Ajker Patrika

ছাতারপাইয়ায় দুই বর্গ কিলোমিটারে ১১ ভাটা

সেনবাগ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১২: ২২
ছাতারপাইয়ায় দুই বর্গ কিলোমিটারে ১১ ভাটা

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়ার প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় রয়েছে ১১টি ইটভাটা। ভাটার জন্য মাটি বহন, ইট সরবরাহসহ বিভিন্ন কাজে ট্রাক্টর, পিকআপ ও ড্রামট্রাকের চাকায় প্রতিদিন পিষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক।

এসব বাহনের ধুলোবালু ও ভাটার ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। হর্ন ও বিকট শব্দে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা জানান, আমজনতা ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা প্রতিবাদ করলে নেমে আসে নির্যাতন। মাটি বহন ও পরিবেশদূষণের প্রতিবাদ জানালে স্থানীয় কাঞ্চন ও বাবুলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা হুমকি-ধমকি দেন।

এদিকে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুড়ে যাচ্ছে আবাদি ফসলসহ বিভিন্ন গাছপালা। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন চাষিরা। এসব ভাটায় দেদার পোড়ানো হচ্ছে কয়লার সঙ্গে বিষাক্ত পোড়া মবিল ও টায়ার। ফসলি জমি থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে মাটি। এতে হুমকির মুখে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।

পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসনের নেই কোনো অভিযান। উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও ইটভাটার মালিকদের দালাল ও পোষ্য সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকিতে মানুষজন থাকেন তটস্থ।

গত ১৮ মার্চ ছাতারপাইয়া তিনের বাড়ির ডা. জুলফিকার আলীর বসতবাড়ির গাছ কেটে মাটি পরিবহনে বাধা দিলে আজগার আলী মামুনকে মারধর করেন ইসমাইল ও সাদ্দাম হোসেন।

বসন্তপুর, ঠনারপাড় ও বিরাহিমপুরে পরিবেশদূষণের প্রতিবাদ করলে স্থানীয় আনোয়ারকে (৩৬) পিটিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা।

আবার পরিবেশদূষণে আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেলসহ বিভিন্ন গাছে ছড়িয়ে পড়েছে নানা রোগ। কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠী ইটভাটার মালিকদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেও নিষ্কৃতি পাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সদস্যসচিব জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, ইটভাটার মালিকেরা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, আবাদি ফসল ধ্বংস। এক ফুট মাটি বিক্রয় করলে সন্ত্রাসীরা এক্সকাভেটর দিয়ে তিন ফুট থেকে পাঁচ ফুট মাটি জোর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ বলেন, পুরো উপজেলায় ৪০-৫০টি ইটভাটায় আবাদি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বলেন, পরিবেশদূষণ বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাজমিন আলম তুলি বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত