Ajker Patrika

পেঁয়াজগাছের সঙ্গে শত্রুতা

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৯: ০০
পেঁয়াজগাছের সঙ্গে শত্রুতা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রাতের আধারে তিনজন কৃষকের পেঁয়াজখেত নষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পূর্বশত্রুতার জেরে এ কাজ করেছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের খোদ্দ ভালুকা গ্রামের ফুলতলা মাঠে এ ঘটনা ঘটে। খেত নষ্টের খবর পেয়ে অন্য চাষিদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, রাতে পেঁয়াজখেত পাহারার ব্যবস্থা করবেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা হলেন খোদ্দ ভালুকা গ্রামের মো. মোফাজজ্জেল হোসেনের ছেলে আবদুল আলম মোল্লা, মো. ইদ্রিস আলীর ছেলে নোয়াব আলী ও নোয়াবের ছেলে লুৎফর আলী। জানা গেছে, প্রায় ৪ কাঠা জমির পেঁয়াজগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার ক্ষতি হয়েছে।

ভুক্তভোগী লুৎফর বলেন, ‘মাঠে শত শত কৃষকের পেঁয়াজখেত। কারও কিছুই হয়নি। শুধু আমাদের তিনজনের প্রায় চার কাঠা জমির পেঁয়াজখেত নষ্ট করা হয়েছে। রাতে কে বা কারা করেছে, জানি না। এতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে।’

আরেক ভুক্তভোগী আবদুল আলম মোল্লা বলেন, ‘৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। মাসখানেক পরে পেঁয়াজ ঘরে তুলব। এরই মধ্যে রাতে শত্রুতা করে প্রায় দেড় কাঠা জমির পেঁয়াজগাছ নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা। বাকি জমির পেঁয়াজ নিয়ে চিন্তায় আছি।’

স্থানীয় কৃষক আজম খান বলেন, ‘কিছুদিন পর পেঁয়াজ ঘরে উঠবে। এবার অনুকূল আবহাওয়ায় পেঁয়াজের গাছ ভালো হয়েছে। ভালো ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকেরা। কিন্তু রাতের আধারে কে বা কারা পেঁয়াজখেত নষ্ট করা শুরু করেছে। এ নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

কৃষক নোয়াব আলী বলেন, ‘মাঠে শত্রু লেগেছে। রাতে খেত পাহারার ব্যবস্থা করা হবে। অন্যথায় কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান অর্থকারী ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ অন্যতম। মাসখানেকের মধ্যে পেঁয়াজ ঘরে তোলার কাজ শুরু করবেন কৃষকেরা। বর্তমানে পরিচর্যার কাজ করছেন। সময়মতো প্রণোদনা দেওয়া, অনুকূল আবহাওয়া, চারার পর্যাপ্ততা, গতবারের চেয়ে খরচ কম ও লাভজনক ফসল হওয়ায় এ বছর উপজেলায় ৫ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯০ হেক্টর বেশি। গত বছর উপজেলায় ৭০ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছিল। এবার ৭৪ হাজার ২০০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, ‘পেঁয়াজগাছ নষ্টের কথা শুনিনি। তবে শেষ মুহূর্তে পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজ ঘরে তোলা শুরু করবেন তাঁরা। এ বছর ৭৪ হাজার ২০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি কার্যালয় সব সময় কৃষকদের পাশে আছে।’

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, পেঁয়াজ খেত তছরুপের খবর পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত