Ajker Patrika

বৃষ্টিতে দুর্ভোগ, ফসল-ভাটার ক্ষতি

রাজশাহী ও দুর্গাপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ১৯
বৃষ্টিতে দুর্ভোগ, ফসল-ভাটার ক্ষতি

পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে রাজশাহীতে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া দপ্তর। মাঘের এই বৃষ্টিতে শীত জেঁকে বসেছে। দেখা গেছে জনদুর্ভোগও। বৃষ্টিতে উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পেঁয়াজ, ভুট্টা, আলু, লাউসহ বিভিন্ন সবজিখেতে পানি জমেছে। বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টা, পেঁয়াজ ও আলুগাছ হেলে পড়েছে। এদিকে গতকাল বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় প্রস্তুতকৃত কাঁচা ইট বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হতে দেখা গেছে।

মাঘের এ বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন নগরীর ভাসমান ও নিম্ন আয়ের মানুষ। অটোরিকশাচালক মো. জাফর বলেন, বৃষ্টির কারণে মানুষজন তেমন বের হচ্ছেন না। অটোরিকশায় যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। মালিককে ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে। সেই টাকা বৃষ্টির কারণে উঠবে বলে মনে হচ্ছে না তাঁর। ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, প্রতিদিন ফেরি করে সকালে অন্তত ২০০ টাকার চা বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৫০ টাকারও বিক্রি হয়নি।

দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। হঠাৎ বৃষ্টিতে পেঁয়াজখেতে পানি জমেছে।নিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। জমিতে পানি জমায় দমকা বাতাসে পেঁয়াজগাছ হেলে পড়ে গেছে। এদিকে বৃষ্টিতে দুর্গাপুর উপজেলার ইটভাটাগুলোতে অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভাটামালিকেরা। গতকাল বিকেলে ইটভাটাগুলোতে পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের চেষ্টা করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।

দুর্গাপুর উপজেলায় অন্তত ১১টি ইটভাটা আছে। মূলত বৃষ্টি মোকাবিলায় প্রস্তুতি না থাকায় এসব ভাটার চুল্লি দেবে ভেতরে সাজানো কাঁচা ইটের ক্ষতি হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই এত বড় ক্ষতির ফলে কমবেশি লোকসান গুনতে হবে ইটভাটার মালিকদের, এমনটিই জানালেন তাঁরা। হক ইটভাটার শ্রমিক আবদুল কদ্দুস গতকাল বলেন, তিনি বাইরের জেলা থেকে এসেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় ভাটায় প্রতিদিনই কাজ হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। দিনে বৃষ্টিপাত আরও বাড়ে। কাজ বন্ধ থাকলে সেদিন তাঁরা কোনো বেতন পান না।

উপজেলার এমআর জিকজাক (হাওয়া) ইটভাটার মালিক মাহাবুবুর রহমান বলেন, মৌসুমের শুরুতেই এ ধরনের বৃষ্টিপাতে প্রস্তুতকৃত কাঁচা ইট ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সব ইটভাটার মালিকই ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও না থামার কারণে বৃষ্টির পরিমাণটা বেশি। তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় ২২ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হিসেবে ধরা হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীতে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাতই হয়েছে। এর প্রভাবে শীত অনুভূত হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত