Ajker Patrika

ধ্বংস হচ্ছে প্রাচীন নিদর্শন বেদখল পাশের জমি

শরিফুল আলম রাসেল, তারাকান্দা
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৪৯
ধ্বংস হচ্ছে প্রাচীন নিদর্শন  বেদখল পাশের জমি

তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের পাখি ডাকা ছায়া ঢাকা সুনিবিড় দাদরা গ্রামে পাঁচ একর জমি নিয়ে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন একটি বাড়ি। জমিদার বাড়ির মতো তৈরি করা ওই বাড়ি বার্ষিক ১০ হাজার ৫০০ টাকায় লিজ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সেটি জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। অথচ বাড়িটি হতে পারত তারাকান্দার অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

কাকনী ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় এ বাড়িতে বসবাস করতেন প্রসন্নকুমার ভট্টাচার্যের ছেলে ইন্দুভূষণ ভট্টাচার্য ও বিধুভূষণ ভট্টাচার্য। পরে তাঁরা যুদ্ধের কোনো এক সময়ে ভারতে চলে যান। এরপরই নানা রকমের বৃক্ষশোভিত রাজকীয় এ বাড়ি ধীরে ধীরে দখল হতে শুরু হয়। এর আশপাশে রয়েছে আরও প্রায় পাঁচ একর জায়গা। সে জায়গাও দখল হয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাড়িটিতে বর্তমানে বসবাস করছেন তারাকান্দা উপজেলার গোয়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান হেলাল ও শেখ রেজাউল করিম খোকন। সম্পর্কে তাঁরা দুই ভাই।

এ বাড়িতে কীভাবে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে লুৎফর রহমান হেলাল বলেন, ‘এ বাড়িটি ১৯৭৭ সালে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি। প্রতি বছর ১০ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করে আসছি।’

এলাকাবাসী জানায়, বাড়িটি ঘিরে যে বাগান ও নানা রকম গাছগাছালি ছিল, তা দিনদিন কমে যাচ্ছে। তারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যেকোনো সময় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এর অবকাঠামো। কোটি কোটি টাকার সম্পদসহ উপজেলার অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এ বাড়িটি এবং দখল হওয়া জমি উদ্ধার করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

দাদরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা দৃষ্টিনন্দন এ বাড়িটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করা হলে তারাকান্দার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

বাড়িটি লিজ দেওয়ার ব্যাপারে কাকনী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘গোয়াতলা গ্রামের লুৎফর রহমান হেলাল ও রেজাউল করিম খোকন ফুলপুর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ১৯৭৭ সালে ওই জমি লিজ হিসেবে গ্রহণ করেন। তাঁরা প্রতি বছর লিজের টাকা পরিশোধ করে যাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে তারাকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজাবে রহমত বলেন, ‘এ বাড়িটি নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি কী করা যায়। এ ব্যাপারে একটি সুব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত