Ajker Patrika

নদের মাটি লুট, ৪ জনের দণ্ড

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ১৯
নদের মাটি লুট, ৪ জনের দণ্ড

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় দেওয়ার অপরাধে ৪ জনের ১৫ দিন করে কারাদণ্ড হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত এ দণ্ডাদেশ ঘোষণা করেন।

গত রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে চারজনের বিরুদ্ধে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে আর এ রকম অন্যায় কাজ করবেন না, মর্মে মুচলেকা রেখে অন্যজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী কারাদণ্ড দেওয়া হয় ওই ৪ জনকে। তাঁরা হলেন বেল্লাল (২২), বুলবুল (৪২), সাইফুল (২২) ও রাহাত (১৯)। তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

এ সময় মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত দুটি ভেকু ও মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি কার্গো জব্দ করা হয়। পরে এগুলো স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়। একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নদের পাড়ের মাটি কাটছিল। এই মাটি পরে কার্গোতে করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হতো। বেশির ভাগ মাটি পাঠানো হতো উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে নদের পাড় ভাঙনের ঝুঁকিতে ছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু চক্রের সদস্যদের ভয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারছিলেন না। তবে মাটি কাটা বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় স্থানীয় বাসিন্দারা বেশ খুশি। তাঁরা প্রশাসনের কঠোরতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেছেন, অবৈধভাবে মাটি কাটা নির্মূল করতে প্রশাসনের নজরদারি রাখতে হবে। মাঝেমধ্যে এ ধরনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তাহলে কোনো সংঘবদ্ধ চক্র আর নদের মাটি কেটে ব্যবসা করার সাহস পাবে না। এলাকাবাসীকেও আর ভাঙনের আশঙ্কায় থাকতে হবে না।

কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রায় মাস খানেক ধরে প্রকাশ্যে ও গোপনে উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র আড়িয়াল খাঁ নদের তীরের মাটি কাটে সাবাড় করছিল। এ মাটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ইটভাটায় বিক্রি করে আসছিলেন চক্রের সদস্যরা। অবৈধভাবে মাটি কেটে নেওয়ায় ময়দানের হাট থেকে নমর হাট পর্যন্ত গ্রাম রক্ষা বাঁধটি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। লোকজন মাটি কাটা বন্ধের অনুরোধ জানালেও তা আমলে নেননি চক্রের সদস্যরা। এখন প্রশাসন হস্তক্ষেপ করেছে। এটি বেশ ভালো উদ্যোগ।

এদিকে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযান চালানোর সময় তাদের থানা-পুলিশ সহযোগিতা দেয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কারাদণ্ডের সাজা পাওয়া চারজনকে কড়া পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল সোমবার মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে আমরা এই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেছি। এ সময় চারজনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। নদের মাটি কোনোভাবেই কাটতে দেওয়া হবে না। নদ ও গ্রাম রক্ষা বাঁধ রক্ষায় প্রশাসন সোচ্চার আছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত