Ajker Patrika

স্কুলভবন নদীর পেটে খোলা মাঠে পাঠদান

মিরাজ হোসেন, দৌলতখান (ভোলা)
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ১০: ৩৭
স্কুলভবন নদীর পেটে খোলা মাঠে পাঠদান

ভোলার দৌলতখান উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙনে হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে খোলা মাঠে। কাঠফাটা রোদেও চলে পাঠদান। তবে বৃষ্টি হলে ছুটি দিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।

রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে পাঠদান করানোর কারণে অভিভাবকেরা ওই বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠাতে রাজি হন না। বরং অনেকে পাশের বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠাচ্ছেন।

এদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, দ্রুত বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেবে।

জানা গেছে, মেঘনার ভাঙনে গত বছরের শেষের দিকে উপজেলার মধ্য হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিলীন হয়ে যায়। এরপর বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হয়। পরে দৌলতখানের চরখলিফা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক শিক্ষানুরাগী বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেন। সেখানে টিনের একচালা একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। সেই ছোট্ট টিনের ঘরে পাঠদান করেন শিক্ষকেরা। কিন্তু একটি ঘরে বিদ্যালয়ের ৬০ জনের বেশি শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্ভব হয় না। ফলে বাধ্য হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে খোলা আকাশের নিচে পাঠ দান করা হয়। এখানেও বিপত্তি। প্রচণ্ড গরম ও রোদে পুড়ে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। নিয়ম অনুযায়ী সকাল ১০ থেকে ৪টা পর্যন্ত চলে পাঠদান। তবে বৃষ্টি হলে ক্লাস বন্ধ থাকে। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা পড়েছেন বিপাকে। অনেকে আবার অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছেন সন্তানদের।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনায়েদ ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মারজান জানায়, স্কুলের ভবন নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় সামান্য বাতাসে ধুলাবালিতে চোখ-মুখ ভরে যায়। এ ছাড়া বই-খাতা বাতাসে উড়ে যায়। মাটিতে নিচু হয়ে লেখা যায় না। স্কুলে আসতে মন চায় না। তারপরও বাধ্য হয়ে আসতে হয়।’

একাধিক অভিভাবক জানান, সরকার দ্রুত বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করে দিলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। তাদের কষ্ট করে খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে ও গরমের মধ্যে ক্লাস করতে হবে না। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ রাখতেও হবে না। আর এভাবে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতেও চায় না। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম রহমান বলেন, ‘মধ্য হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯২০ সালে নলডুগি বৈকুণ্ঠপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে সরকারিভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তিনতলার একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে মেঘনার ভাঙনে ভবনটি বিলীন হয়ে যায়। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়টিতে বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। ফলে গরমের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।’

দৌলতখান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই বিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মাণ করে দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। দ্রুতই বাজেট বরাদ্দ দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত