Ajker Patrika

পানি জমে নষ্ট হচ্ছে আগাম আলুর বীজ

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
পানি জমে নষ্ট হচ্ছে আগাম আলুর বীজ

নীলফামারীতে বৃষ্টির পানি জমে খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আগাম চাষ করা বীজ আলু। চাষিরা এই বীজ তুলে নিয়ে লোকসান কমানোর চেষ্টা করছেন। তারপরও প্রতি একরে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। সেখানে আবার নতুন করে বীজ আলু সংগ্রহ ও রোপণে অতিরিক্ত ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ব্যয় হবে।

কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে আগাম আলু চাষের ভান্ডার ও রোল মডেল হিসেবে বিখ্যাত উত্তরের জেলা নীলফামারী। এবার সদরে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। ইতিমধ্যে সোনারায়, সংগলশী ও পঞ্চপুকুর ইউনিয়নে ৭৭০ হেক্টর জমিতে চাষিরা আগাম ‘সেভেন’ জাতের বীজ আলু রোপণ করেছেন। উঁচু ডাঙা এলাকার বেলে দো-আঁশ মাটিতে ৫০ থেকে ৫৫ দিনে এই আলু উত্তোলনযোগ্য হয়।

সংগলশী ইউনিয়নের দীঘলডাঙ্গী গ্রামের আলুচাষি তহিদুল ইসলাম জানান, যার আলু যত আগে উঠবে, সেই কৃষক তত বেশি ভালো দামে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। মৌসুমের শুরুতে বাজারে নতুন আলুর চাহিদা থাকে প্রচুর। ভোক্তার কাছে আগাম দিতে পারলে চড়া বাজারমূল্য পেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হওয়া যায়—এমন প্রত্যাশা ছিল কৃষকের। তবে গত সপ্তাহের টানা দুই দিনের বর্ষণে আলুবীজ পচে গেছে। তাই চাষিরা জমি থেকে বীজ তুলে নতুন করে রোপণ করছেন।

তহিদুল বলেন, এক একর জমির জন্য ৫০ কেজি ওজনের ২২ বস্তা আলুর বীজ লেগেছে। বৃষ্টির কারণে পচে গিয়ে ওই জমি থেকে ১২ থেকে ১৩ বস্তা বীজ পাওয়া গেছে। ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বীজ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকা থেকে এসব বীজ কেনা ও পরিবহনে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা ব্যয় হয়েছিল।

একই ইউনিয়নের বারুনীর ডাঙা গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম জানান, নতুন করে জমি তৈরি, সার, মজুরি ও আলুর বীজ কিনতে এখন আবার একরপ্রতি অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এ হিসাবে নীলফামারীর আলুচাষিদের কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। তাই এবার আগাম আলুর মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে এ অঞ্চলের চাষিরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

রহিম আরও বলেন, আগাম আলু উত্তোলন করতে পারলে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। গত বছর ধান কাটার পর চাষ করা আলু খেতে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে প্রতি বিঘায় লাভ হয়েছিল ৪০ হাজার টাকার ওপরে। এবার আলু আবাদে খরচ বেশি হওয়ায় বাজারে ওই দাম পাওয়া গেলেও লাভের পরিমাণ কম হবে বলে জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সপ্তাহের বৃষ্টিপাতে নিচু জমির আলুখেতের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে কোটি টাকা ক্ষতির বিষয়টি সত্য নয়। আগাম আলু চাষাবাদের মৌসুম এখনো শেষ হয়নি। তাই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উঁচু জমিতে তা চাষের জন্য কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে বীজ রোপণের কথা বলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত