Ajker Patrika

শ্রমিক না মেলায় ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তা

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১৭: ৩৮
Thumbnail image

বেশি মজুরি দিয়েও ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের বোরোচাষিরা। ভালো ফলন হওয়ার পরও পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫০ মেট্রিক টন।

জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ জমির ধান পাকতে শুরু করেছে। ঝোড়ো হাওয়া আর প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হওয়ায় অনেক স্থানেই ধান গাছ হেলে পড়েছে জমিতে। কোথাও বা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অবস্থা বিবেচনায় অনেকেই তড়িঘড়ি করে ধান কেটে নিয়েছেন। আবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকেই ধান কাটতে পারছেন না। ইতিমধ্যে যাঁরা ধান কেটেছেন তাঁরা মাড়াই ও শুকাতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।

এদিকে, ঝড়-বৃষ্টির কারণে সবাই দ্রুত ধান কেটে নেওয়ার চেষ্টা করায় কৃষি শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ সুযোগে শ্রমিকেরা তাঁদের মজুরি অবিশ্বাস্য হারে বাড়িয়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ মজুরি দিয়েও অনেক সময় শ্রমিক মিলছে না। নিরুপায় হয়ে বাড়তি দাম দিয়েই নিতে হচ্ছে শ্রমিক। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ায় লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

জেলার সদর উপজেলার মোহনপুর এলাকার কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘এবার আট বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। পাঁচ বিঘার ধান কেটেছি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে, বাকি জমির ধান কাটতে পারি নাই। ঝড় বৃষ্টিতে ধান মাটিতে পড়ে গেছে, শ্রমিক পাওয়াই যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে ১০ হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে পড়া ধান কাটতে শ্রমিক নিতে হয়েছে। শ্রমিককেই এত টাকা দিলে আমরা খাব কী?’

চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষক মনির জানান, তাঁর পাঁচ বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পানি শুকালে ধান কাটতে হবে শ্রমিক দিয়ে। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আবার সময় মতো ধান কাটতে না পারলে জমিতে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।

বিরল উপজেলার কৃষক মতিউর রহমান বলেন, গত কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে অনেক খেতে ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। এই ধান কাটতে বেশি খরচ হচ্ছে। এতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) খালেদুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টিতে ধানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তেমন একটা নেই। কিছু কিছু জায়গায় ধানের জমিতে পানি জমে গেছে। চাষিদের খেতের পানি বের করে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি তেমন একটা ক্ষতি হবে না।’

এদিকে, জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আগামী ৫ / ৭ দিন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। কালবৈশাখীর সম্ভাবনা নেই, তবে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাস বইতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত