নুসরাত জাহান শুচি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ।
কথায় বলে, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।’ তাই শৈশবেই মা-বাবা যথাসাধ্য চেষ্টা করে মাথায় ঢুকিয়ে দেন যে আমাদের ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ারই হতে হবে।কেননা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে জীবনের বারো আনাই বৃথা। এখন অবশ্য ধারণা পাল্টে গেছে। এই তালিকায় বিসিএস ক্যাডাররা এখন অনেকটাই এগিয়ে। তাই অনেক ক্ষেত্রে আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদেরও দেখি ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জয়কলি, জব সল্যুশনসের মতো বই নিয়ে লাইব্রেরিতে বসতে।
আমার পরিচিত একজন রাজশাহী মেডিকেলে পড়াকালীন বলেছিলেন, ‘বুঝলে, চিকিৎসকের জীবন ভালো লাগে না। বিসিএসটা দিয়ে যদি কোনোভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারি, তাহলে ডাক্তারি আর করব না। তা ছাড়া, এখন ডাক্তারের চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা, সম্মান বেশি।’ তাঁর কথায় বুঝেছিলাম তিনি চিকিৎসকের পেশাটা সেকেন্ডারি অপশন হিসেবেই রেখেছেন। ভেবে দেখুন, এই দারিদ্র্যের দেশে সরকার একজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসক বানানোর জন্য কয়েক লাখ টাকা খরচ করছে। যার ফলাফল অনেক ক্ষেত্রে কেবলই শূন্য। এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের দেশে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব কতটা অবহেলিত!
তবে এর চেয়েও ভয়াবহ একটি বিষয়, যা সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়ালেও হয়তো আমাদের চিন্তার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি—দেশের শতকরা ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীই অর্ধজীবন, অর্থাৎ ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত মা-বাবার মুখাপেক্ষী হয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। কেননা, চাহিদার তুলনায় কর্মসংস্থান অপ্রতুল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই জীবনের ৩২ বছর পেরিয়ে যায় একটি সরকারি চাকরির প্রত্যাশায়।
যেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বে সব উন্নত দেশেই শৈশবকাল থেকে শেখানো হয় আত্মনির্ভরশীল হতে। তাই ১৮-তে পা দেওয়ার আগেই তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, যা আমাদের সমাজে ভাবাটাও একটি বিশাল দুঃসাহসিক বিষয় বৈকি!
এর পেছনে যে কেবল যুবসমাজই দায়ী, তা নয়। এর দায় বর্তায় আমাদের পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ওপর।
যদি একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কোনো হোটেলে ওয়েটার, ডেলিভারি পারসন, গ্রন্থাগারের হিসাবরক্ষক, ব্যবসা বা কৃষি সম্পৃক্ত কোনো কাজ করে, তাহলে ধরেই নেওয়া হয় তার কোনো আত্মসম্মান নেই বা সে দুবেলা খেতে পায় না। খুব সহজেই আমরা তাকে ‘ছোটলোক’ তকমাও দিয়ে দিই। সোজা বাংলায় বাঙালির মতে, কায়িক পরিশ্রম মানেই ‘কামলা’ খাটা। এমনকি আমাদের সমাজে যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করায়, তাদেরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়।
অথচ ঠিক একই সময়ে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সব উন্নত দেশে সব কাজকে সম্মান করা হয়। তারা কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না বলেই এগিয়ে থাকে অন্যদের থেকে। তাদের উন্নয়নের মূলমন্ত্র পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনমুখী শিক্ষা গ্রহণ।
অপরদিকে আমরা মনে করি, কারিগরি শিক্ষা কেবল তারাই গ্রহণ করবে, যাদের দ্বারা পড়াশোনা হবে না। যখন আমাদের দ্বারা আর কোনো কাজ হবে না, তখনই কেবল আমরা কায়িক পরিশ্রম করব। অন্যথায় নয়; যা আমাদের স্থবিরতার অন্যতম কারণ।
অপরদিকে কেবল কায়িক শ্রমকে পুঁজি করেও যে অলৌকিক অর্থনীতির জন্ম দেওয়া যায়, এমনই একটি উদাহরণ চীন। চীনের মূল চালিকাশক্তি তাদের কর্মী বাহিনী। ফলে ৪০ বছরে চীনে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। চীন পরিচিত হয়েছে ‘বিশ্বের মেগা কারখানা’ হিসেবে।
ঠিক উল্টো দিকে বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগই তরুণ। অথচ শুধু পুঁথিগত বিদ্যা, সরকারি চাকরির পেছনে ছুটে আমরা তৈরি করছি বেকারের কারখানা, হতাশা, বোঝা। অতঃপর কিছু কিছু ক্ষেত্রে আত্মহত্যা। সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের, ফাইল বোঝাই করে সনদ নিয়ে না ঘুরে নিজের প্রচেষ্টায় অন্যের জন্য কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়ার। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই পারে সর্বোৎকৃষ্ট ভূমিকা পালন করতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষায়, বাড়াতে হবে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ। উদ্বুদ্ধ করতে হবে নব উদ্দীপনার জীবন গড়ার আকাঙ্ক্ষাকে। বিখ্যাত লেখক ডেল কার্নেগি বলেছেন, যার মাঝে সীমাহীন উৎসাহ, বুদ্ধি ও একটানা কাজ করার গুণ থাকে, তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
লেখক: সাংবাদিক

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ।
কথায় বলে, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।’ তাই শৈশবেই মা-বাবা যথাসাধ্য চেষ্টা করে মাথায় ঢুকিয়ে দেন যে আমাদের ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ারই হতে হবে।কেননা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে জীবনের বারো আনাই বৃথা। এখন অবশ্য ধারণা পাল্টে গেছে। এই তালিকায় বিসিএস ক্যাডাররা এখন অনেকটাই এগিয়ে। তাই অনেক ক্ষেত্রে আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদেরও দেখি ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জয়কলি, জব সল্যুশনসের মতো বই নিয়ে লাইব্রেরিতে বসতে।
আমার পরিচিত একজন রাজশাহী মেডিকেলে পড়াকালীন বলেছিলেন, ‘বুঝলে, চিকিৎসকের জীবন ভালো লাগে না। বিসিএসটা দিয়ে যদি কোনোভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারি, তাহলে ডাক্তারি আর করব না। তা ছাড়া, এখন ডাক্তারের চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা, সম্মান বেশি।’ তাঁর কথায় বুঝেছিলাম তিনি চিকিৎসকের পেশাটা সেকেন্ডারি অপশন হিসেবেই রেখেছেন। ভেবে দেখুন, এই দারিদ্র্যের দেশে সরকার একজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসক বানানোর জন্য কয়েক লাখ টাকা খরচ করছে। যার ফলাফল অনেক ক্ষেত্রে কেবলই শূন্য। এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের দেশে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব কতটা অবহেলিত!
তবে এর চেয়েও ভয়াবহ একটি বিষয়, যা সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়ালেও হয়তো আমাদের চিন্তার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি—দেশের শতকরা ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীই অর্ধজীবন, অর্থাৎ ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত মা-বাবার মুখাপেক্ষী হয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। কেননা, চাহিদার তুলনায় কর্মসংস্থান অপ্রতুল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই জীবনের ৩২ বছর পেরিয়ে যায় একটি সরকারি চাকরির প্রত্যাশায়।
যেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বে সব উন্নত দেশেই শৈশবকাল থেকে শেখানো হয় আত্মনির্ভরশীল হতে। তাই ১৮-তে পা দেওয়ার আগেই তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, যা আমাদের সমাজে ভাবাটাও একটি বিশাল দুঃসাহসিক বিষয় বৈকি!
এর পেছনে যে কেবল যুবসমাজই দায়ী, তা নয়। এর দায় বর্তায় আমাদের পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ওপর।
যদি একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কোনো হোটেলে ওয়েটার, ডেলিভারি পারসন, গ্রন্থাগারের হিসাবরক্ষক, ব্যবসা বা কৃষি সম্পৃক্ত কোনো কাজ করে, তাহলে ধরেই নেওয়া হয় তার কোনো আত্মসম্মান নেই বা সে দুবেলা খেতে পায় না। খুব সহজেই আমরা তাকে ‘ছোটলোক’ তকমাও দিয়ে দিই। সোজা বাংলায় বাঙালির মতে, কায়িক পরিশ্রম মানেই ‘কামলা’ খাটা। এমনকি আমাদের সমাজে যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করায়, তাদেরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়।
অথচ ঠিক একই সময়ে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সব উন্নত দেশে সব কাজকে সম্মান করা হয়। তারা কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না বলেই এগিয়ে থাকে অন্যদের থেকে। তাদের উন্নয়নের মূলমন্ত্র পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনমুখী শিক্ষা গ্রহণ।
অপরদিকে আমরা মনে করি, কারিগরি শিক্ষা কেবল তারাই গ্রহণ করবে, যাদের দ্বারা পড়াশোনা হবে না। যখন আমাদের দ্বারা আর কোনো কাজ হবে না, তখনই কেবল আমরা কায়িক পরিশ্রম করব। অন্যথায় নয়; যা আমাদের স্থবিরতার অন্যতম কারণ।
অপরদিকে কেবল কায়িক শ্রমকে পুঁজি করেও যে অলৌকিক অর্থনীতির জন্ম দেওয়া যায়, এমনই একটি উদাহরণ চীন। চীনের মূল চালিকাশক্তি তাদের কর্মী বাহিনী। ফলে ৪০ বছরে চীনে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। চীন পরিচিত হয়েছে ‘বিশ্বের মেগা কারখানা’ হিসেবে।
ঠিক উল্টো দিকে বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগই তরুণ। অথচ শুধু পুঁথিগত বিদ্যা, সরকারি চাকরির পেছনে ছুটে আমরা তৈরি করছি বেকারের কারখানা, হতাশা, বোঝা। অতঃপর কিছু কিছু ক্ষেত্রে আত্মহত্যা। সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের, ফাইল বোঝাই করে সনদ নিয়ে না ঘুরে নিজের প্রচেষ্টায় অন্যের জন্য কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়ার। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই পারে সর্বোৎকৃষ্ট ভূমিকা পালন করতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষায়, বাড়াতে হবে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ। উদ্বুদ্ধ করতে হবে নব উদ্দীপনার জীবন গড়ার আকাঙ্ক্ষাকে। বিখ্যাত লেখক ডেল কার্নেগি বলেছেন, যার মাঝে সীমাহীন উৎসাহ, বুদ্ধি ও একটানা কাজ করার গুণ থাকে, তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
লেখক: সাংবাদিক

নুসরাত জাহান শুচি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ।
কথায় বলে, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।’ তাই শৈশবেই মা-বাবা যথাসাধ্য চেষ্টা করে মাথায় ঢুকিয়ে দেন যে আমাদের ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ারই হতে হবে।কেননা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে জীবনের বারো আনাই বৃথা। এখন অবশ্য ধারণা পাল্টে গেছে। এই তালিকায় বিসিএস ক্যাডাররা এখন অনেকটাই এগিয়ে। তাই অনেক ক্ষেত্রে আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদেরও দেখি ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জয়কলি, জব সল্যুশনসের মতো বই নিয়ে লাইব্রেরিতে বসতে।
আমার পরিচিত একজন রাজশাহী মেডিকেলে পড়াকালীন বলেছিলেন, ‘বুঝলে, চিকিৎসকের জীবন ভালো লাগে না। বিসিএসটা দিয়ে যদি কোনোভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারি, তাহলে ডাক্তারি আর করব না। তা ছাড়া, এখন ডাক্তারের চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা, সম্মান বেশি।’ তাঁর কথায় বুঝেছিলাম তিনি চিকিৎসকের পেশাটা সেকেন্ডারি অপশন হিসেবেই রেখেছেন। ভেবে দেখুন, এই দারিদ্র্যের দেশে সরকার একজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসক বানানোর জন্য কয়েক লাখ টাকা খরচ করছে। যার ফলাফল অনেক ক্ষেত্রে কেবলই শূন্য। এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের দেশে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব কতটা অবহেলিত!
তবে এর চেয়েও ভয়াবহ একটি বিষয়, যা সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়ালেও হয়তো আমাদের চিন্তার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি—দেশের শতকরা ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীই অর্ধজীবন, অর্থাৎ ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত মা-বাবার মুখাপেক্ষী হয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। কেননা, চাহিদার তুলনায় কর্মসংস্থান অপ্রতুল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই জীবনের ৩২ বছর পেরিয়ে যায় একটি সরকারি চাকরির প্রত্যাশায়।
যেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বে সব উন্নত দেশেই শৈশবকাল থেকে শেখানো হয় আত্মনির্ভরশীল হতে। তাই ১৮-তে পা দেওয়ার আগেই তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, যা আমাদের সমাজে ভাবাটাও একটি বিশাল দুঃসাহসিক বিষয় বৈকি!
এর পেছনে যে কেবল যুবসমাজই দায়ী, তা নয়। এর দায় বর্তায় আমাদের পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ওপর।
যদি একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কোনো হোটেলে ওয়েটার, ডেলিভারি পারসন, গ্রন্থাগারের হিসাবরক্ষক, ব্যবসা বা কৃষি সম্পৃক্ত কোনো কাজ করে, তাহলে ধরেই নেওয়া হয় তার কোনো আত্মসম্মান নেই বা সে দুবেলা খেতে পায় না। খুব সহজেই আমরা তাকে ‘ছোটলোক’ তকমাও দিয়ে দিই। সোজা বাংলায় বাঙালির মতে, কায়িক পরিশ্রম মানেই ‘কামলা’ খাটা। এমনকি আমাদের সমাজে যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করায়, তাদেরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়।
অথচ ঠিক একই সময়ে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সব উন্নত দেশে সব কাজকে সম্মান করা হয়। তারা কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না বলেই এগিয়ে থাকে অন্যদের থেকে। তাদের উন্নয়নের মূলমন্ত্র পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনমুখী শিক্ষা গ্রহণ।
অপরদিকে আমরা মনে করি, কারিগরি শিক্ষা কেবল তারাই গ্রহণ করবে, যাদের দ্বারা পড়াশোনা হবে না। যখন আমাদের দ্বারা আর কোনো কাজ হবে না, তখনই কেবল আমরা কায়িক পরিশ্রম করব। অন্যথায় নয়; যা আমাদের স্থবিরতার অন্যতম কারণ।
অপরদিকে কেবল কায়িক শ্রমকে পুঁজি করেও যে অলৌকিক অর্থনীতির জন্ম দেওয়া যায়, এমনই একটি উদাহরণ চীন। চীনের মূল চালিকাশক্তি তাদের কর্মী বাহিনী। ফলে ৪০ বছরে চীনে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। চীন পরিচিত হয়েছে ‘বিশ্বের মেগা কারখানা’ হিসেবে।
ঠিক উল্টো দিকে বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগই তরুণ। অথচ শুধু পুঁথিগত বিদ্যা, সরকারি চাকরির পেছনে ছুটে আমরা তৈরি করছি বেকারের কারখানা, হতাশা, বোঝা। অতঃপর কিছু কিছু ক্ষেত্রে আত্মহত্যা। সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের, ফাইল বোঝাই করে সনদ নিয়ে না ঘুরে নিজের প্রচেষ্টায় অন্যের জন্য কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়ার। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই পারে সর্বোৎকৃষ্ট ভূমিকা পালন করতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষায়, বাড়াতে হবে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ। উদ্বুদ্ধ করতে হবে নব উদ্দীপনার জীবন গড়ার আকাঙ্ক্ষাকে। বিখ্যাত লেখক ডেল কার্নেগি বলেছেন, যার মাঝে সীমাহীন উৎসাহ, বুদ্ধি ও একটানা কাজ করার গুণ থাকে, তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
লেখক: সাংবাদিক

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ।
কথায় বলে, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।’ তাই শৈশবেই মা-বাবা যথাসাধ্য চেষ্টা করে মাথায় ঢুকিয়ে দেন যে আমাদের ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ারই হতে হবে।কেননা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে জীবনের বারো আনাই বৃথা। এখন অবশ্য ধারণা পাল্টে গেছে। এই তালিকায় বিসিএস ক্যাডাররা এখন অনেকটাই এগিয়ে। তাই অনেক ক্ষেত্রে আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদেরও দেখি ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জয়কলি, জব সল্যুশনসের মতো বই নিয়ে লাইব্রেরিতে বসতে।
আমার পরিচিত একজন রাজশাহী মেডিকেলে পড়াকালীন বলেছিলেন, ‘বুঝলে, চিকিৎসকের জীবন ভালো লাগে না। বিসিএসটা দিয়ে যদি কোনোভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারি, তাহলে ডাক্তারি আর করব না। তা ছাড়া, এখন ডাক্তারের চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা, সম্মান বেশি।’ তাঁর কথায় বুঝেছিলাম তিনি চিকিৎসকের পেশাটা সেকেন্ডারি অপশন হিসেবেই রেখেছেন। ভেবে দেখুন, এই দারিদ্র্যের দেশে সরকার একজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসক বানানোর জন্য কয়েক লাখ টাকা খরচ করছে। যার ফলাফল অনেক ক্ষেত্রে কেবলই শূন্য। এ থেকে বোঝা যায়, আমাদের দেশে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব কতটা অবহেলিত!
তবে এর চেয়েও ভয়াবহ একটি বিষয়, যা সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়ালেও হয়তো আমাদের চিন্তার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি—দেশের শতকরা ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীই অর্ধজীবন, অর্থাৎ ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত মা-বাবার মুখাপেক্ষী হয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। কেননা, চাহিদার তুলনায় কর্মসংস্থান অপ্রতুল হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই জীবনের ৩২ বছর পেরিয়ে যায় একটি সরকারি চাকরির প্রত্যাশায়।
যেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বে সব উন্নত দেশেই শৈশবকাল থেকে শেখানো হয় আত্মনির্ভরশীল হতে। তাই ১৮-তে পা দেওয়ার আগেই তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, যা আমাদের সমাজে ভাবাটাও একটি বিশাল দুঃসাহসিক বিষয় বৈকি!
এর পেছনে যে কেবল যুবসমাজই দায়ী, তা নয়। এর দায় বর্তায় আমাদের পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ওপর।
যদি একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কোনো হোটেলে ওয়েটার, ডেলিভারি পারসন, গ্রন্থাগারের হিসাবরক্ষক, ব্যবসা বা কৃষি সম্পৃক্ত কোনো কাজ করে, তাহলে ধরেই নেওয়া হয় তার কোনো আত্মসম্মান নেই বা সে দুবেলা খেতে পায় না। খুব সহজেই আমরা তাকে ‘ছোটলোক’ তকমাও দিয়ে দিই। সোজা বাংলায় বাঙালির মতে, কায়িক পরিশ্রম মানেই ‘কামলা’ খাটা। এমনকি আমাদের সমাজে যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করায়, তাদেরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়।
অথচ ঠিক একই সময়ে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সব উন্নত দেশে সব কাজকে সম্মান করা হয়। তারা কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না বলেই এগিয়ে থাকে অন্যদের থেকে। তাদের উন্নয়নের মূলমন্ত্র পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনমুখী শিক্ষা গ্রহণ।
অপরদিকে আমরা মনে করি, কারিগরি শিক্ষা কেবল তারাই গ্রহণ করবে, যাদের দ্বারা পড়াশোনা হবে না। যখন আমাদের দ্বারা আর কোনো কাজ হবে না, তখনই কেবল আমরা কায়িক পরিশ্রম করব। অন্যথায় নয়; যা আমাদের স্থবিরতার অন্যতম কারণ।
অপরদিকে কেবল কায়িক শ্রমকে পুঁজি করেও যে অলৌকিক অর্থনীতির জন্ম দেওয়া যায়, এমনই একটি উদাহরণ চীন। চীনের মূল চালিকাশক্তি তাদের কর্মী বাহিনী। ফলে ৪০ বছরে চীনে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। চীন পরিচিত হয়েছে ‘বিশ্বের মেগা কারখানা’ হিসেবে।
ঠিক উল্টো দিকে বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগই তরুণ। অথচ শুধু পুঁথিগত বিদ্যা, সরকারি চাকরির পেছনে ছুটে আমরা তৈরি করছি বেকারের কারখানা, হতাশা, বোঝা। অতঃপর কিছু কিছু ক্ষেত্রে আত্মহত্যা। সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের, ফাইল বোঝাই করে সনদ নিয়ে না ঘুরে নিজের প্রচেষ্টায় অন্যের জন্য কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়ার। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই পারে সর্বোৎকৃষ্ট ভূমিকা পালন করতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষায়, বাড়াতে হবে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ। উদ্বুদ্ধ করতে হবে নব উদ্দীপনার জীবন গড়ার আকাঙ্ক্ষাকে। বিখ্যাত লেখক ডেল কার্নেগি বলেছেন, যার মাঝে সীমাহীন উৎসাহ, বুদ্ধি ও একটানা কাজ করার গুণ থাকে, তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
লেখক: সাংবাদিক


গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ...
১৬ জানুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ...
১৬ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ...
১৬ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো ক্লাসে গিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমরা কী হতে চাও,’ বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বলবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। এর কারণও খুব যথার্থ...
১৬ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫