Ajker Patrika

বেহাল ১০ সেতু-কালভার্ট

ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৩
বেহাল ১০ সেতু-কালভার্ট

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বেশির ভাগ স্লিপার ব্রিজ, কালভার্ট ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া বাজারসংলগ্ন খালের স্লিপার ব্রিজ, কদম আলীর বাড়িসংলগ্ন খালের স্লিপার ব্রিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শামসুর রহমানের বাড়িসংলগ্ন খালের স্লিপার ব্রিজ, খুড়িয়াখালি উদয়ন স্কুলসংলগ্ন খালের ব্রিজ এবং জামাল চৌকিদারের বাড়িসংলগ্ন খালের স্লিপার ব্রিজ। এগুলো যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গাবতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন খালের স্লিপার ব্রিজ, তাফালবাড়ী সোনাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কে বাদল প্যাদার বাড়িসংলগ্ন বক্স কালভার্ট, দক্ষিণ তাফালবাড়ী নির্বান হালদার বাড়ির পাশের স্লিপার ব্রিজ, উত্তর তাফালবাড়ী সড়কে উত্তর তাফালবাড়ী গাইনবাড়ির রাস্তায় মৌরাশী খালের স্লিপার ব্রিজ ও উত্তর তাফালবাড়ীর সাউথখালী-রায়েন্দা ইউনিয়ন সংযোগ খালের (তুলাতলা) স্লিপার ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এসব ব্রিজ-কালভার্টের মধ্যে বেশ কয়েকটি ২০০৭ সালের সিডরে বিধ্বস্ত হওয়ার পর সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণ করা হয়নি।

উপজেলার চালিতাবুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আলম মুন্সি বলেন, মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য চালিতাবুনিয়া-বগী গ্রামের খালের ওপর ১৯৯৮ সালে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড়ে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়সারাভাবে সেটি মেরামত করা হয়। চালিতাবুনিয়া খালের লোহার স্লিপার ব্রিজটি নির্মাণের দুই যুগেও মেরামত না করায় তা পারাপারের অযোগ্য হয়ে গেছে।

সুন্দরবন দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জামাল হোসেন বলেন, এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, বাজারের ব্যবসায়ীসহ সহস্রাধিক মানুষ যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন করেন। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের পর প্রায় দুই যুগ পার হলেও কোনো ধরনের মেরামত করা হয়নি। তিন বছর ধরে সেতুটি পারাপারের অনুপযোগী হয়ে আছে। বিকল্প পথ না থাকায় অনেকে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতুটি পার হচ্ছে। বেশি সমস্যায় পড়েছেন ছাত্র-ছাত্রী ও নারী-শিশুরা।

তাফালবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক নজরুল ইসলাম আকন বলেন, ভাঙা সেতুটি পার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় অনেক পথচারী পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক আবেদন করেও কোনো কাজ হয়নি।

তাফালবাড়ী বাজার-দক্ষিণ তাফালবাড়ী সংযোগ খালের স্লিপার ব্রিজটি ঘূর্ণিঝড় সিডরে বিধ্বস্ত হয়। এখন পর্যন্ত সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়নি। তবে সেখানে একটি আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য গত ২৮ অক্টোবর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন স্থানীয় সাংসদ।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, চালিতাবুনিয়া খালের সেতুটি মেরামতের অযোগ্য। এটি পুনর্নির্মাণ বা কালভার্ট করতে হবে। যার টাকা ইউনিয়ন পরিষদের নেই। এক বছর আগেই উপজেলা উন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে এটিসহ কয়েকটি জায়গায় কালভার্টের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে (পিআইও) তালিকা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কোনো বরাদ্দ হয়নি।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন বলেন, এলজিইডি আইডি এবং ডিপিপিভুক্ত না হলে সেগুলো নির্মাণের প্রক্রিয়া অনেক জটিল। তা ছাড়া স্থানীয়ভাবে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন (এডিপি, এলজিএসপি) বরাদ্দের মাধ্যমে ছোট উডেন-আয়রন ব্রিজগুলো প্রতিবছর নির্মাণ বা সংস্কার করা হয়। যেসব ব্রিজ-কালভার্ট আইডিভুক্ত রয়েছে, সেগুলো নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। এ ছাড়া তাফালবাড়ী বাজারসংলগ্ন খালের সেতুটির কাজ অল্পদিনের মধ্যেই শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত