Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

অভিনয়েই পুরোটা সময় দিতে চাই

Thumbnail Image

বুক পকেটের গল্প নাটকে আপনার অভিনয় প্রশংসিত হচ্ছে। কেমন লাগছে?
প্রশংসা হলে তো ভালোই লাগে। ওসি মাহফুজ চরিত্রটি সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। ওটিটির কাজ করলেও সবাই আমাকে সেভাবে চিনত না। ওটিটির কাজ নির্দিষ্ট শ্রেণির দর্শক দেখে। ইউটিউব তো সবার জন্য উন্মুক্ত। বুক পকেটের গল্প দিয়ে তাই বিশাল এক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযোগ তৈরি হলো। ক্যারিয়ারের নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে।  

এই নাটকে আপনার সংলাপগুলোও মানুষ ভীষণ পছন্দ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ক্লিপস শেয়ার করছে। এমনটা সব নাটকের ক্ষেত্রে হয় না। এই সাফল্যের কারণ কী বলে মনে করছেন? 
চরিত্র ও সংলাপগুলো বাস্তবসম্মত করে উপস্থাপন করা। সংলাপগুলো যেন আরোপিত মনে না হয়, সেই চেষ্টা তো ছিলই। দর্শকের কাছে সংলাপগুলো ভালো লেগেছে, এটা বড় প্রাপ্তি। আমি কিন্তু ইউটিউব নাটকের সঙ্গে একেবারেই পরিচিত নই। কাজ দিয়ে সাধারণ মানুষকে কানেক্ট করতে পারা খুব আনন্দের ও স্বস্তির। সুন্দর গল্প যদি ঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়, তাহলে সাধারণ দর্শক গ্রহণ করে। 

অনেকে অভিযোগ করেন, নির্মাতা ও প্রযোজকেরা নাটক নির্মাণের জন্য সেই সব শিল্পীদের প্রাধান্য দেন, সোশ্যাল মিডিয়া বা ইউটিউবে যাঁদের ভিউ বা ফলোয়ার বেশি। বুক পকেটের গল্পের সাফল্য কি তাহলে সেই অভিযোগের জবাব? 
পক্ষ-প্রতিপক্ষ বা জবাব দেওয়ার কোনো বিষয় এটা নয়। বাজারব্যবস্থা সব সময় অর্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে, এটাই স্বাভাবিক। আর ভিউ যেহেতু ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, সেটা তো প্রভাব ফেলবেই। বেশি ভিউজের শিল্পী না নিয়ে এত বড় ডিউরেশনের গল্পে অপরিচিত শিল্পীদের নিয়ে জাহিদ প্রীতম নিঃসন্দেহে বড় একটা ঝুঁকি নিয়েছেন। প্রাপ্তিটা এখানেই। ঝুঁকি নিয়ে ঠিকভাবে গল্পটি বানাতে পারলে সাধারণ মানুষ গ্রহণ করতে রাজি আছে। এটা উদাহরণ হতে পারে। গল্পে যদি নিজের যোগসূত্র খুঁজে পায় এবং কনটেন্টের মান যদি ভালো হয়, তাহলে দর্শক সেই গল্প গ্রহণ করতে প্রস্তুত। গল্পটাই কনটেন্টের হিরো হওয়া উচিত। 

শোবিজে ২০ বছর পার করে দিয়েছেন। সেই তুলনায় আপনার কাজের সংখ্যা বেশ কম। এর কারণ কী? 
আমার ক্যারিয়ারটা দীর্ঘ হলেও এই সময়ে আমি একটা ফুল টাইম চাকরি করতাম। যখন কাঁধে একটা পুরো দায়িত্ব থাকে, তখন অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সময় বেশি পাওয়া যায় না। আরেকটা কারণ হচ্ছে, নিয়মিত কাজ না করার কারণে ইউটিউবের জন্য নাটক করা হয়নি আমার। অনেকে হয়তো আমাকে নিয়ে ভাবেওনি। আমি চাইলে তো হবে না, আমাকে নিতেও হবে। তবে গত এক বছর অভিনয়টা সিরিয়াসলি করার চেষ্টা করছি। অভিনয়কে প্রাধান্য দিচ্ছি। ফুল টাইম আর কোথাও কাজ করছি না। এবার অভিনয়েই পুরোটা সময় দিতে চাই। 

অভিনয়ের জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন? 
হ্যাঁ। ফুল টাইম চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি। এখন একটা এনজিওর সঙ্গে কাজ করছি, তবে সেটা আমার সময় অনুযায়ী। এখন যেহেতু চাকরিতে ফুল টাইমে সম্পৃক্ত নই, তাই অভিনয়ে ফোকাস করাটা সহজ হবে। এ ছাড়া অভিনয়ের পাশাপাশি ভয়েস ওভার, কনটেন্ট ক্রিয়েট করছি। 

গত বছর ‘প্যাসেঞ্জার’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যে কাজ করেছিলেন। সে সময় বলা হয়েছিল, এটি নির্মাণ করা হচ্ছে কান ফেস্টিভ্যালকে উপলক্ষ করে। সেই কাজটির কি কোনো আপডেট আছে?
প্রেম, রোমান্স, সাসপেন্স আর থ্রিলারের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে প্যাসেঞ্জার। বানিয়েছেন ইভান মনোয়ার। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও দেখানো হয়েছে। কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাবে কি না, সে বিষয়ে আমি বলতে পারছি না। শুনেছি, দেশের কোনো একটা প্ল্যাটফর্মে মুক্তি দেওয়ার কথাও হচ্ছে। 

নতুন আর কী কাজ আসছে? 
আগামী সপ্তাহেই টাইগার মিডিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পাচ্ছে আলোক হাসানের স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘নিষিদ্ধ’। এ ছাড়া শুটিং শেষ করেছি শাহরিয়ার পলকের ওয়েব ফিল্ম ‘বকুলের বুকে রক্তকরবী’র। ঈদের বেশ কিছু কাজ নিয়ে কথা চলছে। বুক পকেটের গল্প প্রচারের পর অনেক নির্মাতাই আমাকে নিয়ে কাজ করতে চাইছেন। প্রযোজকেরাও হয়তো সাহস পাচ্ছেন। তবে এই মুহূর্তে বেশি কাজ হাতে নিতে চাইছি না। ধীরেসুস্থে এগোতে চাইছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত