Ajker Patrika

মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব কি বড় মোড়ল হয়ে উঠছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব কি বড় মোড়ল হয়ে উঠছে

সংঘাতে জর্জরিত সুদান থেকে গত শনিবার ইরানের নাগরিকেরা বিমানযোগে সৌদি আরবে পালিয়ে আসছিলেন। তখন সৌদি আরবের সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা তাঁদের উষ্ণ অভিবাদন জানান।

সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলের ওই কর্মকর্তার নাম মেজর জেনারেল আহমেদ আল-দাবাইস। তিনি পালিয়ে আসা ইরানিদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটি আপনাদের দেশ।’ এ সময় দেশটিতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান জারাঙ্গারের হাত ধরে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার যদি সৌদিতে কিছুর প্রয়োজন হয়, আপনাকে স্বাগতম। ইরান ও সৌদি ভাই ভাই।’

সুদান থেকে ওই দিন অন্তত ৬৫ জন ইরানের নাগরিক পালিয়ে আসেন। লোহিত সাগরের তীরবর্তী সৌদি আরবের শহর জেদ্দায় তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করে সৌদি সেনাবাহিনী। আর এই ছবি ইরান ও সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, রাজা ও যুবরাজের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়ে মূলত ইরানিদের বন্ধুত্বপূর্ণভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে।

এ ধরনের চিত্রগুলো কয়েক মাস আগেও অকল্পনীয় ছিল। কারণ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরেই ইরান ও সৌদি আরব একাধিক ছায়াযুদ্ধে লড়ছিল। তাদের সম্পর্কটাও ছিল তিক্ত এবং আঞ্চলিক শত্রুর। তবে চীনের মধ্যস্থতায় দেশ দুটি গত মার্চ মাসে ওই তিক্ত সম্পর্কের অবসান ঘটায়। শিগগিরই আবার দূতাবাস খোলার আশা করছে দুই দেশ।

সৌদি বিশ্লেষক ও লেখক আলী শিহাবি সিএনএনকে বলেন, ‘এটি ইরানিদের কাছে একটা ভালো ভাবমূর্তি গড়ে তুলবে এবং তারাও এর ভালো প্রতিদান দেবে। 
সৌদি আরব এখন তার বৈশ্বিক ভাবমূর্তি পুনর্গঠন এবং পূর্বশত্রুদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের এক মিশনে রয়েছে।

সাম্প্রতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টাগুলো একটি ধারাবাহিক পদক্ষেপের অংশ, যা রিয়াদকে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠার ভূমিকায় অবতীর্ণ করছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সংঘাতমূলক ও হস্তক্ষেপবাদী পররাষ্ট্রনীতি থেকে সৌদি আরবের বেরিয়ে আসার একটি তাৎপর্যপূর্ণ কৌশল।

‘এখানে এক নতুন পররাষ্ট্রনীতি চলছে’ উল্লেখ করে ব্রাসেলসভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র উপসাগরীয় বিশ্লেষক আনা জ্যাকবস সিএনএনকে বলেন, মধ্যস্থতা এবং কূটনৈতিক প্রোফাইল বাড়ানোর মাধ্যমে সৌদি আরব নিজেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে আরও বেশি তুলে ধরতে চাইছে।

সৌদি আরবের এই সর্বসাম্প্রতিক কূটনীতি এমন একসময়ে সামনে এসেছে, যখন সুদানে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে রাষ্ট্রীয় দুই বাহিনী রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়েছে। 
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ব্যাপকভাবে সম্প্রচারিত চিত্রগুলোতে সৌদি আরবের বাহিনীকে পোর্ট সুদান থেকে লোহিত সাগর পেরিয়ে ১২ ঘণ্টার যাত্রায় উপকূলীয় শহর জেদ্দায় আসা হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এ সময় পুরুষ, নারী এবং শিশুদের হাতে সৌদি পতাকা দেওয়া হয়। কারণ তাদের আগমন ক্যামেরায় ধারণ করা হয় এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে তা নথিভুক্ত করা হয়।

গত সোমবার সৌদি আরব বলেছে, সুদান থেকে ১০০টির বেশি দেশের ৫ হাজারের বেশি লোককে স্থানান্তর করেছে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত