Ajker Patrika

খোলা মনে খেলো

বোরহান জাবেদ, সিলেট থেকে 
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৩, ১০: ১৩
খোলা মনে খেলো

রশিদ খান-মুজিব উর রহমানদের নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ‘ভীতি’ নতুন কিছু নয়। ক্রিকেটীয় সৌজন্য মেনে ভীতির কথা যদি দূরে সরিয়েও রাখা হয়, তাঁদের সামনে নিয়মিত নাকাল হওয়ার দৃশ্য অস্বীকার করার উপায় নেই। বেশি দূরে তাকাতে হবে না, চট্টগ্রামে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজজুড়েই এটা দেখা গেছে। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করতে গিয়েই কি তাঁদের বিপক্ষে আরও জড়োসড়ো হয়ে যান বাংলাদেশের ব্যাটাররা?

এই ধাঁধা মেলাতে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান একটি উপায় বের করেছেন! কাউকে নিয়ে আলাদা না ভেবে সতীর্থদের খোলা মনে খেলতে বলছেন তিনি। সিলেটে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক ঘুরেফিরে একই কথা বলেছেন, আলাদাভাবে কোনো কিছু নিয়ে ভাবছেন না তাঁরা। সেটা রশিদ হোক কিংবা মুজিব। এমনকি নিজেদের দলও যেন একজনের ওপর ভরসা করে বসে না থাকে। কন্ডিশন নিয়ে প্রশ্নেও সাকিবের সাফ উত্তর, এটা নিয়ে চিন্তিত নন তাঁরা। যেকোনো কন্ডিশনে, যেকোনো ব্যাপারে সতীর্থদের মধ্যে ভাবনার দরজা খোলা রাখার পরামর্শ সাকিবের।

ওয়ানডে সিরিজ হারের পর টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের এই মন্ত্র কাজে দেবে কি না, সিরিজ শেষে বোঝা যাবে। তবে সাকিবের চাওয়া সতীর্থরা যেন উন্নতির ধারাটা ধরে রাখেন, ‘ঘরের মাঠে সবশেষ দুটি সিরিজই (ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড) আমরা ভালো খেলেছি। এটা আমাদের জন্য নতুন আরেকটি চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তান অবশ্যই ভালো দল। আমাদের চেষ্টা থাকবে, যেভাবে আমরা ক্রিকেটটা খেলছি, যেভাবে উন্নতি হচ্ছে, প্রতিটি ম্যাচেই ওভাবে পারফর্ম করতে।’

কাজটা সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। বিশেষ করে আফগানদের বিপক্ষে সব সময় একটা আলাদা স্নায়ুচাপে ভুগতে দেখা যায় বাংলাদেশ দলকে। টি-টোয়েন্টিতে এই আফগানিস্তান আরও কঠিন প্রতিপক্ষ। রশিদ-মুজিব তো আছেনই, ফজলহক ফারুকি, রহমানউল্লাহ গুরবাজরাও যেকোনো দিন ম্যাচের পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারেন। সাকিব ঘুরেফিরে আবারও বললেন, আলাদা করে কারও কথা ভাবছেন না তাঁরা, ‘আমরা নির্দিষ্ট কোনো ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলিনি, চিন্তাও করিনি। যে পরিস্থিতিতে যে আসবে, তার দায়িত্ব কীভাবে সে দলের জন্য ভালো পারফর্ম করতে পারে। টি-টোয়েন্টিতে মোমেন্টাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কীভাবে খেলাটা শুরু করি, সেটা আমার কাছে মনে হয় ম্যাচের ফলের দিকে থেকে ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে অনেক বেশি। ব্যাটিং করি বা বোলিং, শুরুটা ভালো করা গুরুত্বপূর্ণ।’  

 নির্দিষ্ট কাউকে নিয়ে বেশি ভাবতে কেন সাকিবের এত অনীহা, সেটা বোঝা গেল তাঁর এই কথা থেকে, ‘আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি, যখন অন্য দল নিয়ে চিন্তা না করি। আমরা যখন খোলা মন নিয়ে থাকি, নিজেদের খেলাটায় কীভাবে উন্নতি করা যায় এটা নিয়ে ভাবি এবং নিজেদের জায়গা থেকে সবাই কীভাবে ১০-২০ শতাংশ উন্নতি করা যায় এই চিন্তা করি। আমাদের দলটা তখনই ভালো খেলে বেশি। আমরা তখনই একটু নার্ভাস থাকি বা ভালো পারফর্ম করতে পারি না, যখন আমরা কন্ডিশন নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করি এবং অনেক বেশি প্রতিপক্ষ নিয়ে চিন্তা করি।’

গত কিছুদিনে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্নটা আবার সামনে এসেছে। বিশেষ করে তামিম ইকবালের অবসরকাণ্ডের পর। সাকিব অবশ্য এমন ধারণা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন, ‘বাইরে থেকে দেখে অনেক কিছুই মনে হতে পারে। ড্রেসিংরুমে মনে হয় না কখনো অস্থিরতা ছিল কিংবা এখনো আছে। আবহ তো আমি সব সময়ই মনে করি ভালো আছে।’

ভালো হলেই ভালো, তাহলেই সাকিবের খোলা মনের মন্ত্র আরও বেশি কার্যকর হয়ে ওঠার সুযোগ থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত