Ajker Patrika

নিশ্চিহ্ন সেতু, ভরসা সাঁকো

আজিজুর রহমান, চৌগাছা
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ০৭
Thumbnail image

যশোরের চৌগাছার পাতিবিলা ইউনিয়নের ভবানিপুর গ্রামের একটি খাল পারাপারের সেতু তিন বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে।

তবে সেটি সংস্কার বা নতুন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই কোনো কর্তৃপক্ষের। গ্রামবাসী ভাঙা সেতুর স্থানে কোনো রকমে বাঁশের সাঁকো (চরাট) দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

ভবানিপুরে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের পাশ দিয়ে ভৈরব নদ বয়ে গেছে। নদের তীরের গ্রামটির মাঝ দিয়ে একটি খাল উত্তরে মাঠের সঙ্গে মিশেছে। ভবানিপুরসহ পাশের তেঘরি, মুক্তদাহ, জগদিশপুর গ্রামের মাঠের পানি এই খাল দিয়ে ভৈরব নদে নিষ্কাশন হয়।

ভবানিপুর এবং আশপাশের গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য অনেক আগে খালের ওপর একটি সেতু নির্মিত হয়। সেটি দিয়ে গ্রামের কৃষকদের মাঠের ফসল ঘরে তোলা, গ্রামের ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়-কলেজে যাতায়াতসহ নানা কাজে ব্যবহৃত হতো। ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই সেতুটি ভেঙে পড়ে।

কিন্তু আজও ইউনিয়ন পরিষদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), উপজেলা পরিষদ বা জেলা পরিষদ কেউই সেতুটি মেরামত বা নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে গ্রামের মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ দেখা দেয়।

একপর্যায়ে স্থানীয় যুবকেরা ভাঙা সেতুর ওপর কোনোমতে বাঁশের চটা দিয়ে একটি সাঁকো (চরাট) তৈরি করেন। তিন বছর ধরে গ্রামের মানুষ এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর গ্রামের লোকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে জানান। এর পর জনপ্রতিনিধি বা প্রকৌশল অফিসের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশ্বাস দিলেও তিন বছরে সেতুটি নির্মাণ বা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

ভাঙা সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো থাকলেও সেটি মেরামতের অভাবে এক দিকে হেলে পড়েছে। যেকোনো সময় সাঁকোটি ভেঙে পড়তে পারে। এমনকি প্রবল স্রোতের কারণে খালের পাশের সিরাজুল ইসলামের বসত বাড়িটি ধসে যাওয়ার হুমকিতে রয়েছে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকটি গ্রামের ও মাঠের পানি খাল দিয়ে ভৈরবে নিষ্কাশন হয়।’

গ্রামের হাফিজুর রহমান, হোসেন আলী, সানাউল্লাহ বলেন, কৃষকের মাঠের ফসল তোলার একটি মাত্র রাস্তা এটি। সেই রাস্তার সেতু তিন বছর আগে ভেঙে গেছে। এখন সাঁকো বানিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অথচ সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

গৃহবধূ হাজেরা খাতুন ও খাদিজা বেগম বলেন, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে। ভাঙা সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। ভয়ে থাকি কখন কোনো শিশু খালের পানিতে পড়ে যায়।

পাতিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল বলেন, ‘বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে তখনই জানিয়েছি।’

চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুর রহমান বলেন, ‘আমরা কয়েকবার ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সেখানে সেতু হওয়া জরুরি। প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে কাজ করতে কিছুটা দেরি হওয়ায় সেটি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসকে জানানো হয়েছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘সেতুটি অনেক আগেই নির্মাণ হয়ে যেত, কিন্তু করোনার কারণে হয়নি। সেতুটি আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে। নতুন অর্থ-বছরে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত