Ajker Patrika

ইজারা এক জায়গায়, বালু উত্তোলন অন্য স্থানে

আসাদুজ্জামান রিপন, নরসিংদী
Thumbnail image

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় মেঘনা নদীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নিয়ম না থাকলেও ১৫টির বেশি চুম্বক ড্রেজার ও বাল্কহেড দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। ফলে ভাঙনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে নদীতীরবর্তী জনপদ। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর রায়পুরা উপজেলার কাৎলারচর মৌজায় বালু উত্তোলনের ইজারার কার্যাদেশ দেয় জেলা প্রশাসন। কার্যাদেশে চুম্বক ড্রেজারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কাটিং ড্রেজার ব্যবহার করে নির্ধারিত মৌজা থেকে বালু উত্তোলনের শর্ত দেওয়া হয়। এই শর্তে ইজারা পায় মেসার্স মৌসুমী ড্রেজিং প্রকল্প ও নৌপরিবহন বালুমহাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইজারার নির্ধারিত জামানত ছাড়া অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ টাকা, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ ১২ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়েই গত ৩০ নভেম্বর থেকে চলছে বালু উত্তোলন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলা প্রশাসনের দখল হস্তান্তর ছাড়াই নির্ধারিত পাড়াতলী ইউনিয়নের কাৎলারচর মৌজা থেকে সরে গিয়ে পাশের চানপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর মৌজায় অবৈধভাবে ১৫টির বেশি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে দিনরাত অবাধে বালু উত্তোলন ও বিক্রি শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে চানপুরের শত শত বাড়িঘর, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাধা দিতে গেলে স্থানীয়দের নির্যাতনসহ দেওয়া হয় মামলা-হামলার হুমকি। এ ছাড়া বালু উত্তোলন বন্ধে স্থায়নীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ।

রায়পুরার মাঝেরচর এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৫টির বেশি চুম্বক ড্রেজার ও বালুবাহী বাল্কহেড দিয়ে নিয়মিত বালু উত্তোলনের পর বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে মাঝেরচর, সুলতানপুর, সাহারখোলা, ছাটাবনসহ বেশ কিছু গ্রাম নদীভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে।

যোগাযোগ করা হলে ইজারাদার মেসার্স মৌসুমী ড্রেজিং প্রকল্প ও নৌপরিবহন বালুমহালের স্বত্বাধিকারী মিন্টু মিয়া বলেন, ‘নদীর ঢেউয়ের কারণে ড্রেজার মৌজার বাইরে চলে আসে। মাঝেমধ্যে ড্রেজার মাঝেরচর মৌজায় চলে আসার খবর আমিও পাই।’ চুম্বক ড্রেজার ব্যবহারের নিয়ম না থাকলেও কেন ব্যবহার করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুম্বক ড্রেজার ছাড়া বালু উত্তোলন সম্ভব নয়। বালু উত্তোলনে চুম্বক ড্রেজার লাগবেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, রায়পুরা উপজেলার কাৎলারচর মৌজায় বালু উত্তোলনের ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারার বাইরে অন্য মৌজায় ও চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। কাটিং ড্রেজার দিয়েই বালু উত্তোলন করতে হবে। ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার ও মৌজার বাইরে গেলে বালুমহালের ইজারা বাতিল করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত