শাওন মাহমুদ

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সবারই আসে।
নারীদের মধ্যে এমন অনুভূতির হার বেশিই অনুভূত হয়। এ ধরনের বিষণ্নতায় ক্লান্ত হই আমি, স্বস্তি পাওয়ার জন্য বই খুলে বসি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ নারী, ধর্ষিত নারী, শহীদ জায়া এবং শহীদ জননীদের কথা পড়তে থাকি। তাঁদের দৃঢ়তা, সাহস ও আত্মত্যাগের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠি আবারও। তাঁদের বীরত্বগাথা আমাকে আগামীর পথে আবারও জাগ্রত করে ভালো থাকার জন্য। প্রতিটি সাফল্যের মাঝে শোকের ছোঁয়া থাকে, চলতে থাকি আবারও।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যক্ষদর্শীদের লিখিত বিবরণে একাত্তরের নারীদের কথা উঠে এসেছে। গবেষক বা বিশ্লেষকের ভাষায়, মুক্তিযুদ্ধে লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়; বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ও বিভিন্ন আন্দোলনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ, গেরিলা যুদ্ধে নারী, যুদ্ধের ময়দানে চিকিৎসা ও সেবা ক্ষেত্রে নারী, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক হিসেবে নারীর ভূমিকা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মায়ের ভূমিকা, নারী গবেষক ও শব্দসৈনিক, যুদ্ধকালীন নারী নির্যাতনের বিচার-প্রক্রিয়ার কথা বারবার উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, এই সংগ্রাম পরিণতি অর্জন করেছে ধাপে ধাপে, যেখানে নারীর বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল।
১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে এ দেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি, অথচ যেখানে নারীর বলিষ্ঠ এবং দৃঢ় ভূমিকা রয়েছে।
ভাষা আন্দোলন থেকে উনসত্তরের গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে কিশোরী শিক্ষার্থী থেকে মায়েদের উজ্জ্বল অংশগ্রহণ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীরা পুরো দেশের মানুষের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলে কথা নয়, ধর্ম-বর্ণ শ্রেণির ঊর্ধ্বে উঠে নারীরা নিজের সাধ্যমতো লড়াই করেছেন। কেবল বাঙালি নয়, আদিবাসী নারীরাও এগিয়ে এসেছেন, নিজ স্বাধীনতার পথ গড়তে।
যুদ্ধের সময় যদিও বাংলাদেশ সরকারের নীতিতে নারীদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং প্রশাসনিক কাজের নেতৃত্বে নারীদের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সময় ছিল না। তারপরও এ ক্ষেত্রে নারীরা বসে ছিলেন না। তাঁরা সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন।
কলকাতায় রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা ও ‘বিএলএফ’ ক্যাম্পে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহ সব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা ও মিছিল হয়েছে। এ সময় তাঁরা জেলায়, শহরে শহরে, এলাকায় এলাকায় সংগঠিত হয়ে কুচকাওয়াজ ও অস্ত্র চালনার ট্রেনিংও শুরু করেন।
সে সময়ে মায়েরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। মায়া-মমতা ত্যাগ করে সন্তানকে লড়াইয়ের মাঠে পাঠিয়েছেন। এই ভূখণ্ডের নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে ত্যাগে, সাহসে কখনোই পিছিয়ে ছিলেন না। যাঁরা সরাসরি লড়াই করতে যেতে পারেননি, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন, তাঁদের বাসস্থান পরিষ্কার করেছেন, কাপড় ধুয়ে রেখেছেন, বিভিন্ন ক্যাম্পের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন, এমনকি অস্ত্রশিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন। আবার শত্রুদের বিষয়ে, খান সেনা ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন সময়-সুযোগে। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেওয়া, জমা রাখা অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও চিকিৎসা করা, তাঁদের জন্য ওষুধ, খাবার ও কাপড় সংগ্রহ করার মতো কঠিন কঠিন কোনো কাজেই নারীরা পিছিয়ে ছিলেন না। নিজে না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে খাবার রান্না করে পাঠিয়েছেন, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের।
আবার ক্যাম্পেও কাজ করেছেন।
নারীদের এই সক্রিয় কর্মকাণ্ডই ছিল তাঁদের মুক্তির লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে শহীদ জননী এবং শহীদ জায়ারা আরেকটি লড়াই করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। তাঁদের কথা আমরা খুব একটা স্মরণ করি না। তবে তাঁরা সেই লড়াই চালিয়ে না গেলে আজকের বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ায় বাধা আসত। শহীদ জননী এবং শহীদ জায়াদের দৃঢ়তা আর সাহসের কাছে মাথা নত করি বারবার। তাঁদের সন্তান বা জীবনসঙ্গী দেশের জন্য উৎসর্গ করে, একা জীবন পাড়ি দেওয়ার লড়াই আগামীর নারীদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের আলোকিত সময়ের, অন্যদিকে আঁধারের পথও পাড়ি দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাদের দোসর রাজাকার ও দালালেরা নারীদের ওপর নিষ্ঠুরতম অত্যাচার চালিয়েছিল পুরো নয় মাস ধরে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রায় দুই লাখের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হন। পাকিস্তানি সেনারা নারীদের তাদের বাংকারে তুলে নিয়ে যেত। দিনের পর দিন ওদের বিকৃত এবং নির্মম অত্যাচারে বহু নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল, যদিও পরে তাঁদের বেশির ভাগই গর্ভপাত করিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান। যুদ্ধ চলাকালে নির্যাতিত বন্দী নারীদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হত্যা করা হতো সেখানেই, আবার অনেকে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে গণহত্যার প্রচুর সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলেও নির্যাতিত নারীদের বিবরণ সেভাবে সংরক্ষিত হয়নি। সে সময়ে নারীদের পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকা সমাজকর্মী মালেকা খান বলছিলেন, ‘তখন কোনো তালিকা করা হয়নি। কারণ তাঁরা চেয়েছিলেন এই নির্যাতিত নারীদের পৃথকভাবে চিহ্নিত না করে দ্রুত তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাক।
যদিও তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে যা করা হয়েছিল, তা বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধে নারী নির্যাতনকে জেনোসাইড অন্তর্ভুক্ত করাতে নারী নির্যাতনের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় বদলায়, তাই বহু নির্যাতিত নারী প্রজন্মের সামনে নিজের বেদনার ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
বীরাঙ্গনারা ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করছেন। লজ্জায় নত নয়, মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিত নারীরা আমাদের রক্ত ঋণে পাওয়া স্বাধীনতার পতাকার লাল-সবুজের একাংশ হয়ে ইতিহাস আলোকিত করে বেঁচে থাকবেন।

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সবারই আসে।
নারীদের মধ্যে এমন অনুভূতির হার বেশিই অনুভূত হয়। এ ধরনের বিষণ্নতায় ক্লান্ত হই আমি, স্বস্তি পাওয়ার জন্য বই খুলে বসি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ নারী, ধর্ষিত নারী, শহীদ জায়া এবং শহীদ জননীদের কথা পড়তে থাকি। তাঁদের দৃঢ়তা, সাহস ও আত্মত্যাগের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠি আবারও। তাঁদের বীরত্বগাথা আমাকে আগামীর পথে আবারও জাগ্রত করে ভালো থাকার জন্য। প্রতিটি সাফল্যের মাঝে শোকের ছোঁয়া থাকে, চলতে থাকি আবারও।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যক্ষদর্শীদের লিখিত বিবরণে একাত্তরের নারীদের কথা উঠে এসেছে। গবেষক বা বিশ্লেষকের ভাষায়, মুক্তিযুদ্ধে লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়; বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ও বিভিন্ন আন্দোলনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ, গেরিলা যুদ্ধে নারী, যুদ্ধের ময়দানে চিকিৎসা ও সেবা ক্ষেত্রে নারী, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক হিসেবে নারীর ভূমিকা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মায়ের ভূমিকা, নারী গবেষক ও শব্দসৈনিক, যুদ্ধকালীন নারী নির্যাতনের বিচার-প্রক্রিয়ার কথা বারবার উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, এই সংগ্রাম পরিণতি অর্জন করেছে ধাপে ধাপে, যেখানে নারীর বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল।
১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে এ দেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি, অথচ যেখানে নারীর বলিষ্ঠ এবং দৃঢ় ভূমিকা রয়েছে।
ভাষা আন্দোলন থেকে উনসত্তরের গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে কিশোরী শিক্ষার্থী থেকে মায়েদের উজ্জ্বল অংশগ্রহণ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীরা পুরো দেশের মানুষের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলে কথা নয়, ধর্ম-বর্ণ শ্রেণির ঊর্ধ্বে উঠে নারীরা নিজের সাধ্যমতো লড়াই করেছেন। কেবল বাঙালি নয়, আদিবাসী নারীরাও এগিয়ে এসেছেন, নিজ স্বাধীনতার পথ গড়তে।
যুদ্ধের সময় যদিও বাংলাদেশ সরকারের নীতিতে নারীদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং প্রশাসনিক কাজের নেতৃত্বে নারীদের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সময় ছিল না। তারপরও এ ক্ষেত্রে নারীরা বসে ছিলেন না। তাঁরা সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন।
কলকাতায় রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা ও ‘বিএলএফ’ ক্যাম্পে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহ সব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা ও মিছিল হয়েছে। এ সময় তাঁরা জেলায়, শহরে শহরে, এলাকায় এলাকায় সংগঠিত হয়ে কুচকাওয়াজ ও অস্ত্র চালনার ট্রেনিংও শুরু করেন।
সে সময়ে মায়েরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। মায়া-মমতা ত্যাগ করে সন্তানকে লড়াইয়ের মাঠে পাঠিয়েছেন। এই ভূখণ্ডের নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে ত্যাগে, সাহসে কখনোই পিছিয়ে ছিলেন না। যাঁরা সরাসরি লড়াই করতে যেতে পারেননি, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন, তাঁদের বাসস্থান পরিষ্কার করেছেন, কাপড় ধুয়ে রেখেছেন, বিভিন্ন ক্যাম্পের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন, এমনকি অস্ত্রশিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন। আবার শত্রুদের বিষয়ে, খান সেনা ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন সময়-সুযোগে। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেওয়া, জমা রাখা অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও চিকিৎসা করা, তাঁদের জন্য ওষুধ, খাবার ও কাপড় সংগ্রহ করার মতো কঠিন কঠিন কোনো কাজেই নারীরা পিছিয়ে ছিলেন না। নিজে না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে খাবার রান্না করে পাঠিয়েছেন, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের।
আবার ক্যাম্পেও কাজ করেছেন।
নারীদের এই সক্রিয় কর্মকাণ্ডই ছিল তাঁদের মুক্তির লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে শহীদ জননী এবং শহীদ জায়ারা আরেকটি লড়াই করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। তাঁদের কথা আমরা খুব একটা স্মরণ করি না। তবে তাঁরা সেই লড়াই চালিয়ে না গেলে আজকের বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ায় বাধা আসত। শহীদ জননী এবং শহীদ জায়াদের দৃঢ়তা আর সাহসের কাছে মাথা নত করি বারবার। তাঁদের সন্তান বা জীবনসঙ্গী দেশের জন্য উৎসর্গ করে, একা জীবন পাড়ি দেওয়ার লড়াই আগামীর নারীদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের আলোকিত সময়ের, অন্যদিকে আঁধারের পথও পাড়ি দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাদের দোসর রাজাকার ও দালালেরা নারীদের ওপর নিষ্ঠুরতম অত্যাচার চালিয়েছিল পুরো নয় মাস ধরে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রায় দুই লাখের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হন। পাকিস্তানি সেনারা নারীদের তাদের বাংকারে তুলে নিয়ে যেত। দিনের পর দিন ওদের বিকৃত এবং নির্মম অত্যাচারে বহু নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল, যদিও পরে তাঁদের বেশির ভাগই গর্ভপাত করিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান। যুদ্ধ চলাকালে নির্যাতিত বন্দী নারীদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হত্যা করা হতো সেখানেই, আবার অনেকে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে গণহত্যার প্রচুর সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলেও নির্যাতিত নারীদের বিবরণ সেভাবে সংরক্ষিত হয়নি। সে সময়ে নারীদের পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকা সমাজকর্মী মালেকা খান বলছিলেন, ‘তখন কোনো তালিকা করা হয়নি। কারণ তাঁরা চেয়েছিলেন এই নির্যাতিত নারীদের পৃথকভাবে চিহ্নিত না করে দ্রুত তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাক।
যদিও তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে যা করা হয়েছিল, তা বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধে নারী নির্যাতনকে জেনোসাইড অন্তর্ভুক্ত করাতে নারী নির্যাতনের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় বদলায়, তাই বহু নির্যাতিত নারী প্রজন্মের সামনে নিজের বেদনার ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
বীরাঙ্গনারা ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করছেন। লজ্জায় নত নয়, মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিত নারীরা আমাদের রক্ত ঋণে পাওয়া স্বাধীনতার পতাকার লাল-সবুজের একাংশ হয়ে ইতিহাস আলোকিত করে বেঁচে থাকবেন।
শাওন মাহমুদ

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সবারই আসে।
নারীদের মধ্যে এমন অনুভূতির হার বেশিই অনুভূত হয়। এ ধরনের বিষণ্নতায় ক্লান্ত হই আমি, স্বস্তি পাওয়ার জন্য বই খুলে বসি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ নারী, ধর্ষিত নারী, শহীদ জায়া এবং শহীদ জননীদের কথা পড়তে থাকি। তাঁদের দৃঢ়তা, সাহস ও আত্মত্যাগের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠি আবারও। তাঁদের বীরত্বগাথা আমাকে আগামীর পথে আবারও জাগ্রত করে ভালো থাকার জন্য। প্রতিটি সাফল্যের মাঝে শোকের ছোঁয়া থাকে, চলতে থাকি আবারও।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যক্ষদর্শীদের লিখিত বিবরণে একাত্তরের নারীদের কথা উঠে এসেছে। গবেষক বা বিশ্লেষকের ভাষায়, মুক্তিযুদ্ধে লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়; বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ও বিভিন্ন আন্দোলনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ, গেরিলা যুদ্ধে নারী, যুদ্ধের ময়দানে চিকিৎসা ও সেবা ক্ষেত্রে নারী, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক হিসেবে নারীর ভূমিকা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মায়ের ভূমিকা, নারী গবেষক ও শব্দসৈনিক, যুদ্ধকালীন নারী নির্যাতনের বিচার-প্রক্রিয়ার কথা বারবার উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, এই সংগ্রাম পরিণতি অর্জন করেছে ধাপে ধাপে, যেখানে নারীর বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল।
১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে এ দেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি, অথচ যেখানে নারীর বলিষ্ঠ এবং দৃঢ় ভূমিকা রয়েছে।
ভাষা আন্দোলন থেকে উনসত্তরের গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে কিশোরী শিক্ষার্থী থেকে মায়েদের উজ্জ্বল অংশগ্রহণ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীরা পুরো দেশের মানুষের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলে কথা নয়, ধর্ম-বর্ণ শ্রেণির ঊর্ধ্বে উঠে নারীরা নিজের সাধ্যমতো লড়াই করেছেন। কেবল বাঙালি নয়, আদিবাসী নারীরাও এগিয়ে এসেছেন, নিজ স্বাধীনতার পথ গড়তে।
যুদ্ধের সময় যদিও বাংলাদেশ সরকারের নীতিতে নারীদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং প্রশাসনিক কাজের নেতৃত্বে নারীদের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সময় ছিল না। তারপরও এ ক্ষেত্রে নারীরা বসে ছিলেন না। তাঁরা সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন।
কলকাতায় রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা ও ‘বিএলএফ’ ক্যাম্পে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহ সব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা ও মিছিল হয়েছে। এ সময় তাঁরা জেলায়, শহরে শহরে, এলাকায় এলাকায় সংগঠিত হয়ে কুচকাওয়াজ ও অস্ত্র চালনার ট্রেনিংও শুরু করেন।
সে সময়ে মায়েরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। মায়া-মমতা ত্যাগ করে সন্তানকে লড়াইয়ের মাঠে পাঠিয়েছেন। এই ভূখণ্ডের নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে ত্যাগে, সাহসে কখনোই পিছিয়ে ছিলেন না। যাঁরা সরাসরি লড়াই করতে যেতে পারেননি, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন, তাঁদের বাসস্থান পরিষ্কার করেছেন, কাপড় ধুয়ে রেখেছেন, বিভিন্ন ক্যাম্পের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন, এমনকি অস্ত্রশিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন। আবার শত্রুদের বিষয়ে, খান সেনা ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন সময়-সুযোগে। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেওয়া, জমা রাখা অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও চিকিৎসা করা, তাঁদের জন্য ওষুধ, খাবার ও কাপড় সংগ্রহ করার মতো কঠিন কঠিন কোনো কাজেই নারীরা পিছিয়ে ছিলেন না। নিজে না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে খাবার রান্না করে পাঠিয়েছেন, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের।
আবার ক্যাম্পেও কাজ করেছেন।
নারীদের এই সক্রিয় কর্মকাণ্ডই ছিল তাঁদের মুক্তির লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে শহীদ জননী এবং শহীদ জায়ারা আরেকটি লড়াই করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। তাঁদের কথা আমরা খুব একটা স্মরণ করি না। তবে তাঁরা সেই লড়াই চালিয়ে না গেলে আজকের বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ায় বাধা আসত। শহীদ জননী এবং শহীদ জায়াদের দৃঢ়তা আর সাহসের কাছে মাথা নত করি বারবার। তাঁদের সন্তান বা জীবনসঙ্গী দেশের জন্য উৎসর্গ করে, একা জীবন পাড়ি দেওয়ার লড়াই আগামীর নারীদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের আলোকিত সময়ের, অন্যদিকে আঁধারের পথও পাড়ি দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাদের দোসর রাজাকার ও দালালেরা নারীদের ওপর নিষ্ঠুরতম অত্যাচার চালিয়েছিল পুরো নয় মাস ধরে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রায় দুই লাখের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হন। পাকিস্তানি সেনারা নারীদের তাদের বাংকারে তুলে নিয়ে যেত। দিনের পর দিন ওদের বিকৃত এবং নির্মম অত্যাচারে বহু নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল, যদিও পরে তাঁদের বেশির ভাগই গর্ভপাত করিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান। যুদ্ধ চলাকালে নির্যাতিত বন্দী নারীদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হত্যা করা হতো সেখানেই, আবার অনেকে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে গণহত্যার প্রচুর সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলেও নির্যাতিত নারীদের বিবরণ সেভাবে সংরক্ষিত হয়নি। সে সময়ে নারীদের পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকা সমাজকর্মী মালেকা খান বলছিলেন, ‘তখন কোনো তালিকা করা হয়নি। কারণ তাঁরা চেয়েছিলেন এই নির্যাতিত নারীদের পৃথকভাবে চিহ্নিত না করে দ্রুত তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাক।
যদিও তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে যা করা হয়েছিল, তা বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধে নারী নির্যাতনকে জেনোসাইড অন্তর্ভুক্ত করাতে নারী নির্যাতনের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় বদলায়, তাই বহু নির্যাতিত নারী প্রজন্মের সামনে নিজের বেদনার ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
বীরাঙ্গনারা ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করছেন। লজ্জায় নত নয়, মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিত নারীরা আমাদের রক্ত ঋণে পাওয়া স্বাধীনতার পতাকার লাল-সবুজের একাংশ হয়ে ইতিহাস আলোকিত করে বেঁচে থাকবেন।

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সবারই আসে।
নারীদের মধ্যে এমন অনুভূতির হার বেশিই অনুভূত হয়। এ ধরনের বিষণ্নতায় ক্লান্ত হই আমি, স্বস্তি পাওয়ার জন্য বই খুলে বসি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ নারী, ধর্ষিত নারী, শহীদ জায়া এবং শহীদ জননীদের কথা পড়তে থাকি। তাঁদের দৃঢ়তা, সাহস ও আত্মত্যাগের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠি আবারও। তাঁদের বীরত্বগাথা আমাকে আগামীর পথে আবারও জাগ্রত করে ভালো থাকার জন্য। প্রতিটি সাফল্যের মাঝে শোকের ছোঁয়া থাকে, চলতে থাকি আবারও।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রত্যক্ষদর্শীদের লিখিত বিবরণে একাত্তরের নারীদের কথা উঠে এসেছে। গবেষক বা বিশ্লেষকের ভাষায়, মুক্তিযুদ্ধে লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়; বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ও বিভিন্ন আন্দোলনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ, গেরিলা যুদ্ধে নারী, যুদ্ধের ময়দানে চিকিৎসা ও সেবা ক্ষেত্রে নারী, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক হিসেবে নারীর ভূমিকা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মায়ের ভূমিকা, নারী গবেষক ও শব্দসৈনিক, যুদ্ধকালীন নারী নির্যাতনের বিচার-প্রক্রিয়ার কথা বারবার উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, এই সংগ্রাম পরিণতি অর্জন করেছে ধাপে ধাপে, যেখানে নারীর বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল।
১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে এ দেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি, অথচ যেখানে নারীর বলিষ্ঠ এবং দৃঢ় ভূমিকা রয়েছে।
ভাষা আন্দোলন থেকে উনসত্তরের গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে কিশোরী শিক্ষার্থী থেকে মায়েদের উজ্জ্বল অংশগ্রহণ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীরা পুরো দেশের মানুষের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলে কথা নয়, ধর্ম-বর্ণ শ্রেণির ঊর্ধ্বে উঠে নারীরা নিজের সাধ্যমতো লড়াই করেছেন। কেবল বাঙালি নয়, আদিবাসী নারীরাও এগিয়ে এসেছেন, নিজ স্বাধীনতার পথ গড়তে।
যুদ্ধের সময় যদিও বাংলাদেশ সরকারের নীতিতে নারীদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া, গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা এবং প্রশাসনিক কাজের নেতৃত্বে নারীদের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সময় ছিল না। তারপরও এ ক্ষেত্রে নারীরা বসে ছিলেন না। তাঁরা সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন।
কলকাতায় রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা ও ‘বিএলএফ’ ক্যাম্পে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহ সব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা ও মিছিল হয়েছে। এ সময় তাঁরা জেলায়, শহরে শহরে, এলাকায় এলাকায় সংগঠিত হয়ে কুচকাওয়াজ ও অস্ত্র চালনার ট্রেনিংও শুরু করেন।
সে সময়ে মায়েরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। মায়া-মমতা ত্যাগ করে সন্তানকে লড়াইয়ের মাঠে পাঠিয়েছেন। এই ভূখণ্ডের নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে ত্যাগে, সাহসে কখনোই পিছিয়ে ছিলেন না। যাঁরা সরাসরি লড়াই করতে যেতে পারেননি, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন, তাঁদের বাসস্থান পরিষ্কার করেছেন, কাপড় ধুয়ে রেখেছেন, বিভিন্ন ক্যাম্পের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন, এমনকি অস্ত্রশিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন। আবার শত্রুদের বিষয়ে, খান সেনা ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন সময়-সুযোগে। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেওয়া, জমা রাখা অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও চিকিৎসা করা, তাঁদের জন্য ওষুধ, খাবার ও কাপড় সংগ্রহ করার মতো কঠিন কঠিন কোনো কাজেই নারীরা পিছিয়ে ছিলেন না। নিজে না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে খাবার রান্না করে পাঠিয়েছেন, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারের হাত থেকে রক্ষা করতে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের।
আবার ক্যাম্পেও কাজ করেছেন।
নারীদের এই সক্রিয় কর্মকাণ্ডই ছিল তাঁদের মুক্তির লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে শহীদ জননী এবং শহীদ জায়ারা আরেকটি লড়াই করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। তাঁদের কথা আমরা খুব একটা স্মরণ করি না। তবে তাঁরা সেই লড়াই চালিয়ে না গেলে আজকের বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ায় বাধা আসত। শহীদ জননী এবং শহীদ জায়াদের দৃঢ়তা আর সাহসের কাছে মাথা নত করি বারবার। তাঁদের সন্তান বা জীবনসঙ্গী দেশের জন্য উৎসর্গ করে, একা জীবন পাড়ি দেওয়ার লড়াই আগামীর নারীদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের আলোকিত সময়ের, অন্যদিকে আঁধারের পথও পাড়ি দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাদের দোসর রাজাকার ও দালালেরা নারীদের ওপর নিষ্ঠুরতম অত্যাচার চালিয়েছিল পুরো নয় মাস ধরে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রায় দুই লাখের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হন। পাকিস্তানি সেনারা নারীদের তাদের বাংকারে তুলে নিয়ে যেত। দিনের পর দিন ওদের বিকৃত এবং নির্মম অত্যাচারে বহু নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল, যদিও পরে তাঁদের বেশির ভাগই গর্ভপাত করিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান। যুদ্ধ চলাকালে নির্যাতিত বন্দী নারীদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হত্যা করা হতো সেখানেই, আবার অনেকে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে গণহত্যার প্রচুর সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলেও নির্যাতিত নারীদের বিবরণ সেভাবে সংরক্ষিত হয়নি। সে সময়ে নারীদের পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকা সমাজকর্মী মালেকা খান বলছিলেন, ‘তখন কোনো তালিকা করা হয়নি। কারণ তাঁরা চেয়েছিলেন এই নির্যাতিত নারীদের পৃথকভাবে চিহ্নিত না করে দ্রুত তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাক।
যদিও তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে যা করা হয়েছিল, তা বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধে নারী নির্যাতনকে জেনোসাইড অন্তর্ভুক্ত করাতে নারী নির্যাতনের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় বদলায়, তাই বহু নির্যাতিত নারী প্রজন্মের সামনে নিজের বেদনার ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
বীরাঙ্গনারা ধীরে ধীরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করছেন। লজ্জায় নত নয়, মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিত নারীরা আমাদের রক্ত ঋণে পাওয়া স্বাধীনতার পতাকার লাল-সবুজের একাংশ হয়ে ইতিহাস আলোকিত করে বেঁচে থাকবেন।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সব
১৪ ডিসেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সব
১৪ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সব
১৪ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

হয়তোবা কখনো আমাদের মনে হতেই পারে যে চারপাশে যা হচ্ছে বা ঘটছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। হয়তোবা যাপিত জীবনে কারও কাজে আসছি না। হয়তোবা নিজের গুণ যা আছে, তা দিয়ে কাউকে খুশি করা যাচ্ছে না। হয়তোবা আমাদের যা করার ইচ্ছে জাগে, তার কোনোটাই সঠিক পথ খুঁজে পায় না। হয়তোবা আমরা কোনো কাজেই আসছি না—এমন সময় সব
১৪ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫