Ajker Patrika

ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ০৪
ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ

নওগাঁয় আমন মৌসুমে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহে সফলতা এলেও ব্যর্থ হয়েছে ধান সংগ্রহ অভিযান। জেলায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ১ শতাংশের কম। গতকাল রোববার পর্যন্ত মাত্র ৯৭ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করতে পেরেছে জেলার সরকারি খাদ্যগুদামগুলো। তবে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ।

ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে সংগ্রহ কার্যক্রম। খাদ্য বিভাগের দাবি, ধান সংগ্রহ কম হলেও সরকারের মূল উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। গুদাম ও খোলাবাজারে ধানের দাম কাছাকাছি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের আগ্রহ নেই। যে কারণে কৃষকেরা এবার ধান বাজারে বিক্রি করেছেন।

অবশ্য এই সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৮ শতাংশ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। জেলায় প্রথম দফায় চাল ক্রয়ের বরাদ্দ পাওয়া নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পর পরবর্তী সময়ে জেলায় আরও ১১ হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয়ের বরাদ্দ আসে। সেই লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রায় শতভাগ পূরণ হয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ নভেম্বর সারা দেশে একযোগে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহ শুরু হয়। আজ শেষ হচ্ছে এই কার্যক্রম। জেলার ১১টি উপজেলার ১৯টি খাদ্যগুদামে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা মণ দরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ হাজার ২৪৩ মেট্রিক টন।

অন্যদিকে জেলায় প্রথম দফায় ২৩ হাজার ২৪৯ মেট্রিক টন সেদ্ধ আমন চাল ক্রয়ের বরাদ্দ আসে। নির্ধারিত সময়ের আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ায় পরে আরও ১১ হাজার ৯৭৬ মেট্রিক টন চাল ক্রয়ের বরাদ্দ আসে। দুই দফায় নওগাঁ জেলার ১৯টি খাদ্যগুদামে চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৫ হাজার ২২৫ মেট্রিক টন। গতকাল রোববার পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৯৫ মেট্রিক টন, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ।

স্থানীয় কৃষক ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধানের বর্তমান বাজারদর এবং গুদামে ধান ক্রয়ের সরকারনির্ধারিত দাম প্রায় সমান। এ ছাড়া আর্দ্রতার কথা বলে প্রতি মণে এক-দুই কেজি করে বেশি ধান নেওয়াসহ অনেক সময় ধান ফেরতও দেওয়া হয় কৃষকদের। স্থানীয় বাজারে এসব ঝক্কি-ঝামেলা নেই। এসব কারণে কৃষকেরা বাজারে বিক্রি করেছেন।

নওগাঁর মাতাজি এলাকার কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ‘গ্রেডিং, শুষ্কতা, পরিবহন খরচ, মজুরি খরচের হিসাব বিবেচনা করলে বাড়ি থেকে পাইকারের কাছে অথবা পার্শ্ববর্তী বাজারে কাছাকাছি দামে বিক্রি করাই অনেক সুবিধাজনক।’

মহাদেবপুরের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, পাইকারেরা বাড়িতে এসে ধান মেপে কিনে নিয়ে গেছেন। সেই সঙ্গে সাপ্তাহিক হাটেও ধান বিক্রি করেছেন। সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ না করে এ পদ্ধতিতেই তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

নওগাঁর মাতাজীহাট খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ‘কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। গ্রামে গ্রামে বিভিন্নভাবে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষক গুদামে ধান দেননি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবির বলেন, সরকারনির্ধারিত ধানের সংগ্রহ মূল্য ও বাজারে ধানের দামের খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় কৃষকেরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী হননি। সরকারের ধান সংগ্রহের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায়। কৃষক যেহেতু বাজারে ভালো দাম পাচ্ছেন, সে কারণে আমাদের সংগ্রহ কম। তবে সরকারের মূল উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে দাবি এই কর্মকর্তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত