Ajker Patrika

শয্যা ১৫, ভর্তি শতাধিক

শাহীন রহমান, পাবনা 
Thumbnail image

শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে পাবনায় বেড়েছে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ। পাবনার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর চাপ। হাসপাতালে রয়েছে মাত্র ১৫ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এর বিপরীতে ৯০ ভাগ রোগীকে অবস্থান করতে হচ্ছে হাসপাতালের বারান্দা ও করিডরে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে রোগী ও তাদের স্বজনেরা। অধিক রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সেবিকাদের। এদিকে জরুরি বিভাগেও প্রতিদিন গড়ে অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালে প্রতিদিন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৯০ থেকে ১০০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ। এক সপ্তাহ ধরে চলছে এমন পরিস্থিতি। হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে। শয্যা না পেয়ে ঠান্ডার মধ্যে হাসপাতালের বারান্দা ও করিডরে গাদাগাদি করে অবস্থান করছে রোগী ও তাদের স্বজনেরা।

পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা গ্রামের জাহিদা খাতুন এসেছেন তাঁর এক বছর বয়সী ছেলে জাবেরকে নিয়ে। তিনি বলেন, তাঁর বাচ্চার কয়েক দিন আগে ঠান্ডা লেগেছিল। তারপর ভালো হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বুধবার থেকে হঠাৎ করেই বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

আটঘরিয়া থেকে দুই বছর বয়সী শিশু মিমকে নিয়ে এসেছেন বাবা সুরুজ আলী। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বাচ্চার পাতলা পায়খানা ও সর্দি-জ্বর হয়। তিন দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন কিছুটা সুস্থ। শয্যা না পেয়ে বারান্দায় থাকতে হচ্ছে।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হেমায়েতপুর গ্রামের আজাহার আলী বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। খাবার স্যালাইন ঠিকমতো দেওয়া হলেও অন্যান্য স্যালাইন আমরা পাচ্ছি না। এই ছোট্ট রুমে এত মানুষ! রোগ ঠিক হওয়া তো দূরের কথা আরও বাড়ছে।’

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ নুরুন নাহার খাতুন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কলেরার স্যালাইন সরবরাহ ছিল না। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসক নেই। মেডিসিন বিভাগ ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক এই ওয়ার্ড দেখেন। এই ওয়ার্ডও পরিচালিত হয় মেডিসিন বিভাগ ও শিশু ওয়ার্ড থেকে। আমরা শুধু তাদের সেবা বা নিয়ম অনুসারে সব ওষুধ ও স্যালাইন দিয়ে থাকি। যদিও বর্তমানে কলেরা স্যালাইন সরবরাহ রয়েছে, তবে সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বেড অনুসারে ওষুধ সরবরাহ হয়ে থাকে। ১৫ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ড। তবে রোগী ভর্তি আছে ৯০-এর বেশি।’

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর বলেন, ‘ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেশি। শয্যার তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত রোগী এলেও আমরা কোনো রোগীকে ফিরিয়ে না দিয়ে ভর্তি করে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করানো হচ্ছে।

পাবনার সিভিল সার্জন মনিসর চৌধুরী বলেন, জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী আশঙ্কাজনকভাবে বাড়লেও সেখানে বাড়তি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত