Ajker Patrika

থানচিতে ডায়রিয়ার ২ দিনে মৃত্যু চারজনের, ম্যালেরিয়াও ছড়াচ্ছে

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান ও মংবোয়াইচিং মারমা, থানচি
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১২: ০৫
Thumbnail image

বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের কয়েকটি পাড়ায় ডায়রিয়া ব‍্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুই দিনে শিশুসহ চারজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে একজন পাড়া কার্বারিও রয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ শিশুসহ দুজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, আক্রান্ত এলাকায় দুটি চিকিৎসক দল ও পর্যাপ্ত ওষুধ পাঠানো হয়েছে।

তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, গত কয়েক দিনের গরম এবং শুষ্ক মৌসুমে খাল, ঝিরি ও ছড়ার দূষিত পানি পান করায় লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

থানচি উপজেলার রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুইশৈ থোয়াই রনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত শুক্রবার থেকে তাঁর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি পাড়ায় ডায়রিয়া দেখা দেয়। শিশুসহ অন্তত ১৫ জন আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে একজন পাড়া কার্বারি, এক শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈ থোয়াই বলেন, গত দুই দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত‍্যুবরণকারীরা হলেন মেনতান পাড়া কার্বারি মেনতান ম্রো, নারেচা পাড়ার ম তৈ ম্রো-এর ছেলে লংঞী ম্রো, মিং চিং পাড়ার মেনরো ম্রো-এর ১২ বছরের ছেলে প্রেন ময় ম্রো ও য়ং নং পাড়ার ক্রায়ন ম্রো।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে খাল, ঝিরি ও ঝরনার দূষিত পানি পান করায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তাঁরা মারা গেছেন। আরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করে এ জনপ্রতিনিধি বলেন, ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে যথাযথ চিকিৎসা ও ওষুধ দুর্গম এলাকায় পাঠানো দরকার। ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তিনি বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করেছেন।

এদিকে থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ গতকাল রোববার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে থানচির দুর্গম রেমাক্রীর কয়েকটি পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপের কথা স্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে দুজনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে।

ডা. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে দুর্গম এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন খাল, ঝিরি এবং ছড়ার ময়লাযুক্ত দূষিত পানি পান করেন। এ জন্য এ সময়ে দুর্গম এলাকায় ডায়রিয়া দেখা দেয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় ইতিমধ্যে দুটি চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। তারা পর্যাপ্ত খাবার স‍্যালাইনসহ বিপুল ওষুধ নিয়ে আক্রান্ত এলাকায় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ওই এলাকায় ডায়রিয়ার পাশাপাশি ম‍্যালেরিয়াও দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে ম‍্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচজন থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে এর মধ‍্যে দুজন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। তিনজন এখনো হাসপাতালে।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন নীহার রঞ্জন নন্দী গতকাল দুপুরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, থানচির দুর্গম কয়েকটি পাড়ায় দূষিত পানি পান করায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে খাল ও ঝিরির পানি পান করায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

সিভিল সার্জন বলেন, চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। ইতিমধ্যে জেলার আলীকদমে ডায়রিয়ায় অনেকে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসাসেবার কারণে সেখানকার ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বান্দরবান সদরসহ অন‍্য উপজেলার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী নেই বলে সিভিল সার্জন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত