Ajker Patrika

রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে দুস্থ নারীদের কর্মসংস্থান

রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৩: ৫৫
Thumbnail image

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের বাসাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন সিরাজ মোল্লার স্ত্রী। পাঁচ বছর আগে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। কিছুক্ষণ পরে খবর আসে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহত হন সিরাজ। নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু টাকার অভাবে যথাযথ চিকিৎসা হয়নি তাঁর। ফলে বাঁচানোও সম্ভব হয়নি। স্বামী হারানো জানু বেগম তিন সন্তান নিয়ে পড়েন বিপদে।

সিরাজের ছিল না সঞ্চয়। ছোট্ট একটি ঘরে এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে বাস। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চলত তাঁদের সংসার। তবে হঠাৎই তাঁর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তিনি পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় কাজের সুযোগ পান।

সুবিধাভোগী জানু বেগম বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমার স্বামী মারা যান। তিন সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন কাটছিল। অভাবের সংসারে সন্তানদের মুখে দুবেলা খাবার তুলে দেওয়া ছিল কষ্টের। তার কিছুদিন পরই কাজ পাই পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচিতে। এতে বদলে যায় আমার ও আমার সন্তানদের জীবন।’

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার গ্রামগুলোতে পিছিয়ে পড়া দুস্থ নারীদের ভাগ্য ফিরছে পল্লী কর্মসংস্থান ও রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচিতে। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় নারীরা সুযোগ পাচ্ছেন কর্মসংস্থানের। এতে প্রভাব পড়ছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও।

জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় বর্তমানে পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ এর আওতায় প্রতিটি ইউনিয়নে বিধবা, স্বামী বিচ্ছিন্ন ও হতদরিদ্র ১০ নারীর সমন্বয়ে গঠিত দল গ্রামীণ রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছেন।

এলজিইডির তথ্যমতে, এসব নারী গ্রামীণ সড়কের শোল্ডার, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, ছোট ছোট সেতু ও কালভার্টের অ্যাপ্রোচ রাস্তা মেরামত করছেন। এ ছাড়া গ্রামীণ রাস্তার খানাখন্দ ভরাট, রাস্তার দুপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এ কাজে প্রত্যেককে দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরি দেওয়া হচ্ছে।

সুমি বাড়ৈ বলেন, ‘আমার স্বামী নেই। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে অভাব-অনটনে চলছিল সংসার। এখন রাস্তায় কাজ করে সচ্ছলতা এসেছে। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠাই।’

হামিদা বেগম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন রাস্তায় মাটি দেওয়ার কাজ করি। রাস্তার পাশের জঙ্গল পরিষ্কার করি। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল নির্বিঘ্ন হয়।’

পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির মাদারীপুর সুপারভাইজার লোকমান হোসেন বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এ কর্মসূচি গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি অসহায় দুস্থ নারীদের দুরবস্থা লাঘব হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত