জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
কেউ শুনলেই অবাক হয়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছাড়াই বাস করতেন তাঁর নিজস্ব বাসভবনে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের বাড়িটিতে যে নিরাপত্তাকর্মীরা ছিলেন, তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোনো সশস্ত্র ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার সাধ্য ছিল না।
সে সময় রাষ্ট্রপতি নিজের বেসরকারি বাসভবন থেকে গণভবনে আসতেন সকাল ৯টায়। একটি ছোট সুসজ্জিত হাউস গার্ড দল তাঁকে অভ্যর্থনা জানাত। গণভবনের পেছনের প্রশস্ত দরজা দিয়ে তিনি দোতলায় যেতেন। সে সময় প্রায় প্রতিদিন সকালে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন পররাষ্ট্রসচিব ফখরুদ্দীন আহমদ। এরপর আসতেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিআইজি।
১৯৭৫ সালের ৭ আগস্ট সূর্যোদয় হয়েছিল সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে। সেই দিন সূর্যাস্ত হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে। সেদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছিলেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এটিনি সতার। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নূরুল ইসলাম চৌধুরী, বেলা ১১টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, দুপুর ১২টায় বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ভারতের হাইকমিশনার সমর সেন, সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ কমিটির সদস্য আবদুল আউয়াল এবং সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এমপি কাজী মোজাম্মেল হক গিয়েছিলেন গণভবনে।
৮ আগস্ট ছিল শুক্রবার। সেদিন বঙ্গবন্ধুর দিনের কর্মসূচি ছিল এ রকম: সকাল ১০টায় প্রথম ও দ্বিতীয় কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান দুজন এসেছিলেন। এরপর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এসেছিলেন রেল প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম মঞ্জুর। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বন্যানিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ও বিদ্যুৎমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত। আর বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ছিল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেদিন শপথ নিয়েছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। তিনি বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার শেষ বন্দর, নৌ ও জাহাজ চলাচলমন্ত্রী ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিদিনের রুটিনের কথা বলা যাক। এই সাক্ষাৎকারগুলোর মাঝখানে বেলা দেড়টার সময় বঙ্গবন্ধু গণভবন কমপ্লেক্সের বাসভবনে গিয়ে স্নান সেরে দুপুরের খাবার খেতেন। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম। খাবার আসত ৩২ নম্বর থেকে। বেগম মুজিব রান্না করে পাঠাতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় খাবার ছিল কই মাছ।
বিশ্রামের সময় বঙ্গবন্ধু গণভবনের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতেন। বিকেল ৪টায় খানিক হাঁটতেন। লেকের ধারে যে ঘাট ছিল, সে ঘাটের পাশে রাখা কালো চেয়ারগুলোর একটিতে বসতেন। লেকের মাছদের নিজ হাতে খাবার দিতেন। এ সময় অনেক রাজনীতিবিদ অনির্ধারিত সাক্ষাতের জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে আসতেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ও পানিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতই বেশি আসতেন।
মূলত রাত ৯টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু থাকতেন গণভবনে। সোমবার অবশ্য তিনি রাত ৮টায় গণভবন ত্যাগ করতেন। সে সময় দেশের একমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভিতে সোমবার রাত ৯টার দিকে দেখানো হতো বাংলা ছায়াছবি। গণভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন সেই সিনেমা দেখার সুযোগ পান, সে কারণেই সেদিন এক ঘণ্টা আগে তিনি গণভবন ত্যাগ করতেন।
বিমানের ট্রান্সপোর্ট পুল থেকে সংগ্রহ করা একটি ছোট নীল গাড়িতে করে বঙ্গবন্ধু চলাচল করতেন। জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ছিল এই ব্যবস্থা।
এ রকম সাদামাটা এক জীবনযাপন করছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি একবারের জন্যও বিশ্বাস করেননি, তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সূত্র: মনোয়ারুল ইসলামের নিবন্ধ, ‘কালের সীমা ছাড়িয়ে’।
কেউ শুনলেই অবাক হয়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছাড়াই বাস করতেন তাঁর নিজস্ব বাসভবনে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের বাড়িটিতে যে নিরাপত্তাকর্মীরা ছিলেন, তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোনো সশস্ত্র ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার সাধ্য ছিল না।
সে সময় রাষ্ট্রপতি নিজের বেসরকারি বাসভবন থেকে গণভবনে আসতেন সকাল ৯টায়। একটি ছোট সুসজ্জিত হাউস গার্ড দল তাঁকে অভ্যর্থনা জানাত। গণভবনের পেছনের প্রশস্ত দরজা দিয়ে তিনি দোতলায় যেতেন। সে সময় প্রায় প্রতিদিন সকালে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন পররাষ্ট্রসচিব ফখরুদ্দীন আহমদ। এরপর আসতেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিআইজি।
১৯৭৫ সালের ৭ আগস্ট সূর্যোদয় হয়েছিল সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে। সেই দিন সূর্যাস্ত হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে। সেদিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছিলেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এটিনি সতার। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নূরুল ইসলাম চৌধুরী, বেলা ১১টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন, দুপুর ১২টায় বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ভারতের হাইকমিশনার সমর সেন, সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ কমিটির সদস্য আবদুল আউয়াল এবং সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এমপি কাজী মোজাম্মেল হক গিয়েছিলেন গণভবনে।
৮ আগস্ট ছিল শুক্রবার। সেদিন বঙ্গবন্ধুর দিনের কর্মসূচি ছিল এ রকম: সকাল ১০টায় প্রথম ও দ্বিতীয় কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান দুজন এসেছিলেন। এরপর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এসেছিলেন রেল প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম মঞ্জুর। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বন্যানিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ও বিদ্যুৎমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত। আর বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ছিল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেদিন শপথ নিয়েছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। তিনি বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার শেষ বন্দর, নৌ ও জাহাজ চলাচলমন্ত্রী ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিদিনের রুটিনের কথা বলা যাক। এই সাক্ষাৎকারগুলোর মাঝখানে বেলা দেড়টার সময় বঙ্গবন্ধু গণভবন কমপ্লেক্সের বাসভবনে গিয়ে স্নান সেরে দুপুরের খাবার খেতেন। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম। খাবার আসত ৩২ নম্বর থেকে। বেগম মুজিব রান্না করে পাঠাতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় খাবার ছিল কই মাছ।
বিশ্রামের সময় বঙ্গবন্ধু গণভবনের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতেন। বিকেল ৪টায় খানিক হাঁটতেন। লেকের ধারে যে ঘাট ছিল, সে ঘাটের পাশে রাখা কালো চেয়ারগুলোর একটিতে বসতেন। লেকের মাছদের নিজ হাতে খাবার দিতেন। এ সময় অনেক রাজনীতিবিদ অনির্ধারিত সাক্ষাতের জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে আসতেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ও পানিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতই বেশি আসতেন।
মূলত রাত ৯টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু থাকতেন গণভবনে। সোমবার অবশ্য তিনি রাত ৮টায় গণভবন ত্যাগ করতেন। সে সময় দেশের একমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভিতে সোমবার রাত ৯টার দিকে দেখানো হতো বাংলা ছায়াছবি। গণভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন সেই সিনেমা দেখার সুযোগ পান, সে কারণেই সেদিন এক ঘণ্টা আগে তিনি গণভবন ত্যাগ করতেন।
বিমানের ট্রান্সপোর্ট পুল থেকে সংগ্রহ করা একটি ছোট নীল গাড়িতে করে বঙ্গবন্ধু চলাচল করতেন। জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ছিল এই ব্যবস্থা।
এ রকম সাদামাটা এক জীবনযাপন করছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি একবারের জন্যও বিশ্বাস করেননি, তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সূত্র: মনোয়ারুল ইসলামের নিবন্ধ, ‘কালের সীমা ছাড়িয়ে’।
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়...
৮ ঘণ্টা আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৭ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪