Ajker Patrika

গোখাদ্যের দাম বাড়ায় গরু বিক্রি খামারিদের

বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ মে ২০২২, ১৭: ০৯
Thumbnail image

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পঞ্চগড়ের বোদার গরুর খামারিরা ব্যস্ত হয়ে পড়লেও তাঁদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। দাম বাড়ায় ঠিকমতো গোখাদ্য কিনতে পারছেন না তাঁরা। অনেকে লোকসানের আশঙ্কায় গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, ২০ দিন আগে যেসব খাদ্য বিক্রি হতো এক দামে এখন ওইসব খাবার বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। ২০ দিন আগে চিকন ভুসির বস্তা ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকা। ১ হাজার ১০০ টাকার মোটা ভুসি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। খৈল ২ হাজার ৫০০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ টাকায়। একই অবস্থা ভুট্টার পাউডার ও চালের খুদে। ভুট্টা পাউডার ও খুদ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ২২ টাকায়, কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে।

বোদা পৌরসভার নগরকুমারী গ্রামের খামারি আবুল হোসেন বলেন, ‘দিন দিন যেভাবে গরুর খাবারের দাম বাড়ছে, তাতে গরুর খামার করা যাবে না। আমি নিজে রাইস মিল চালাই, ওই কারণে কিছুটা স্বস্তিতে আছি। কিন্তু ছোট খামারিদের অবস্থা খুব খারাপ।’

চন্দনবাড়ি লাঠুয়াপাড়া এলাকার খামারি হকিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর ৪ থেকে ৫টি গরু পালন করি কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য। কিন্তু এবার যেভাবে খাদ্যের দাম বাড়ছে, তাতে সামাল দিতে পারছি না। যে গরুটি গত ঈদে ৪৫ হাজার টাকায় পাওয়া যেত, এবার ঈদে সেটি দাম আসবে ৬০ হাজার টাকায়। ফলে মানুষ আর একাই কোরবানি দিতে চাইবে না।’

সাকোয়া ইউনিয়নের স্কুলশিক্ষক মানিক বলেন, ‘আমি প্রতিবছর কোরবানি ঈদের জন্য ৭ থেকে ৮টি গরু পালি। কিন্তু এবার গোখাদ্যের দামের কারণে তিনটি ইতিমধ্যে বিক্রি করেছি। আর যা আছে তা ঈদ আসতে আসতে কী হবে বলা মুশকিল। প্রতিদিন হু হু করে খাদ্যের দাম বাড়ছে। এই দাম না কমলে ঈদে মানুষ কম দামে গরু কিনতে পারবে না। আমরাও চাই ক্রেতাদের অল্পদামে ভালোমানের একটি গরু দিতে। কিন্তু দাম বেশি হলে আমাদের কিছু করার থাকে না।’

বোদা বাজারের গোখাদ্য ব্যবসায়ী কুরবান আলী ও দাইমুল ইসলাম জানান, হঠাৎ গরুর খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে আমরা। প্রতিদিন খাদ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হচ্ছে। ২০ দিন আগে যারা বস্তা ভরে খাদ্য কিনত তাঁরা এখন কিনছে ৫ থেকে ১০ কেজি করে।

বোদা উপজেলা খামারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজাহার আলী বলেন, ‘আমরা বড় অসহায়। প্রতিদিন গরুর খাবারের দাম বাড়ছে। এতে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি তেমনি ক্রেতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেকে খাবারের দাম বাড়ার কারণে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন।’

বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমরা খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। তাঁদের কৃত্রিম খাবার কমিয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক ঘাসসহ অন্য সহজলভ্য খাওয়ানোর জন্য বলছি। আর দাম না কমলে সবাই আসন্ন ঈদে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত