Ajker Patrika

আজকের পত্রিকার সঙ্গে মিশে থাকবেন ফাহির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৬
Thumbnail image

‘মৃত্যু বাস্তব এবং অনিবার্য সত্য। কিন্তু সেই সত্য যে ২৪ বছর বয়সের একজন সহকর্মীকে হারিয়ে মেনে নিতে হবে, তা কখনোই ভাবিনি।’

অকালপ্রয়াত তরুণ সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম ভূঁঞা ফাহির স্মরণে গতকাল সোমবার বিকেলে এক শোকসভায় এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান। আজকের পত্রিকার প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এ শোকসভায় তিনি আরও বলেন, ‘এই সভাটি অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। ফাহিরের এই মৃত্যু আমি ব্যক্তিগতভাবে মেনে নিতে পারছি না।’

গত শনিবার বিকেলে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান ফাহির। তিনি আজকের পত্রিকার অনলাইন বিভাগে কাজ করতেন। বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে তিনি ফাহির ফখরুল নামে পরিচিত ছিলেন। গত রোববার কুমিল্লার মুরাদনগরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

কিন্তু ফাহিরের আকস্মিক প্রয়াণ এখনো মানতে পারছে না কেউ। সদ্য প্রয়াত এই সহকর্মীর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আজকের পত্রিকার অনলাইন বিভাগের সহকারী বার্তা সম্পাদক ফজলুল কবির নেলসন আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ‘ফাহিরের বিয়ে ছিল আগামী জানুয়ারি মাসে। এ জন্য এক মাসের একটা লম্বা ছুটি চেয়েছিল সে। কিন্তু আমি কখনোই বুঝতে পারিনি, এত লম্বা ছুটি সে নেবে। যেখানেই থাকুক, ফাহির আজকের পত্রিকার সঙ্গে মিশে থাকবে আজীবন।’

আজকের পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সেলিম খান বলেন, ‘ফাহির যেদিন মারা গেল, সেদিন সে সকালে এসে অফিস করে গেছে। এরপর বাসায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেল। আমার কেন জানি বারবার খুব আফসোস হচ্ছে, ফাহির অফিসে অসুস্থ হলে অন্তত তাঁকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টার আক্ষেপটা মিটত।’ এ সময় সবাইকে নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়ারও পরামর্শ দেন সেলিম খান।

আজকের পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক মামুন আবদুল্লাহ বলেন, ‘আজকের পত্রিকার সাড়ে ছয় শ কর্মীর পরিবার থেকে ফাহির চলে গেল। শোক আর কান্না ছাড়া কিছুই আর করার নেই। তবু বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

সহকারী সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, ‘ফাহির আমার নিজের সন্তানের চেয়েও বয়সে ছোট। তাঁর অকালমৃত্যু আমাকে খুব ব্যথিত করেছে। আমি এটা মেনে নিতে পারছি না।’

সহকর্মী ছাড়াও শোকসভায় অংশ নিয়েছেন ফাহিরের বন্ধু-সহপাঠীরাও। শেষনিশ্বাস ফেলার সময় ফাহিরের সঙ্গে ছিলেন যে বন্ধুটি, সেই ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমি আর ফাহির এক বেডে ঘুমিয়েছি। কতশত স্মৃতি ওর সঙ্গে আমার। মৃত্যুর দিন অফিস থেকে আসার পরই বলেছে, ওর শরীর খারাপ লাগছে। সঙ্গে সঙ্গে ওকে বাসা থেকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বের হই। কিন্তু ১ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দেওয়ার দেরিটুকুও সইলো না আমার বন্ধুর। পথেই আমার হাতে মারা গেল।’

ফাহিরকে নিয়ে আরও স্মৃতিচারণা করেন তাঁর সহকর্মী সুপ্রিয় শিকদার ও গোলাম ওয়াদুদ। শোকসভায় উপস্থিত ছিলেন আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান, প্রধান ব্যবসায়িক কর্মকর্তা মো. মোমেনূর রশীদ সিদ্দিকী, সার্কুলেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম জাকারিয়া, সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদীসহ সব বিভাগের কর্মীরা। সভার শুরুতে ফাহির স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শোকসভা শেষে ফাহিরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত