Ajker Patrika

শহরে ২ ঘণ্টা, গ্রামে ৮ ঘণ্টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১৪: ৪৭
শহরে ২ ঘণ্টা, গ্রামে ৮ ঘণ্টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে দুই ঘণ্টা এবং পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন জেলার ৬টি উপজেলায় প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর এক ঘণ্টা করে মোট আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা, ছোট-বড় কারখানার উৎপাদন ও চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। হিমাগারে রাখা পণ্যের ক্ষতি হওয়ায় লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, চাহিদার চেয়ে অনেক কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর, আশুগঞ্জ, সরাইল, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ-সরবরাহ করে পিডিবির বিতরণ বিভাগ। তারা এই এলাকাগুলো দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। এক ভাগে রয়েছে শহরের দক্ষিণ দিকের পাঁচটি এলাকা এবং অন্য ভাগে রয়েছে উত্তর দিকের সাতটি এলাকা। জেলা শহরের দক্ষিণে আবাসিক গ্রাহক রয়েছে ৫১ হাজার এবং বাণিজ্যিক গ্রাহক রয়েছে পাঁচ হাজার। আর উত্তরে আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিলে গ্রাহক রয়েছে ৪০ হাজার। দক্ষিণে ২৫ মেগাওয়াট ও উত্তরে ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে দক্ষিণে ১৫ থেকে ১৮ মেগাওয়াট এবং উত্তরে ১৩ থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার বলেন, চাহিদার ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পরিবর্তে ১৫ থেকে ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাচ্ছেন তাঁরা। অথচ আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিলিয়ে তাঁদের গ্রাহকসংখ্যা ৫১ হাজার। চাহিদামতো বরাদ্দ পেলে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমে আসবে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে শহরের উত্তর দিকের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হান্নান বলেন, ‘যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন, ততটুকু বরাদ্দ পাচ্ছি না। আমাদের আওতায় সাতটি ফিডার আছে। সকালে ও বিকেলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে আরও বেশি লোডশেডিং হবে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সমিতির আওতায় রয়েছে সদর, নাসিরনগর, বিজয়নগর, আখাউড়া, নবীনগর ও কসবা। সংস্থাটি ২৪ ঘণ্টায় এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে সদর, বাহাদুরপুর, বিজয়নগর-২ (চম্পকনগর), আখাউড়া-১ (সদর), উড়শিউড়া (সুলতানপুর), নবীনগর-৩ (বিদ্যাকূট), নবীনগর-৪ (সাহারপাড়), আখাউড়া-২ (মোগড়া), কসবা-২ (তিনলাখ পীর), কসবা-১ (কুটি), নবীনগর-১ (নবীনগর সদর), নবীনগর-২ (থোল্লাকান্দি), নাসিরনগর, বিজয়নগর-১ (চান্দুরা), নবীনগর-৫ (জিনদপুর) উপকেন্দ্রে দুই ঘণ্টা পরপর এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আক্তার হোসেন বলেন, তাঁদের গ্রাহক আছে ৫ লাখ ১৫ হাজার। প্রতিদিন ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পাচ্ছেন গড়ে ৬০ থেকে ৭৫ মেগাওয়াট। মাঝেমধ্যে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আশুগঞ্জের কিছু ডিজেল প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়ায় হয়েছে। তা ছাড়া ১৩২-১৩৩ কেভি গ্রেড ও আশুগঞ্জের ২৩০-১৩২ গ্রেডের ট্রান্সফরমারটি ওভারলোডেড। তাই প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এটিও লোডশেডিংয়ের অন্যতম একটি কারণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত