Ajker Patrika

কলাতলী চরে সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১১: ১২
কলাতলী চরে সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

ভোলার মনপুরা উপজেলার কলাতলী চরে পতিত জমিতে সবজি চাষে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সবজির চাষ ভালো হওয়ায় লাভের আশা করছেন চরের চাষিরা।

জানা যায়, ভোলার দুর্গম দ্বীপ উপজেলা মনপুরার মেঘনা নদীর মাঝে জেগে ওঠা কলাতলী চরে এই মৌসুমে কৃষকেরা টমেটো, মিষ্টি আলু, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা, করলাসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন। নদীর লবণাক্ত পানি কলাতলী চরে প্রবেশ করায় এ চরে গত কয়েক বছর ধরে তেমন কোনো ফসল হচ্ছিল না। ফলে পতিতই পড়েছিল জমি। চলতি মৌসুমে এনজিও গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে বিনা মূল্যে বীজ, জৈব সার, কেঁচো সার এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে এবার সবজি চাষে লাভের আশা দেখছেন স্থানীয় চাষিরা। আগে চরের লবণাক্ত জমিতে শুধু আমন ধানের চাষ করা হতো। ধান চাষে কৃষকেরা তেমন লাভ না পাওয়ায় দিন দিন ঝুঁকেছেন বিকল্প সবজি চাষের দিকে। এরই ধারাবাহিকতায় চরের চাষিরা বেশ কয়েক প্রকার সবজির চাষ করেন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ঠিক থাকলে ও বাজারে দাম ভালো পেলে এ বছর লাভবান হতে পারবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় চাষিরা।

চরের সবজি চাষি মো. ইয়াছিন বলেন, এ মৌসুমে চরের জমিতে চিচিঙ্গা ও করলার চাষ করেছি। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে মোট ৪০ শতাংশ জমির মধ্যে এ বছর ৮ শতাংশ জমিতে ফসলের চাষ করি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পরব।

স্থানীয় সবজি চাষি তাহের সারেং বলেন, ‘লবণের কারণে এ চরে কোনো গাছ চেতে না (বৃদ্ধি পায় না)। কিন্তু এবার লবণাক্ত জমিতে টমেটো, মিষ্টি আলু ও ঢ্যাঁড়স চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে।’

এ বিষয়ে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার কলাতলী চরের শাখা ব্যবস্থাপক মো. মাহবুব জানান, তাঁরা ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে কলাতলী চরে কার্যক্রম শুরু করেন। এ চরে লবণক্তসহিষ্ণু জমিতে চাষাবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

সংস্থাটির কৃষিবিদ আনিছুর রহমান টিপু বলেন, কলাতলী চরে এ বছর থেকে পরীক্ষামূলক ইকলোজিকাল ফার্মিং (পরিবেশবান্ধব ফসল চাষ) প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের একটি প্রকল্পের সহযোগিতায় এবং গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।

গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন বলেন, ‘আমরা কলাতলীর চরে এখন পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করলেও ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের প্রকল্প গ্রহণের ইচ্ছা রয়েছে।’

মনপুরা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, কলাতলীর চরের চারদিকে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের লবণাক্ত পানি ভেতরে ঢুকে। ফলে আমনের মৌসুমে শুধু আমন ধান ছাড়া কোনো ফসল হয় না। ওই চরে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা কৃষকদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে, বেড়িবাঁধ নির্মিত হলে ওই চরে আরও ভালো ফলন হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত