরসভায় তথ্যপ্রযুক্তির উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করে জেলা ও উপজেলায় অনুমোদনের কারণে এসব জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সব কটিতে একই সমস্যা। নতুন একটি জন্মসনদ পেতে ১ সপ্তাহ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। পৌরসভার জেলা এবং ইউনিয়নের জন্য উপজেলা থেকে অনুমোদন আনতে হয়। আবার জন্মনিবন্ধন পাওয়ার পর অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের ভুল রয়েছে।

আবার ভুল সংশোধন করতে গেলে আরও সময় লেগে যায়। ফলে ওই এলাকার মানুষকে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ১৮-২০; কিন্তু এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি, তাঁদের বিভিন্ন কাজের জন্য জন্মনিবন্ধনের ওপরই নির্ভর করতে হয়।

কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ভাদার্ত্তী গ্রামের আব্দুল সাত্তার জানান, তাঁর সন্তানদের জন্মনিবন্ধন থাকলেও তা ডিজিটাল নয়। সন্তানদের ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন করতে কালীগঞ্জ পৌরসভায় যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, সন্তানের ডিজিটাল জন্মনিবন্ধনের আগে মা-বাবারটা লাগবে। পরে সেগুলোর নম্বর দেখিয়ে করা যাবে সন্তানদের জন্মনিবন্ধন।

পৌরসভায় গত ১৭ অক্টোবর তিনি ও তাঁর স্ত্রীর ডিজিটাল জন্মনিবন্ধনের আবেদন করেন। পরে তিনি জানতে পারেন, ওই আবেদনের কপি নিয়ে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালকের কাছ থেকে অনুমোদন আনলে পরে পৌরসভা থেকে প্রিন্ট করে দেওয়া হবে।

গত ২৫ অক্টোবর ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান সাত্তার। যেখানে গিয়ে জমা দেওয়ার পর তাঁকে জানানো হয়, ১ সপ্তাহ পর অনুমোদন পাওয়া যাবে। কিন্তু সেই অনুমোদন পাওয়া যায় ৭ নভেম্বর। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর আবেদন করলেও অনুমোদন আসে শুধু তাঁর নিজেরটা। পরে ফের চেষ্টায়, নানা ভোগান্তির পর গত ২৯ নভেম্বর স্ত্রীর জন্মনিবন্ধনের অনুমোদন পান।

জামালপুর ইউনিয়নের কলাপাটুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম জানান, তাঁর মেয়ের কলেজ থেকে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন চেয়েছে। তবে তা করতে গিয়ে হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর নিবন্ধনের আবেদন করে এক মাস ঘুরে তা হাতে পাওয়ার পর দেখা গেল স্ত্রীর নামের বানানে ভুল। পরে সে সংশোধন করতে আরও এক মাস ঘুরতে হয়।

উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন বলেন, অনলাইনে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির কারণে সমস্যা বেশি হচ্ছে। নিবন্ধন তৈরির প্রক্রিয়াটা ইউনিয়ন পরিষদের অধীন থাকলে ভোগান্তি কম হতো।

কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবীন হোসেন বলেন, সারা দেশে একযোগে এই কাজ শুরু হওয়ায় সার্ভার সমস্যায় জন্মনিবন্ধনে ভোগান্তি ও সময় বেশি লাগছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক বলেন, উপজেলায় শুধু সাতটি ইউনিয়নের ডিজিটাল জন্মনিবন্ধনের অনুমোদন দেওয়া হয়। একজন এ কাজটি করছেন, ভবিষ্যতে এই কাজে অন্য কাউকে সম্পৃক্ত করা যায় কি না, তা বিবেচনা করা হচ্ছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন করার বিধান থাকলেও মানুষ তা করে না। সময়মতো নিবন্ধন না করার কারণেই এ সমস্যা বাড়ছে। সময়মতো নিবন্ধন করা হলে এ সমস্যা অনেক কমে যাবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে এ ভোগান্তি কমানো সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত