Ajker Patrika

গরুর হাটে দোকান ভাড়া

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী গরু-ছাগলের হাটের ইজারা নিয়ে দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায় করছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। এমনকি দোকানের অবস্থান দেওয়ার মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের বারুয়াখালী গরু-ছাগলের হাট ইজারা নিয়ে এই বাণিজ্য করছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. তৌহিদ ভূইয়া। এতে শুধু কোরবানির পশুর হাটের কয়েকটা দিন ছাড়া বোঝাই যায় না—সেখানে গরু-ছাগল বিক্রি হয়।

বারুয়াখালী হাটে গরু-ছাগল বিক্রির জন্য নির্ধারিত স্থানে এখন সারা বছর হোটেল, চটপটি, ফার্নিচার, রেস্টুরেন্ট, চা, পিঠা ও কাঠের ব্যবসা। আকারভেদে এসব দোকানে ৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা বার্ষিক ভাড়া নিচ্ছেন ইজারাদার তৌহিদ ভূইয়া। ফলে অনেক দোকানই স্থায়ী রূপ নিতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের ৯০ শতাংশ জায়গা এখন বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দখলে। ছোট-বড় মিলিয়ে গরুর হাটের মাঠে ১৮টি দোকান বসে। কেবল কোরবানির ঈদের আগে ও পরে দুই সপ্তাহ ব্যবসায়ীরা দোকান অন্য স্থানে নিয়ে যান।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি শুক্রবার হাট বসে ওই অংশে। আগে গরু-ছাগলের হাট জমজমাট হলেও বর্তমানে হাটের দিনে অল্প কিছু ছাগল বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কোরবানির ঈদ ছাড়া গরু বিক্রেতারা আসেন না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে গতকাল আজকের পত্রিকাকে মো. তৌহিদ ভূইয়া বলেন, ‘গরুর হাট শুধু কোরবানির ঈদের সময় জমে। শুক্রবারের সাপ্তাহিক হাটে পাঁচ-সাতটা ছাগল ওঠে, এতে চার-পাঁচ শ টাকা হয়। আমি ১২ লাখ টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য গরুর হাটের ইজারা এনেছি। তাতে সমস্যা কী। আমি যদি একটা পুকুর নিই, তাতে যেকোনো মাছই তো ছাড়তে পারব, তাই না?’

তৌহিদ ভূইয়া আরও বলেন, ‘হাটে আশপাশের অস্থায়ী দোকান ছিল। বিষয়টা সাবেক ইউএনওকে জানিয়েছি। তিনি গরুর হাটে জায়গা থাকা সাপেক্ষে দোকান স্থাপনের অনুমতি দিয়েছেন। আর আমি দোকান বসাইনি, বিগত ইজারাদার রেজাউল করিম রাজু এই দোকান বসিয়েছেন। পরে আমি ইজারা নেওয়ার পর দোকানদারেরা আমাকে টাকা দিয়েছেন। এক বছরের জন্য দোকানগুলো বসেছে, আর মাত্র দুই মাস বাকি।’ তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বললে দোকান তুলে দেবেন বলে তিনি জানান।

বাজার বণিক সমিতির বিগত সভাপতি রেজাউল করিম রাজু গতকাল বলেন, ‘আমি সমিতির দায়িত্বে থাকার সময় তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে রাস্তার পাশ থেকে চার-পাঁচটি দোকান গরুর হাটের পাশে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এ জন্য কোনো টাকাপয়সা নেওয়া হয়নি। এখন গরুর হাটের মাঝে অনেক দোকান বসানো হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি দোকান থেকে ১০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করলেও এ বিষয়ে জানতে পারবেন।’

এদিকে আজ শনিবার বারুয়াখালী বাজার দোকান মালিক ও বণিক সমিতির নির্বাচন। এতে মো. তৌহিদ ভূইয়া নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনের একজন প্রার্থী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘গরুর হাটের ইজারা নিয়ে দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায় অন্যায়। এর বেশি মন্তব্য করতে পারব না।’

নবাবগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি তদন্ত করব। এসি ল্যান্ড সাহেবকে বলব তদন্ত করতে। যদি নিয়মের ব্যত্যয় হয়, তবে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত