Ajker Patrika

নৌকার ভরাডুবির নেপথ্যে

রাশেদ কামাল, নড়াইল
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ২৫
নৌকার ভরাডুবির নেপথ্যে

তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ১২ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদের ১০টিতেই নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। আওয়ামী লীগের দুই নারী প্রার্থী ছাড়া বাকি ১০টি ইউপিতে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। নৌকার ভরাডুবি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, নির্বাচনী জয়ী-পরাজিত প্রার্থী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারা মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়া, স্থানীয় দলীয় কোন্দল, বিদ্রোহীদের বিএনপি ও জামায়াত জোটের সমর্থন পাওয়াসহ নেতা-কর্মীদের দুর্বল প্রচার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের ডুবিয়েছে। তাঁরা জানান, দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারা মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে দলীয় নেতা–কর্মীরাও দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলীয় নেতা–কর্মীরা জোটবদ্ধ হতে না পারায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কলাবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মাহামুদুল হাসান কায়েস পেয়েছেন চার হাজার ৬৮৮ ভোট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের তালুকদার রযিউল হাসান পেয়েছেন তিন হাজার ৬২২ ভোট। বাঐসোনা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম চুন্নু পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৬৫ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহ মো. ফোরকান মোল্যা পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৬ ভোট।

পহরডাঙ্গা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাহামুদ মল্লিক পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৮৮ ভোট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নির্মল কুমার বিশ্বাস পেয়েছেন তিন হাজার ৭৫৫ ভোট। জয়নগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আইউব হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৬৪ ভোট, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মুন্সি আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন দুই হাজার ৩৭ ভোট।

খাশিয়াল ইউনিয়নে সিপিবির স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএম বরকত উল্লাহ পেয়েছেন চার হাজার ৫২৮ ভোট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মোসা. হালিমা বেগম পেয়েছেন দুই হাজার ১৪৮ ভোট। সালামাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোল্যা মাহাবুর রহমান পেয়েছেন তিন হাজার ৭৩৩ ভোট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মো. শামীম আহম্মেদ পেয়েছেন তিন হাজার ৭৩১ ভোট।

ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মল্লিক মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ২ হাজার ৫০৬ ভোট, আওয়ামী লীগের মো. ফিরোজ মল্লিক পেয়েছেন এক হাজার ৫৬৪ ভোট। চাচুড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. মেলজার হোসেন ভূইয়া পেয়েছেন ৩ হাজার ২৯৬ ভোট, আওয়ামী লীগের সিরাজুল ইসলাম পেয়েছেন দুই হাজার ৪৬৩ ভোট।

পুরুলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৮৬ ভোট, আওয়ামী লীগের এস এম হারুনার রশীদ পেয়েছেন ৩ হাজার ৬২২ ভোট। বাবরা হাচলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৩১ ভোট, আওয়ামী লীগের মিয়া সরদার পেয়েছেন ১ হাজার ৭৪০ ভোট।

নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ ও নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোল্যা ইমদাদুল হক বলেছেন, ‘যাচাই বাছাই ছাড়া ভুল সুপারিশে অযোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়ার কারণেই প্রার্থীদের পরাজয় হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত