Ajker Patrika

চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরতে হচ্ছে রোগীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮: ২৬
চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরতে হচ্ছে রোগীদের

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সবগুলো রেডিয়েশন থেরাপি যন্ত্র বিকল হয়ে পড়েছে। হাসপাতালের ছয়টি যন্ত্র থাকলেও পাঁচটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে ছিল। সেবা চলছিল মাত্র একটি মেশিন দিয়ে। সেটিও গত বৃহস্পতিবার থেকে বিকল হয়ে পড়েছে। এতে দেশের ক্যানসার চিকিৎসার প্রধান এই প্রতিষ্ঠানে এখন আর রোগীরা রেডিও থেরাপি সেবা পাচ্ছে না। এতে চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখে রোগীদের এখান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে।

হাসপাতালের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানে দুটি কোবাল্ট, চারটি লিনিয়ার এক্সিলারেটরসহ ছয়টি রেডিয়েশন যন্ত্র ছিল। লিনিয়ার এক্সিলারেটর-১ ও ২ এবং কোবাল্ট-১ ও ২ কনডেমনেশনের (মেরামত অযোগ্য) ঘোষণা দেওয়া হয় ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ৪ নম্বর লিনিয়ার এক্সলারেটর মেশিনটিও প্রায় এক বছর ধরে নষ্ট। এই সময়ে শুধু একটি রেডিয়েশন মেশিন দিয়ে কিছু রোগীকে সেবা দেওয়া হতো। তবে ছয় মাস ধরে কোনো নতুন রোগীকে রেডিয়েশন সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই সময়ে সব রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে রেডিও থেরাপি নিতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নিজামুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, সবগুলো রেডিয়েশন যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়েছে। যন্ত্রগুলো যে প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা, সেটি বিক্রি হয়ে যাওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। দুটি যন্ত্র ঠিক করাতে ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন।

নতুন মেশিন কেনা প্রসঙ্গে নিজামুল হক বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) টেন্ডার আহ্বান করেছে, সেটিও সময়সাপেক্ষ।

হাসপাতালের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের চিকৎসকেরা জানান, সবগুলো রেডিয়েশন যন্ত্র নষ্ট থাকায় এখানকার রোগীদের চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যেতে হচ্ছে। এতে তারা মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ছে। অনেকের পক্ষেই বেসরকারি হাসপাতালের ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য আগের তিনজন পরিচালক দায়ী বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. শেখ দাউদ আদনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি রেডিয়েশন মেশিনের সার্ভিস ওয়ারেন্টির মেয়াদ এখনো আছে। কোনো কোম্পানি বিক্রি হওয়ার দায়িত্ব সরকার নেবে না। তাদের অবশ্যই যন্ত্র ঠিক করে দিতে হবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এই মেশিন সচল করে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক জানান, প্রতিদিন সাত শ থেকে সাড়ে আট শ রোগীকে সেবা দেওয়া হতো। সেই সেবা এখন পুরোপুরি বন্ধ। অথচ প্রায় প্রত্যেক ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা শুরুর একপর্যায়ে রেডিয়েশন সেবার প্রয়োজন হয়। তাঁরা জানান, এখানে কোবাল্ট-৬০ মেশিনে একবার থেরাপি পেতে রোগীর ব্যয় মাত্র এক শ টাকা। অন্যদিকে লিনিয়ার মেশিনের থেরাপি পেতে দিতে হয় দুই শ টাকা। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালে রেডিয়েশন থেরাপির প্ল্যানিং ফিস ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ একজন রোগীকে রেডিও থেরাপির একটি কোর্স সম্পন্ন করতে যদি ছয়বার থেরাপি নিতে হয়, তাহলে ব্যয় হবে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে একই সেবা পেতে রোগীকে গুনতে হয় কমপক্ষে ৮৭ হাজার টাকা (কোবাল্ট মেশিনে থেরাপি নিতে)। প্রতি এক্সপোজার ২ হাজার ৫০০ টাকা করে; এর সঙ্গে প্ল্যানিং বাবদ ২৫ হাজার টাকা। একই থেরাপি লিনিয়ার মেশিনে নিতে হলে রোগীকে গুনতে হবে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা। প্রতি এক্সপোজার ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে, এর সঙ্গে প্ল্যানিং বাবদ ৩৫ হাজার টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি কর্মচারীদের পদ-পদবি-বেতন কাঠামো নিয়ে পাল্টা অবস্থানে দুই পক্ষ

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

নাম প্রস্তাবে আটকে আছে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’

মোহাম্মদপুরে আলোকচিত্রী ও জিগাতলায় শিক্ষার্থী খুন

ফেসবুকে লাইক-কমেন্ট, পাঁচ কর্মকর্তাকে নোটিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত