মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও ফজিলাতুন নেছা দম্পতির প্রথম সন্তান হিসেবে তুমি জন্ম নিয়েছিলে। এই ভূখণ্ডে তখন এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়। ইতিহাসে এটিকে দেশভাগের সময় বলা হয়।
তোমার পিতা কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে থাকলেন। এই বাংলায় তাঁর বড্ড বেশি প্রয়োজন ছিল। সে কারণেই ঢাকার পাকিস্তান আন্দোলনকারী ছাত্রনেতারা কলকাতা থেকে তাঁকে চলে আসার তাগিদ দিচ্ছিলেন। তিনি সাড়াও দিয়েছিলেন। তবে সেখানেই সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর সহযোদ্ধারা উপলব্ধি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে এক পরাধীনতা থেকে পূর্ব বাংলা আরেক পরাধীনতায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছিল। সেটি থেকে পূর্ব বাংলাকে মুক্ত করতে হবে। সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের ওই বৈঠকে এ ছিল তোমার পিতার প্রতিজ্ঞা।
ঢাকায় এসে তিনি তাই করতে শুরু করেন। তাতে তোমার এবং সংসারের প্রতি তাঁর মনোযোগ দেওয়ার সময় ছিল না। তারপরও মাঝে মাঝে তোমাকে দেখতে গোপালগঞ্জে ছুটে যেতেন। আবার এসে রাজনীতি, দল গঠন, আন্দোলন-সংগ্রাম, জেল। এভাবেই তোমাদের পিতা হয়ে উঠলেন পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের দৃঢ়চেতা নেতারূপে। গোপালগঞ্জে তুমি মা, দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজন নিয়ে শিশুকাল অতিক্রম করেছিলে। খেলাধুলা, গ্রামের নৈসর্গিক পরিবেশ, মধুমতী নদীর ঢেউ—এসবই তখন তোমার দেখা। একসময় ঢাকায় এসেছ, স্কুলে ভর্তিও হয়েছিলে। কিন্তু কখনো কখনো গোপালগঞ্জে আবার ফিরে যেতে হয়েছিল।
কারণ বাবার রাজনীতি বড়ই কঠিন ছিল। জেলে যাওয়া এবং সারা দেশ চষে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে যিনি প্রতিদিন প্রদেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত, করাচিসহ পশ্চিম পাকিস্তানেরও বিভিন্ন জায়গায় সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকতেন, পরিবারকে দেখার তাঁর সময় কোথায়? তবে তোমার মা পিতার অনুপস্থিতির অনেক কিছুই পূরণ করতে ত্রুটি করতেন না। দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজনেরাও তোমার এবং ভাইবোনদের প্রতি যত্নবান ছিলেন। যখনই পিতা আসতেন, ভরিয়ে দিতেন তোমাদের আদর-স্নেহে। তোমরা ভুলে যেতে পিতাকে সব সময় না পাওয়ার অনুপস্থিতি। তিনি তোমাদের নিয়ে ভাবতেন। মা সেটি পূরণ করতেন।
যখন আইয়ুব খান রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রেখেছিলেন, তখন তিনি তোমাদের নিয়ে ১৯৬১ সালের ১ থেকে ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। সে কথা তুমি নিজেও লিখেছ। বলে রাখি, তোমার পিতা তোমার মাকে নিয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, হিমছড়ি, মহেশখালী, কাপ্তাই একান্তে বেড়িয়েছিলেন ১৯৬৩ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত। রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ইত্যাদি গুণে বড় হওয়ার শিক্ষা তোমাদের পরিবারে দাদা-দাদি, বাবা-মা, নিকটাত্মীয়জনদের কাছ থেকেই তোমরা পেয়েছিলে। বুঝেছিলে পিতা দেশকে উজাড় করে দিচ্ছেন। তাই তোমাদের পাওয়ার কিছু ঘাটতি থাকলেও সেটাই তোমরা মেনে নিয়েছিলে।
ছোটকাল থেকেই তোমরা অসংখ্য বড় বড় মানুষকে দেখে, শিখেই বড় হয়েছ। তোমাদের পিতা লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমার পারিবারিক জীবনটিও যাতে সুন্দর হয়, সেভাবেই তোমার জন্য সবকিছু ব্যবস্থা করেছিলেন। এমন রাজনৈতিক পরিবেশের স্বাভাবিক নিয়মে চলা জীবনে কোনো দিন ছেদ পড়বে—এটা হয়তো তোমরা কোনো দিন ভাবনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তুমি তোমার মায়ের কাছে বন্দী ছিলে আর পিতা ছিলেন পাকিস্তানিদের জেলে কারারুদ্ধ।
সেই বন্দিজীবনেই তোমার সন্তান জয়ের জন্ম। সে নামটিও আগে রেখে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। জয় যেন মুক্তিযুদ্ধেরও বিজয়ের বার্তা নিয়ে তোমার কোলে এসেছিল। স্বাধীন দেশে তুমি লেখাপড়া, স্বামী-সংসারে জয় ও পুতুলকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বঙ্গবন্ধু এবং তোমার মায়ের স্নেহের পরশ সারাক্ষণই তোমাদের ঘিরে ছিল। বঙ্গবন্ধু কখনো ভাবেননি তোমরা তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে।
কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা গোটা পরিবারই শুধু নয়, নিকটাত্মীয়দেরও পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে। ছোট বোন, দুই সন্তান নিয়ে জার্মানিতে থাকার কারণে মৃত্যুর হাত থেকে তুমি রক্ষা পেয়েছ। অবধারিত মৃত্যু থেকে তুমি নতুনভাবে জন্ম নিয়েছ। সেই জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দলেরই শুধু হাল ধরোনি, গোটা বাঙালি জাতি এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃজাতিগোষ্ঠীর মানুষ—যারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর কাঁদতে পারেনি, তারা ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রাণ খুলে স্লোগান দিয়েছে, স্বপ্ন দেখেছে তোমাকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধুর পরশ তোমার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল।
তুমি সেই পরশে ধীরে ধীরে জ্বলে উঠতে শুরু করেছ। আন্দোলন-সংগ্রাম, অভিজ্ঞতা, রাজনীতিকে নতুনভাবে চেনা-জানা, বোঝা, ঘাত-প্রতিঘাতকে অতিক্রম করে রাজপথে তুমি আরেক বঙ্গবন্ধুতে যেন আবির্ভূত হলে। সে কারণে ঘাতকেরা তোমাকে হত্যা করতে কয়েকবারই গুলি ছুড়েছে। বেঁচে গেছ, কিন্তু থেমে যাওনি। আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে প্রতিকূলতাকে একের পর এক অতিক্রম করে ১৯৯৬ সালে তুমি সেই আসনে বসেছিলে, যে আসনে জাতির পিতা বসেছিলেন দেশটাকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী ও শোষণহীন অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থা উপহার দিতে। পাঁচ বছরে তুমি এত দিনকার অনেকেরই অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ভাঙিয়ে দিলে তোমার কাজ দিয়ে। গঙ্গার পানিচুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি, ইনডেমনিটির কালাকানুন থেকে জাতিকে মুক্তি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।
তোমার নেওয়া সব উদ্যোগই থেমে গেল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তোমাকে প্রায় হত্যাই করে ফেলা হয়েছিল। ফিনিক্স পাখির মতো তুমি আবারও জন্ম নিলে। ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়ে দিনবদলের সনদ আর রূপকল্প একে একে বাস্তবায়ন করতে থাকলে। স্বল্পোন্নত দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ, উন্নয়নশীল দেশ ইত্যাদি আসনে উন্নীত করেছ দেশটাকে। শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প, ডিজিটালাইজেশন, আশ্রয়হীনদের আশ্রয়দান, কোটি কোটি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার নানা খাতে মানুষকে রাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রদান। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তুমি করলে।
দেশটাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বদলে দিতে তুমিই পারলে। তোমার আগে কোনো সরকারই এই কৃতিত্ব পাওয়ার মতো কাজ করেনি। এখন তোমাকে ঘিরেই জাতির অনেক অনেক প্রত্যাশা। রাষ্ট্রটাকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার অসমাপ্ত কাজ তোমাকেই করতে হবে। শিক্ষা, সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণ, মেধা, দেশপ্রেম এবং সৎ নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতির নেতা-কর্মী ও গোটা সমাজব্যবস্থাকে আধুনিক চরিত্রে রূপায়িত করার কাজটি জানি অনেক কঠিন এবং দীর্ঘ সময়ের। সে কাজটিতে তুমি কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাত দিয়েছ। কিন্তু তোমার কাজ যেন যথার্থ উত্তরাধিকারেই সমর্পিত হয়।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞ—এবার ৭৭তম জন্মতিথিতে তোমার কাছেই আমাদের প্রত্যাশা। জানি অনেকেই আছে তোমাকে সরিয়ে বাংলাদেশটাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের জন্য পশ্চাদপসরণ—এটি নিকট অতীতেরই অভিজ্ঞতা। তুমি তোমার শাসনকালের ২০ বছরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছ। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়; বরং দেশটার সম্ভাবনা দেখেই তাবৎ শক্তি বাংলাদেশকে নিয়ে এখন টানাটানি করছে। তুমি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতিতে অটল থাকার চেষ্টা করছ।
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের এবং অসাম্প্রদায়িক উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশী, তারা তোমার পাশেই আছি। তুমি দীর্ঘজীবী হলে আমাদের স্বপ্ন সফল হবে, বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে, অসমাপ্ত বাংলাদেশ সমাপ্তির ইতিহাস রচনা করতে পারবে। তুমি হাল ধরেছিলে বলেই আজ তোমার জন্মদিনে এত অর্জন এবং নতুন নতুন প্রত্যাশা নিয়ে শুভেচ্ছাকামনা।

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও ফজিলাতুন নেছা দম্পতির প্রথম সন্তান হিসেবে তুমি জন্ম নিয়েছিলে। এই ভূখণ্ডে তখন এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়। ইতিহাসে এটিকে দেশভাগের সময় বলা হয়।
তোমার পিতা কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে থাকলেন। এই বাংলায় তাঁর বড্ড বেশি প্রয়োজন ছিল। সে কারণেই ঢাকার পাকিস্তান আন্দোলনকারী ছাত্রনেতারা কলকাতা থেকে তাঁকে চলে আসার তাগিদ দিচ্ছিলেন। তিনি সাড়াও দিয়েছিলেন। তবে সেখানেই সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর সহযোদ্ধারা উপলব্ধি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে এক পরাধীনতা থেকে পূর্ব বাংলা আরেক পরাধীনতায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছিল। সেটি থেকে পূর্ব বাংলাকে মুক্ত করতে হবে। সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের ওই বৈঠকে এ ছিল তোমার পিতার প্রতিজ্ঞা।
ঢাকায় এসে তিনি তাই করতে শুরু করেন। তাতে তোমার এবং সংসারের প্রতি তাঁর মনোযোগ দেওয়ার সময় ছিল না। তারপরও মাঝে মাঝে তোমাকে দেখতে গোপালগঞ্জে ছুটে যেতেন। আবার এসে রাজনীতি, দল গঠন, আন্দোলন-সংগ্রাম, জেল। এভাবেই তোমাদের পিতা হয়ে উঠলেন পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের দৃঢ়চেতা নেতারূপে। গোপালগঞ্জে তুমি মা, দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজন নিয়ে শিশুকাল অতিক্রম করেছিলে। খেলাধুলা, গ্রামের নৈসর্গিক পরিবেশ, মধুমতী নদীর ঢেউ—এসবই তখন তোমার দেখা। একসময় ঢাকায় এসেছ, স্কুলে ভর্তিও হয়েছিলে। কিন্তু কখনো কখনো গোপালগঞ্জে আবার ফিরে যেতে হয়েছিল।
কারণ বাবার রাজনীতি বড়ই কঠিন ছিল। জেলে যাওয়া এবং সারা দেশ চষে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে যিনি প্রতিদিন প্রদেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত, করাচিসহ পশ্চিম পাকিস্তানেরও বিভিন্ন জায়গায় সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকতেন, পরিবারকে দেখার তাঁর সময় কোথায়? তবে তোমার মা পিতার অনুপস্থিতির অনেক কিছুই পূরণ করতে ত্রুটি করতেন না। দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজনেরাও তোমার এবং ভাইবোনদের প্রতি যত্নবান ছিলেন। যখনই পিতা আসতেন, ভরিয়ে দিতেন তোমাদের আদর-স্নেহে। তোমরা ভুলে যেতে পিতাকে সব সময় না পাওয়ার অনুপস্থিতি। তিনি তোমাদের নিয়ে ভাবতেন। মা সেটি পূরণ করতেন।
যখন আইয়ুব খান রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রেখেছিলেন, তখন তিনি তোমাদের নিয়ে ১৯৬১ সালের ১ থেকে ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। সে কথা তুমি নিজেও লিখেছ। বলে রাখি, তোমার পিতা তোমার মাকে নিয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, হিমছড়ি, মহেশখালী, কাপ্তাই একান্তে বেড়িয়েছিলেন ১৯৬৩ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত। রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ইত্যাদি গুণে বড় হওয়ার শিক্ষা তোমাদের পরিবারে দাদা-দাদি, বাবা-মা, নিকটাত্মীয়জনদের কাছ থেকেই তোমরা পেয়েছিলে। বুঝেছিলে পিতা দেশকে উজাড় করে দিচ্ছেন। তাই তোমাদের পাওয়ার কিছু ঘাটতি থাকলেও সেটাই তোমরা মেনে নিয়েছিলে।
ছোটকাল থেকেই তোমরা অসংখ্য বড় বড় মানুষকে দেখে, শিখেই বড় হয়েছ। তোমাদের পিতা লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমার পারিবারিক জীবনটিও যাতে সুন্দর হয়, সেভাবেই তোমার জন্য সবকিছু ব্যবস্থা করেছিলেন। এমন রাজনৈতিক পরিবেশের স্বাভাবিক নিয়মে চলা জীবনে কোনো দিন ছেদ পড়বে—এটা হয়তো তোমরা কোনো দিন ভাবনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তুমি তোমার মায়ের কাছে বন্দী ছিলে আর পিতা ছিলেন পাকিস্তানিদের জেলে কারারুদ্ধ।
সেই বন্দিজীবনেই তোমার সন্তান জয়ের জন্ম। সে নামটিও আগে রেখে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। জয় যেন মুক্তিযুদ্ধেরও বিজয়ের বার্তা নিয়ে তোমার কোলে এসেছিল। স্বাধীন দেশে তুমি লেখাপড়া, স্বামী-সংসারে জয় ও পুতুলকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বঙ্গবন্ধু এবং তোমার মায়ের স্নেহের পরশ সারাক্ষণই তোমাদের ঘিরে ছিল। বঙ্গবন্ধু কখনো ভাবেননি তোমরা তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে।
কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা গোটা পরিবারই শুধু নয়, নিকটাত্মীয়দেরও পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে। ছোট বোন, দুই সন্তান নিয়ে জার্মানিতে থাকার কারণে মৃত্যুর হাত থেকে তুমি রক্ষা পেয়েছ। অবধারিত মৃত্যু থেকে তুমি নতুনভাবে জন্ম নিয়েছ। সেই জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দলেরই শুধু হাল ধরোনি, গোটা বাঙালি জাতি এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃজাতিগোষ্ঠীর মানুষ—যারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর কাঁদতে পারেনি, তারা ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রাণ খুলে স্লোগান দিয়েছে, স্বপ্ন দেখেছে তোমাকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধুর পরশ তোমার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল।
তুমি সেই পরশে ধীরে ধীরে জ্বলে উঠতে শুরু করেছ। আন্দোলন-সংগ্রাম, অভিজ্ঞতা, রাজনীতিকে নতুনভাবে চেনা-জানা, বোঝা, ঘাত-প্রতিঘাতকে অতিক্রম করে রাজপথে তুমি আরেক বঙ্গবন্ধুতে যেন আবির্ভূত হলে। সে কারণে ঘাতকেরা তোমাকে হত্যা করতে কয়েকবারই গুলি ছুড়েছে। বেঁচে গেছ, কিন্তু থেমে যাওনি। আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে প্রতিকূলতাকে একের পর এক অতিক্রম করে ১৯৯৬ সালে তুমি সেই আসনে বসেছিলে, যে আসনে জাতির পিতা বসেছিলেন দেশটাকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী ও শোষণহীন অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থা উপহার দিতে। পাঁচ বছরে তুমি এত দিনকার অনেকেরই অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ভাঙিয়ে দিলে তোমার কাজ দিয়ে। গঙ্গার পানিচুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি, ইনডেমনিটির কালাকানুন থেকে জাতিকে মুক্তি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।
তোমার নেওয়া সব উদ্যোগই থেমে গেল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তোমাকে প্রায় হত্যাই করে ফেলা হয়েছিল। ফিনিক্স পাখির মতো তুমি আবারও জন্ম নিলে। ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়ে দিনবদলের সনদ আর রূপকল্প একে একে বাস্তবায়ন করতে থাকলে। স্বল্পোন্নত দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ, উন্নয়নশীল দেশ ইত্যাদি আসনে উন্নীত করেছ দেশটাকে। শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প, ডিজিটালাইজেশন, আশ্রয়হীনদের আশ্রয়দান, কোটি কোটি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার নানা খাতে মানুষকে রাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রদান। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তুমি করলে।
দেশটাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বদলে দিতে তুমিই পারলে। তোমার আগে কোনো সরকারই এই কৃতিত্ব পাওয়ার মতো কাজ করেনি। এখন তোমাকে ঘিরেই জাতির অনেক অনেক প্রত্যাশা। রাষ্ট্রটাকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার অসমাপ্ত কাজ তোমাকেই করতে হবে। শিক্ষা, সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণ, মেধা, দেশপ্রেম এবং সৎ নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতির নেতা-কর্মী ও গোটা সমাজব্যবস্থাকে আধুনিক চরিত্রে রূপায়িত করার কাজটি জানি অনেক কঠিন এবং দীর্ঘ সময়ের। সে কাজটিতে তুমি কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাত দিয়েছ। কিন্তু তোমার কাজ যেন যথার্থ উত্তরাধিকারেই সমর্পিত হয়।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞ—এবার ৭৭তম জন্মতিথিতে তোমার কাছেই আমাদের প্রত্যাশা। জানি অনেকেই আছে তোমাকে সরিয়ে বাংলাদেশটাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের জন্য পশ্চাদপসরণ—এটি নিকট অতীতেরই অভিজ্ঞতা। তুমি তোমার শাসনকালের ২০ বছরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছ। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়; বরং দেশটার সম্ভাবনা দেখেই তাবৎ শক্তি বাংলাদেশকে নিয়ে এখন টানাটানি করছে। তুমি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতিতে অটল থাকার চেষ্টা করছ।
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের এবং অসাম্প্রদায়িক উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশী, তারা তোমার পাশেই আছি। তুমি দীর্ঘজীবী হলে আমাদের স্বপ্ন সফল হবে, বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে, অসমাপ্ত বাংলাদেশ সমাপ্তির ইতিহাস রচনা করতে পারবে। তুমি হাল ধরেছিলে বলেই আজ তোমার জন্মদিনে এত অর্জন এবং নতুন নতুন প্রত্যাশা নিয়ে শুভেচ্ছাকামনা।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও ফজিলাতুন নেছা দম্পতির প্রথম সন্তান হিসেবে তুমি জন্ম নিয়েছিলে। এই ভূখণ্ডে তখন এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়। ইতিহাসে এটিকে দেশভাগের সময় বলা হয়।
তোমার পিতা কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে থাকলেন। এই বাংলায় তাঁর বড্ড বেশি প্রয়োজন ছিল। সে কারণেই ঢাকার পাকিস্তান আন্দোলনকারী ছাত্রনেতারা কলকাতা থেকে তাঁকে চলে আসার তাগিদ দিচ্ছিলেন। তিনি সাড়াও দিয়েছিলেন। তবে সেখানেই সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর সহযোদ্ধারা উপলব্ধি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে এক পরাধীনতা থেকে পূর্ব বাংলা আরেক পরাধীনতায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছিল। সেটি থেকে পূর্ব বাংলাকে মুক্ত করতে হবে। সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের ওই বৈঠকে এ ছিল তোমার পিতার প্রতিজ্ঞা।
ঢাকায় এসে তিনি তাই করতে শুরু করেন। তাতে তোমার এবং সংসারের প্রতি তাঁর মনোযোগ দেওয়ার সময় ছিল না। তারপরও মাঝে মাঝে তোমাকে দেখতে গোপালগঞ্জে ছুটে যেতেন। আবার এসে রাজনীতি, দল গঠন, আন্দোলন-সংগ্রাম, জেল। এভাবেই তোমাদের পিতা হয়ে উঠলেন পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের দৃঢ়চেতা নেতারূপে। গোপালগঞ্জে তুমি মা, দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজন নিয়ে শিশুকাল অতিক্রম করেছিলে। খেলাধুলা, গ্রামের নৈসর্গিক পরিবেশ, মধুমতী নদীর ঢেউ—এসবই তখন তোমার দেখা। একসময় ঢাকায় এসেছ, স্কুলে ভর্তিও হয়েছিলে। কিন্তু কখনো কখনো গোপালগঞ্জে আবার ফিরে যেতে হয়েছিল।
কারণ বাবার রাজনীতি বড়ই কঠিন ছিল। জেলে যাওয়া এবং সারা দেশ চষে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে যিনি প্রতিদিন প্রদেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত, করাচিসহ পশ্চিম পাকিস্তানেরও বিভিন্ন জায়গায় সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকতেন, পরিবারকে দেখার তাঁর সময় কোথায়? তবে তোমার মা পিতার অনুপস্থিতির অনেক কিছুই পূরণ করতে ত্রুটি করতেন না। দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজনেরাও তোমার এবং ভাইবোনদের প্রতি যত্নবান ছিলেন। যখনই পিতা আসতেন, ভরিয়ে দিতেন তোমাদের আদর-স্নেহে। তোমরা ভুলে যেতে পিতাকে সব সময় না পাওয়ার অনুপস্থিতি। তিনি তোমাদের নিয়ে ভাবতেন। মা সেটি পূরণ করতেন।
যখন আইয়ুব খান রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রেখেছিলেন, তখন তিনি তোমাদের নিয়ে ১৯৬১ সালের ১ থেকে ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। সে কথা তুমি নিজেও লিখেছ। বলে রাখি, তোমার পিতা তোমার মাকে নিয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, হিমছড়ি, মহেশখালী, কাপ্তাই একান্তে বেড়িয়েছিলেন ১৯৬৩ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত। রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ইত্যাদি গুণে বড় হওয়ার শিক্ষা তোমাদের পরিবারে দাদা-দাদি, বাবা-মা, নিকটাত্মীয়জনদের কাছ থেকেই তোমরা পেয়েছিলে। বুঝেছিলে পিতা দেশকে উজাড় করে দিচ্ছেন। তাই তোমাদের পাওয়ার কিছু ঘাটতি থাকলেও সেটাই তোমরা মেনে নিয়েছিলে।
ছোটকাল থেকেই তোমরা অসংখ্য বড় বড় মানুষকে দেখে, শিখেই বড় হয়েছ। তোমাদের পিতা লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমার পারিবারিক জীবনটিও যাতে সুন্দর হয়, সেভাবেই তোমার জন্য সবকিছু ব্যবস্থা করেছিলেন। এমন রাজনৈতিক পরিবেশের স্বাভাবিক নিয়মে চলা জীবনে কোনো দিন ছেদ পড়বে—এটা হয়তো তোমরা কোনো দিন ভাবনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তুমি তোমার মায়ের কাছে বন্দী ছিলে আর পিতা ছিলেন পাকিস্তানিদের জেলে কারারুদ্ধ।
সেই বন্দিজীবনেই তোমার সন্তান জয়ের জন্ম। সে নামটিও আগে রেখে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। জয় যেন মুক্তিযুদ্ধেরও বিজয়ের বার্তা নিয়ে তোমার কোলে এসেছিল। স্বাধীন দেশে তুমি লেখাপড়া, স্বামী-সংসারে জয় ও পুতুলকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বঙ্গবন্ধু এবং তোমার মায়ের স্নেহের পরশ সারাক্ষণই তোমাদের ঘিরে ছিল। বঙ্গবন্ধু কখনো ভাবেননি তোমরা তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে।
কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা গোটা পরিবারই শুধু নয়, নিকটাত্মীয়দেরও পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে। ছোট বোন, দুই সন্তান নিয়ে জার্মানিতে থাকার কারণে মৃত্যুর হাত থেকে তুমি রক্ষা পেয়েছ। অবধারিত মৃত্যু থেকে তুমি নতুনভাবে জন্ম নিয়েছ। সেই জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দলেরই শুধু হাল ধরোনি, গোটা বাঙালি জাতি এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃজাতিগোষ্ঠীর মানুষ—যারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর কাঁদতে পারেনি, তারা ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রাণ খুলে স্লোগান দিয়েছে, স্বপ্ন দেখেছে তোমাকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধুর পরশ তোমার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল।
তুমি সেই পরশে ধীরে ধীরে জ্বলে উঠতে শুরু করেছ। আন্দোলন-সংগ্রাম, অভিজ্ঞতা, রাজনীতিকে নতুনভাবে চেনা-জানা, বোঝা, ঘাত-প্রতিঘাতকে অতিক্রম করে রাজপথে তুমি আরেক বঙ্গবন্ধুতে যেন আবির্ভূত হলে। সে কারণে ঘাতকেরা তোমাকে হত্যা করতে কয়েকবারই গুলি ছুড়েছে। বেঁচে গেছ, কিন্তু থেমে যাওনি। আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে প্রতিকূলতাকে একের পর এক অতিক্রম করে ১৯৯৬ সালে তুমি সেই আসনে বসেছিলে, যে আসনে জাতির পিতা বসেছিলেন দেশটাকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী ও শোষণহীন অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থা উপহার দিতে। পাঁচ বছরে তুমি এত দিনকার অনেকেরই অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ভাঙিয়ে দিলে তোমার কাজ দিয়ে। গঙ্গার পানিচুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি, ইনডেমনিটির কালাকানুন থেকে জাতিকে মুক্তি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।
তোমার নেওয়া সব উদ্যোগই থেমে গেল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তোমাকে প্রায় হত্যাই করে ফেলা হয়েছিল। ফিনিক্স পাখির মতো তুমি আবারও জন্ম নিলে। ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়ে দিনবদলের সনদ আর রূপকল্প একে একে বাস্তবায়ন করতে থাকলে। স্বল্পোন্নত দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ, উন্নয়নশীল দেশ ইত্যাদি আসনে উন্নীত করেছ দেশটাকে। শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প, ডিজিটালাইজেশন, আশ্রয়হীনদের আশ্রয়দান, কোটি কোটি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার নানা খাতে মানুষকে রাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রদান। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তুমি করলে।
দেশটাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বদলে দিতে তুমিই পারলে। তোমার আগে কোনো সরকারই এই কৃতিত্ব পাওয়ার মতো কাজ করেনি। এখন তোমাকে ঘিরেই জাতির অনেক অনেক প্রত্যাশা। রাষ্ট্রটাকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার অসমাপ্ত কাজ তোমাকেই করতে হবে। শিক্ষা, সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণ, মেধা, দেশপ্রেম এবং সৎ নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতির নেতা-কর্মী ও গোটা সমাজব্যবস্থাকে আধুনিক চরিত্রে রূপায়িত করার কাজটি জানি অনেক কঠিন এবং দীর্ঘ সময়ের। সে কাজটিতে তুমি কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাত দিয়েছ। কিন্তু তোমার কাজ যেন যথার্থ উত্তরাধিকারেই সমর্পিত হয়।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞ—এবার ৭৭তম জন্মতিথিতে তোমার কাছেই আমাদের প্রত্যাশা। জানি অনেকেই আছে তোমাকে সরিয়ে বাংলাদেশটাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের জন্য পশ্চাদপসরণ—এটি নিকট অতীতেরই অভিজ্ঞতা। তুমি তোমার শাসনকালের ২০ বছরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছ। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়; বরং দেশটার সম্ভাবনা দেখেই তাবৎ শক্তি বাংলাদেশকে নিয়ে এখন টানাটানি করছে। তুমি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতিতে অটল থাকার চেষ্টা করছ।
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের এবং অসাম্প্রদায়িক উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশী, তারা তোমার পাশেই আছি। তুমি দীর্ঘজীবী হলে আমাদের স্বপ্ন সফল হবে, বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে, অসমাপ্ত বাংলাদেশ সমাপ্তির ইতিহাস রচনা করতে পারবে। তুমি হাল ধরেছিলে বলেই আজ তোমার জন্মদিনে এত অর্জন এবং নতুন নতুন প্রত্যাশা নিয়ে শুভেচ্ছাকামনা।

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও ফজিলাতুন নেছা দম্পতির প্রথম সন্তান হিসেবে তুমি জন্ম নিয়েছিলে। এই ভূখণ্ডে তখন এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়। ইতিহাসে এটিকে দেশভাগের সময় বলা হয়।
তোমার পিতা কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে থাকলেন। এই বাংলায় তাঁর বড্ড বেশি প্রয়োজন ছিল। সে কারণেই ঢাকার পাকিস্তান আন্দোলনকারী ছাত্রনেতারা কলকাতা থেকে তাঁকে চলে আসার তাগিদ দিচ্ছিলেন। তিনি সাড়াও দিয়েছিলেন। তবে সেখানেই সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর সহযোদ্ধারা উপলব্ধি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে এক পরাধীনতা থেকে পূর্ব বাংলা আরেক পরাধীনতায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছিল। সেটি থেকে পূর্ব বাংলাকে মুক্ত করতে হবে। সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের ওই বৈঠকে এ ছিল তোমার পিতার প্রতিজ্ঞা।
ঢাকায় এসে তিনি তাই করতে শুরু করেন। তাতে তোমার এবং সংসারের প্রতি তাঁর মনোযোগ দেওয়ার সময় ছিল না। তারপরও মাঝে মাঝে তোমাকে দেখতে গোপালগঞ্জে ছুটে যেতেন। আবার এসে রাজনীতি, দল গঠন, আন্দোলন-সংগ্রাম, জেল। এভাবেই তোমাদের পিতা হয়ে উঠলেন পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের দৃঢ়চেতা নেতারূপে। গোপালগঞ্জে তুমি মা, দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজন নিয়ে শিশুকাল অতিক্রম করেছিলে। খেলাধুলা, গ্রামের নৈসর্গিক পরিবেশ, মধুমতী নদীর ঢেউ—এসবই তখন তোমার দেখা। একসময় ঢাকায় এসেছ, স্কুলে ভর্তিও হয়েছিলে। কিন্তু কখনো কখনো গোপালগঞ্জে আবার ফিরে যেতে হয়েছিল।
কারণ বাবার রাজনীতি বড়ই কঠিন ছিল। জেলে যাওয়া এবং সারা দেশ চষে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে যিনি প্রতিদিন প্রদেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত, করাচিসহ পশ্চিম পাকিস্তানেরও বিভিন্ন জায়গায় সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকতেন, পরিবারকে দেখার তাঁর সময় কোথায়? তবে তোমার মা পিতার অনুপস্থিতির অনেক কিছুই পূরণ করতে ত্রুটি করতেন না। দাদা-দাদি, আত্মীয়স্বজনেরাও তোমার এবং ভাইবোনদের প্রতি যত্নবান ছিলেন। যখনই পিতা আসতেন, ভরিয়ে দিতেন তোমাদের আদর-স্নেহে। তোমরা ভুলে যেতে পিতাকে সব সময় না পাওয়ার অনুপস্থিতি। তিনি তোমাদের নিয়ে ভাবতেন। মা সেটি পূরণ করতেন।
যখন আইয়ুব খান রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রেখেছিলেন, তখন তিনি তোমাদের নিয়ে ১৯৬১ সালের ১ থেকে ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। সে কথা তুমি নিজেও লিখেছ। বলে রাখি, তোমার পিতা তোমার মাকে নিয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, হিমছড়ি, মহেশখালী, কাপ্তাই একান্তে বেড়িয়েছিলেন ১৯৬৩ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত। রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ইত্যাদি গুণে বড় হওয়ার শিক্ষা তোমাদের পরিবারে দাদা-দাদি, বাবা-মা, নিকটাত্মীয়জনদের কাছ থেকেই তোমরা পেয়েছিলে। বুঝেছিলে পিতা দেশকে উজাড় করে দিচ্ছেন। তাই তোমাদের পাওয়ার কিছু ঘাটতি থাকলেও সেটাই তোমরা মেনে নিয়েছিলে।
ছোটকাল থেকেই তোমরা অসংখ্য বড় বড় মানুষকে দেখে, শিখেই বড় হয়েছ। তোমাদের পিতা লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমার পারিবারিক জীবনটিও যাতে সুন্দর হয়, সেভাবেই তোমার জন্য সবকিছু ব্যবস্থা করেছিলেন। এমন রাজনৈতিক পরিবেশের স্বাভাবিক নিয়মে চলা জীবনে কোনো দিন ছেদ পড়বে—এটা হয়তো তোমরা কোনো দিন ভাবনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তুমি তোমার মায়ের কাছে বন্দী ছিলে আর পিতা ছিলেন পাকিস্তানিদের জেলে কারারুদ্ধ।
সেই বন্দিজীবনেই তোমার সন্তান জয়ের জন্ম। সে নামটিও আগে রেখে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। জয় যেন মুক্তিযুদ্ধেরও বিজয়ের বার্তা নিয়ে তোমার কোলে এসেছিল। স্বাধীন দেশে তুমি লেখাপড়া, স্বামী-সংসারে জয় ও পুতুলকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বঙ্গবন্ধু এবং তোমার মায়ের স্নেহের পরশ সারাক্ষণই তোমাদের ঘিরে ছিল। বঙ্গবন্ধু কখনো ভাবেননি তোমরা তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে।
কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা গোটা পরিবারই শুধু নয়, নিকটাত্মীয়দেরও পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে। ছোট বোন, দুই সন্তান নিয়ে জার্মানিতে থাকার কারণে মৃত্যুর হাত থেকে তুমি রক্ষা পেয়েছ। অবধারিত মৃত্যু থেকে তুমি নতুনভাবে জন্ম নিয়েছ। সেই জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দলেরই শুধু হাল ধরোনি, গোটা বাঙালি জাতি এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃজাতিগোষ্ঠীর মানুষ—যারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর কাঁদতে পারেনি, তারা ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রাণ খুলে স্লোগান দিয়েছে, স্বপ্ন দেখেছে তোমাকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধুর পরশ তোমার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল।
তুমি সেই পরশে ধীরে ধীরে জ্বলে উঠতে শুরু করেছ। আন্দোলন-সংগ্রাম, অভিজ্ঞতা, রাজনীতিকে নতুনভাবে চেনা-জানা, বোঝা, ঘাত-প্রতিঘাতকে অতিক্রম করে রাজপথে তুমি আরেক বঙ্গবন্ধুতে যেন আবির্ভূত হলে। সে কারণে ঘাতকেরা তোমাকে হত্যা করতে কয়েকবারই গুলি ছুড়েছে। বেঁচে গেছ, কিন্তু থেমে যাওনি। আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে প্রতিকূলতাকে একের পর এক অতিক্রম করে ১৯৯৬ সালে তুমি সেই আসনে বসেছিলে, যে আসনে জাতির পিতা বসেছিলেন দেশটাকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী ও শোষণহীন অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থা উপহার দিতে। পাঁচ বছরে তুমি এত দিনকার অনেকেরই অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ভাঙিয়ে দিলে তোমার কাজ দিয়ে। গঙ্গার পানিচুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি, ইনডেমনিটির কালাকানুন থেকে জাতিকে মুক্তি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।
তোমার নেওয়া সব উদ্যোগই থেমে গেল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তোমাকে প্রায় হত্যাই করে ফেলা হয়েছিল। ফিনিক্স পাখির মতো তুমি আবারও জন্ম নিলে। ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়ে দিনবদলের সনদ আর রূপকল্প একে একে বাস্তবায়ন করতে থাকলে। স্বল্পোন্নত দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ, উন্নয়নশীল দেশ ইত্যাদি আসনে উন্নীত করেছ দেশটাকে। শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প, ডিজিটালাইজেশন, আশ্রয়হীনদের আশ্রয়দান, কোটি কোটি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার নানা খাতে মানুষকে রাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রদান। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তুমি করলে।
দেশটাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বদলে দিতে তুমিই পারলে। তোমার আগে কোনো সরকারই এই কৃতিত্ব পাওয়ার মতো কাজ করেনি। এখন তোমাকে ঘিরেই জাতির অনেক অনেক প্রত্যাশা। রাষ্ট্রটাকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার অসমাপ্ত কাজ তোমাকেই করতে হবে। শিক্ষা, সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণ, মেধা, দেশপ্রেম এবং সৎ নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতির নেতা-কর্মী ও গোটা সমাজব্যবস্থাকে আধুনিক চরিত্রে রূপায়িত করার কাজটি জানি অনেক কঠিন এবং দীর্ঘ সময়ের। সে কাজটিতে তুমি কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাত দিয়েছ। কিন্তু তোমার কাজ যেন যথার্থ উত্তরাধিকারেই সমর্পিত হয়।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞ—এবার ৭৭তম জন্মতিথিতে তোমার কাছেই আমাদের প্রত্যাশা। জানি অনেকেই আছে তোমাকে সরিয়ে বাংলাদেশটাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের জন্য পশ্চাদপসরণ—এটি নিকট অতীতেরই অভিজ্ঞতা। তুমি তোমার শাসনকালের ২০ বছরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছ। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়; বরং দেশটার সম্ভাবনা দেখেই তাবৎ শক্তি বাংলাদেশকে নিয়ে এখন টানাটানি করছে। তুমি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতিতে অটল থাকার চেষ্টা করছ।
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের এবং অসাম্প্রদায়িক উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশী, তারা তোমার পাশেই আছি। তুমি দীর্ঘজীবী হলে আমাদের স্বপ্ন সফল হবে, বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে, অসমাপ্ত বাংলাদেশ সমাপ্তির ইতিহাস রচনা করতে পারবে। তুমি হাল ধরেছিলে বলেই আজ তোমার জন্মদিনে এত অর্জন এবং নতুন নতুন প্রত্যাশা নিয়ে শুভেচ্ছাকামনা।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আজ তোমার জন্মদিন। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাসী মানুষজন শুধু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই নয়, ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও আজ তোমাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছে। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫