Ajker Patrika

আর্জেন্টিনার এশিয়াই কাঁটা, এশিয়াই আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আর্জেন্টিনার এশিয়াই কাঁটা, এশিয়াই আশা

অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচ অথচ তাদের ফুটবলারদের মাথায় কিনা ঢুকে আছে একটি নাম, ‘লিওনেল মেসি’! অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ মাধ্যমের খবর, আর্জেন্টিনার মহাতারকাকে কীভাবে ঠেকানো যায়, সেটি নিয়ে না ভেবে মেসির বিপক্ষে খেলতে পারার আনন্দে বুঁদ হয়ে আছেন অজি ফুটবলাররা। শিষ্যদের ‘মেসি’ ভূত ছাড়াতে তাই সকারু কোচ গ্রাহাম আর্নল্ডকে বোঝাতে হচ্ছে নকআউটের মাহাত্ম্য, টানতে হচ্ছে পেশাদারির উদাহরণ।

বিশ্বকাপ ইতিহাসে এর আগে একবারই দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালির কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা। ইতালি সেবার বিশ্বসেরা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেই দলে মেসির মতো ‘কেউ’ ছিলেন না। আগের পাঁচ বিশ্বকাপে কখনো আর্জেন্টিনাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়নি অস্ট্রেলিয়া। মেসির মেসি হয়ে ওঠার পর সকারুদের কেউই খেলেনি আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। আর্নল্ডের দল যখন আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হচ্ছে, যেটা কিনা মেসির শেষ বিশ্বকাপ। ম্যাচ শেষ হলে ‘এলএম টেনে’র জার্সিটা কে পাবেন, সেটা নিয়ে একটা ‘প্রতিযোগিতা’ অস্ট্রেলিয়া শিবিরে। আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারলে যে ইতিহাস হবে, প্রথমবারের মতো খেলা হবে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেই বিষয়টা খেলোয়াড়দের গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া আর নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার আহ্বান অস্ট্রেলিয়া কোচের।

বরখাস্ত হতে হতে চাকরি বাঁচানো, এরপর দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে তুলে নায়ক বনে যাওয়া; আর্নল্ড ফুটবলে দেখে ফেলেছেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ—দুটোই। দলের মতো এখন তার সামনেও কিংবদন্তি হওয়ার হাতছানি। কোচের সেই আকুতি কি অনুধাবন করতে পেরেছেন অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলাররা? অজি ডিফেন্ডার মিলোশ দেগেনেক অবশ্য আশ্বস্ত করছেন, নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট সচেতন, ‘আমি মেসিভক্ত। বল পায়ে তিনি আমার দেখা সবচেয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তবে আমার মনে হয় না, তাঁর বিপক্ষে খেলাটা সম্মানের। কারণ, মেসি আমাদের মতোই মানুষ। বরং বিশ্বকাপে শেষ ষোলো রাউন্ডে খেলাটাই সম্মানের।’

আর্নল্ডের অবশ্য আর্জেন্টিনাকে হারানোর অভিজ্ঞতা আছে। গত বছর টোকিও অলিম্পিকে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল সকারুরা। মেসিদের হারানোর মতো যেমন দলের দরকার, সেটা তাঁর আছে বলেই প্রতিপক্ষকে মনে করিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়া কোচ, ‘লড়াইটা স্রেফ মানসিকতা ও তাড়নার। পুরো বিশ্বকে দেখিয়েছি, তা হলো আমরা একটি দল।’ আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে সেমিতে ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলতে চান বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

পরিসংখ্যান আর ঐতিহ্যে হয়তো আর্জেন্টিনার কাছে পাত্তা পাবে না অস্ট্রেলিয়া।

মেসিদের জন্য যদি শঙ্কার কিছু থাকে, সেটা হলো এশিয়া। এশিয়াতেই তাঁরা যেমন আশা পাচ্ছেন বড় কিছুর, এশিয়াতে কাঁটাও কম নয়। রোমাঞ্চের কাতার বিশ্বকাপে এশিয়ান দেশগুলো যেভাবে নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে, সেই অভিজ্ঞতা তো সবার আগে হয়েছে আর্জেন্টিনারই। সৌদি আরবের কাছে এমন এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা, একটু এদিক-সেদিক হলেই বিদায় ঘটে যেত মেসিদের। সৌদি ধাক্কা কাটিয়ে নকআউটে প্রতিপক্ষ আবারও এশিয়ার আরেক দেশ অস্ট্রেলিয়া।

জাপান যদি জার্মানি-স্পেনকে হারিয়ে দিতে পারে, অস্ট্রেলিয়া আর্জেন্টিনাকে কেন নয়? তবে এটাও তো সত্যি, ফ্রান্সের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে অস্ট্রেলিয়াই বরং সহজ আর্জেন্টিনার জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে লিওনেল স্কালোনিকে এ প্রশ্নই করে বসলেন সৌদির এক সাংবাদিক। জবাবে সৌদি ম্যাচের ভুল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হবে না বলে জানিয়ে দিলেন আর্জেন্টিনা কোচ, ‘এইটা নকআউট। গ্রুপ পর্ব নয়। অস্ট্রেলিয়া খুব ভালো দল। আর ভুল করা চলবে না।’

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি দ্রুতগতির ফুটবল। ফুটবলাররা তুলনামূলক লম্বা আর্জেন্টিনার চেয়ে। প্রতি আক্রমণে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ ফ্রান্সকে চমকে দিয়েছিল শুরুতেই গোল করে। অস্ট্রেলিয়ার এই দিকটাই আর্জেন্টিনাকে বিপদে ফেলতে পারে। আজ আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে আনহেল ডি মারিয়ার খেলা নিয়ে আছে সংশয়।

কার্ড দেখেছেন, নেই ছন্দেও। ডি মারিয়া খেলবেন কি না, সেটা গতকাল পরিষ্কার করেননি আর্জেন্টিনা কোচ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না, সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়ার সুযোগ

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

মেয়ের কফিনে বাবার চুমু

মেয়েকে আনতে স্কুলে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন গাংনীর রজনী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত