Ajker Patrika

শত মিটারের যত ভোগান্তি

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, মধুপুর
আপডেট : ২৪ মে ২০২২, ১১: ২৫
শত মিটারের যত ভোগান্তি

বছর পেরোলেও সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় শত মিটারের সড়কে ভোগান্তি বেড়েছে। দুর্ভোগে অতিষ্ঠ মানুষ ও পরিবহনচালকেরা অন্য পথে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া সড়কে প্রতিদিনই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে মধুপুর থেকে কাকরাইদ-মোটেরবাজার, গারোবাজার, গোড়াই-ঢাকা সড়কের মোটেরবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, বর্তমান সরকারের আমলেই কাকরাইদ-মোটেরবাজার, গারোবাজার, গোড়াই-ঢাকা সড়কের কয়েক দফা সংস্কার হয়েছে। এ জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ বা ঢাকা-টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কে কোনো প্রকার সমস্যা দেখা দিলেই পরিবহনচালকেরা বিকল্প পথ হিসেবে এ সড়কটি ব্যবহার করেন।

এদিকে মধুপুরের অন্যতম অর্থকরী ফসল আনারস ও কলার বিক্রয় কেন্দ্র গারোবাজার। হাটে এসব পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। মোটেরবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ১০০ মিটার সড়কটি ২০১৯-২০ অর্থবছরে আরসিসি ঢালাই করে আরও মজবুত করা হয়। এতে ঢালাইয়ের প্রান্তিক অংশে এক ফুট নিচু হয়ে যায়। এই নিচু অংশে বৃষ্টি হলেই পানি জমে সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পুরো বর্ষা মৌসুমজুড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। আর শুষ্ক মৌসুমে ভাঙাচোরা খানাখন্দ ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে অতি সাবধানে চলাচল করতে হয়। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির শুরুতেই সেই ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ।

এ বিষয়ে মোটেরবাজার শিল্প ও বণিক সমিতির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক কাজী আবু জাফর বলেন, টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অথবা ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কে যানজট দেখা দিলে বিকল্প পথ হিসেবে পরিবহন চালকেরা মধুপুর-কাকরাইদ-মোটেরবাজার, গারোবাজার, গোড়াই-ঢাকা সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। আবার অনেকে পথে ভোগান্তি এড়াতে সংক্ষিপ্ত সড়ক হিসেবেও এই সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানে মোটেরবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।

মোটেরবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা চিকিৎসক আব্দুল খালেক জানান, উন্নয়নের নামে আরসিসি ঢালাই করার পর পানিনিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তি স্থায়ী রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

মৌসুমি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ বলেন, পানির নিচে বড় বড় খানাখন্দক আর জলকাদায় একাকার হয়ে যাওয়া শত মিটারের এই অংশে শত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। সিএনজি চালকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

গারোবাজার পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোলায়মান সেলিম জানান, ঐতিহ্যবাহী গারোবাজার হাটের প্রবেশদ্বারে কাদাজল আর খানাখন্দ স্বাগত জানায়। স্থানীয় ট্রাক ড্রাইভার্স অ্যাসোসেসিয়েশনের নেতারা দুর্ভোগ কমানোর জন্য ইটের সুরকি দিয়েছিলেন, কিন্তু এতেও ফল হয়নি।

এ ব্যাপারে আউশনারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, মোটেরবাজার এলাকায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. জয়নাল আবেদীন জানান, কাকরাইদ থেকে মোটেরবাজার-গারোবাজার-গোড়াই হয়ে ঢাকা যাওয়ার সড়কটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সম্প্রতি সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ অধিগ্রহণ করেছে। ফলে জনগণের ভোগান্তি হলেও সংস্কারের বরাদ্দ আমরা আনতে পারছি না।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ইতিমধ্যেই ২০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। গারোবাজারে ৫০০ মিটার, নেদুর বাজারে ১৫০ মিটার ও মোটেরবাজারে ৩৫০ মিটার আরসিসি ঢালাই করা হবে। সেই সঙ্গে পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত