Ajker Patrika

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন প্রশাসনের নীরব ভূমিকা

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ১৯
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন  প্রশাসনের নীরব ভূমিকা

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীভাঙন বেড়ে বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। এ ছাড়া ট্রাক্টর দিয়ে বালু পরিবহন করায় রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

উপজেলার ভোটমারী ও তুষভান্ডার এলাকায় তিস্তা নদীর ছয়টি পয়েন্টে ট্রাক্টর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নদীতীরবর্তী ও আশপাশের এলাকা থেকে বালু ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে বালু তুলছেন। তাঁরা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে হাজার হাজার ফুট পাইপ টেনে অবাধে বালু তুলছেন। প্রতিদিন ৫০-৬০টি ট্রাক্টর বালু নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করছে।

ভোটমারী ইউনিয়নের মো. কালিয়া বলেন, ‘আমার ঘরের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে যেকোনো দিন আমার ঘরবাড়ি ভেঙে যাবে। প্রশাসনের লোককে কল দিলে শুধু বলে, দেখছি, বালু তোলা বন্ধ হয় না।’

এ বিষয়ে তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রাকিবুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘তিস্তা নদী থেকে ট্রাক্টর দিয়ে বালু পরিবহন করায় আমার এলাকার কাঁচা-পাকা সড়কগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

এদিকে সম্প্রতি তিস্তা নদী থেকে বালু তোলা নিয়ে উপজেলার ভোটমারী ও তুষভান্ডার ইউনিয়নের তিস্তাতীরবর্তী কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী নিজেদের ট্রাক্টর ছাড়া অন্য এলাকার ট্রাক্টর দিয়ে বালু আনা-নেওয়ায় বাধা দেন। এ বিষয়ে সদরের ট্রাক্টর মালিকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে বিচার দেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। পরে ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে বসে নদীতীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্টের বালু ব্যবসায়ীদের ট্রাক্টরপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দিয়ে সদরের ব্যবসায়ীরা নদী থেকে বালু আনতে পারবেন এবং এলাকার ভিত্তিতে এক দামে বালু পরিবহন করবেন বলে সমঝোতা করে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা সদরের ট্রাক্টর মালিক ও বালু ব্যবসায়ী বাদল ও নয়ন মিয়া বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের তিস্তা নদী থেকে বালু নিয়ে আসতে বাধা দেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আমরা বিষয়টি ইউএনও ও এসি ল্যান্ডকে জানাই। তাঁরা ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতে বলেন। এখন যেকোনো পয়েন্ট থেকে বালু আনতে গেলে ওই পয়েন্টের ব্যবসায়ীকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হয়, তা না হলে নদী থেকে বালু আনতে দেন না ব্যবসায়ীরা।’

উপজেলার চৌধুরীহাটের বালু ব্যবসায়ী শহিদ মিয়া ট্রাক্টরপ্রতি টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘নদী থেকে যার ইচ্ছে বালু নেবে। আমরা উঁচু জমি থেকে জমির মালিক বালু নিয়ে আসতে বললে আমরা সেই বালু নিয়ে আসি।’

ইউএনও মো. আব্দুল মান্নান বালু ব্যবসায়ীদের করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এর মধ্যে কোনো বালু উত্তোলনের সংবাদ পাইনি। পেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে অভিযান কম পরিচালিত হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত