Ajker Patrika

ঘর পেলেন না, টাকাও গেল, সুদের চাপে দিশেহারা

রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
ঘর পেলেন না, টাকাও গেল, সুদের চাপে দিশেহারা

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর, টিউবওয়েল ও বিভিন্ন ভাতার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে পঙ্গু রেনু বেগমসহ অন্তত ২০টি হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক টাকার বেশি আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে আরিফ ও রাজা মিয়া নামের দুই জনের বিরুদ্ধে।

দীর্ঘ আড়াইমাস অতিবাহিত হলেও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না তারা। সুদের টাকার চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে এই নামে কোনো কর্মচারী রাজৈর উপজেলায় নেই বলে জানান ইউএনও। তবে বয়স্কভাতার কার্ডের জন্য টাকা নেওয়ার একাধিক অভিযোগ পেলেও ঘরের বিষয়ে কিছুই জানেন উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, উপজেলার আমগ্রাম উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পঙ্গু রেনু বেগম (৪৫)। স্বামীকে নিয়ে চাতালে (কাঁচা ধান থেকে চাল তৈরির কারখানা) কাজ করে পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলের পড়াশোনাসহ সংসারের খরচ চালান। জমি না থাকায় পেয়েছিলেন সরকারি অনুদানের ৪ শতক জমি; কিন্তু টাকা না থাকায় ঘর তুলতে পারেননি রেনু বেগম। এরই সুযোগ নিয়ে ‘জমি আছে ঘর নেই’ আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি অনুদানের ঘর দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পঙ্গু রেনু বেগমের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন আরিফ ও রাজা মিয়া। ঘর পাওয়ার আশায় সুদে ৩০ হাজার টাকা এনে দেন তাদের হাতে। এ ছাড়া বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্কভাতা, টিউবওয়েলসহ বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একই এলাকার লিপি বেগম, রিনা 
বেগম, কাজল, গীতা বিচ্ছাসহ অন্তত ২০টি হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

রেনু বেগম বলেন, ‘আমাকে ঘর দেওয়া কথা বলে ৩০ হাজার টাকা নিছে। এখন আমার ঘরও নাই টাকাও নাই।’

গীতা বিচ্ছা বলেন, ‘আমরা সুদি করে তাদের টাকা দিছি, এখন আমরা সুদ দিতে পারতাছি না। আবার টাকাগুলা মাইর গেলে আমাদের কী অবস্থা হবে, আমরা এর বিচার ও শাস্তি চাই।’

মোবাইল ফোনে আরিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি গোপালগঞ্জ ডিসি অফিসে চাকরি করি। আমগ্রামের কোনো মানুষের কাছ থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নিইনি।’

রাজৈর ইউএনও বলেন, ‘রাজা নামে রাজৈর উপজেলায় কোনো কর্মচারী নেই। তবে বয়স্কভাতাসহ বিভিন্ন কার্ড করার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এ বিষয়টি জানা ছিল না। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত