Ajker Patrika

কিশোরদের মানসিক চিকিৎসা কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ০৮
কিশোরদের মানসিক চিকিৎসা কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র’ চালু হয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে পরামর্শ দেয় কেন্দ্রটি। একজন সহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা, বিশেষভাবে সুসজ্জিত কক্ষে খেলা, বিনোদন ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ভুক্তভোগীদের সমস্যা শুনে পরামর্শ দেন গোপনীয়তার সঙ্গে। ইউনিসেফের উদ্যোগে এই সেবা চালু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিশুর স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এই সেবা তৃণমূলে পৌঁছাতে ইউনিসেফ সারা দেশে ৬০৩টি কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করে। কারণ, কৈশোরে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকশিত হয়। এই সময়ে তারা অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে পারে। নানা কারণে তারা বিপথগামী হয়। হতাশায় অনেকে আত্মহত্যার মতো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। তাই এই সময় শিশুর মানসিক ও শারীরিক পরিচর্চার জন্য একজন ভালো পরামর্শকের দরকার হয়।

গত সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গেলে দেখা যায়, একটি কক্ষের পাশে কয়েকজন কিশোর অপেক্ষা করছে। ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, চিকিৎসক ও একজন কিশোর দাবা খেলছেন। দুজন কথা বলছেন আর খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইশারায় অপেক্ষা করতে বললেন চিকিৎসক। তারপর আবার খেলা ও কথা শুরু। শেষ হলো ৩০ মিনিট পর। পরে জানা যায়, খেলার ছলে ওই কিশোরের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলাপ করছিলেন চিকিৎসক। চার মাস ধরে বিনা মূল্যে এভাবেই কিশোর-কিশোরীরা এই কেন্দ্র থেকে সেবা নিচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত চার মাসে আড়াই শতাধিক কিশোর-কিশোরী এই সেবা নিয়েছে। এখানে চিকিৎসক শিশু-কিশোরদের পুষ্টি, মানসিক স্বাস্থ্য, প্রজননস্বাস্থ্য, এইচআইভি, পয়োনিষ্কাশন, ঋতুস্রাবকালীন পরিচ্ছন্নতা, ভালো বন্ধু নির্বাচন ও সামাজিক নানা বিষয়ে কাউন্সেলিং করেন। গোবিন্দপুর উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলে, ‘পারিবারিক নানা জটিলতার কারণে আমার চুপচাপ থাকতে ভালো লাগত। লেখাপড়ায় মন বসত না। মনের কথাগুলো বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাউকে বলতে পারছিলাম না। তখন আমার শিক্ষক এখানে পাঠালেন। এখন আমি স্বাভাবিক আছি।’

দায়িত্বরত সহকারী চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ বলেন, কৈশোর বয়সের সন্তানের সব ধরনের পরিবর্তন অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করাতে হবে। শিশুদের মানসিক বিকাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভালো ভালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল শাফি বলেন, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়তা করাই এই কর্নারের উদ্দেশ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত