Ajker Patrika

প্রকৃতি রক্ষায় বাঁচাতে হবে বন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২২, ১০: ০৭
প্রকৃতি রক্ষায় বাঁচাতে হবে বন

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দুর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত মৃত্যু হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বিলুপ্তপ্রায় বন্য প্রাণীর। বনের ভেতর বিদ্যুৎ লাইন, সড়কপথ ও রেলপথে যানবাহনে কাটা পড়ে এসব বন্য প্রাণীর মৃত্যু ঠেকাতে পারছে না বন বিভাগ। পরিবেশকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় বাঁচাতে হবে বন।

৩ মার্চ লাউয়াছড়া বনে বিশ্ব বন্য প্রাণী দিবসে নানা কর্মসূচি পালন করে বন বিভাগ। ওই দিনই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রাণ যায় দুটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর। বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায় চশমাপরা হনুমান ও দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় উল্টো লেজি বানর এবং চশমাপরা হনুমানটি দুই দিনের বাচ্চা রেখে মারা যায়, পরে মা হারা বাচ্চাটিকেও বাঁচানো যায়নি।

মৌলভীবাজার বন বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, লাউয়াছড়া উদ্যানে এক বছরে প্রাণ গেছে লজ্জাবতী বানর, মুখপোড়া ও চশমাপরা হনুমানসহ ১০ প্রজাতির বন্য প্রাণীর। সংরক্ষিত বনের ভেতর ৩৩ হাজার ফুটের খোলা তারের পল্লী বিদ্যুতের লাইন। এসব তারে ঝুলতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাচ্ছে এসব প্রাণী।

বন বিভাগ বলছে, জাতীয় উদ্যানের ভেতর ১০ কিলোমিটার এবং সংলগ্ন এলাকার ৩০ কিলোমিটারজুড়ে বিদ্যুতের খোলা তার রয়েছে। বনে ৩৩ হাজার ভোল্টের স্পৃশ্যে মারা যাচ্ছে বন্য প্রাণী।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী সাজু মারচিয়াং জানান, লাউয়াছড়া একটি সমৃদ্ধ বন। বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর বসবাস এখানে। অথচ বিদ্যুতের তার, রেল ও সড়কপথে প্রায়ই বন প্রাণ মারা যাচ্ছে। গাছ কাটার ফলে বনে খাদ্যসংকট রয়েছে ফলে বন্য প্রাণী সমৃদ্ধ এই আবাসস্থল হুমকির মুখে পড়েছে।

মৌলভীবাজার বাপা সমন্বয়ক আ স ম সালেহ সোহেল বলেন, ‘বন যাঁরা চালান, তাঁদের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। সম্প্রতি জুড়ি উপজেলায় আগুন লাগিয়ে বনের পাতা পুরোনো হয়েছে। এতে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। মৌলভীবাজার লাউয়াছড়া, রাজকান্দি ফরেস্ট, পাথারিয়া বন উল্লেখযোগ্য। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও বন্য প্রাণীর জন্য নিরাপদ করতে পারছে না সরকার অথচ হাজার কোটি ব্যয়ে সাফারি পার্ক হচ্ছে। আমরা চাই প্রকল্প গ্রহণ করা হোক বন ও বন্যপ্রাণীর স্বার্থে।’

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ১৬৭ প্রজাতির বৃক্ষ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৯ প্রজাতির সাপ, ১৮ প্রজাতির টিকটিকি, দুই প্রজাতির কচ্ছপ, ৫৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ২২ প্রজাতির উভচরসহ অনেক বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীর আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি আসার আগে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে মৌখিক ও লিখিত জানানো হয়েছে। আমি আসার পর ও চিঠি দিয়েছি, মৌখিক বলেছি, কোনো কাজ হয়নি। এই বিদ্যুৎ এর লাইনগুলোকে রাবার প্রটেক্ট করে দিলে বন্যপ্রাণী মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে আসবে।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জানানো হলে সেখান থেকে নির্দেশনা এসেছে তার ঢেকে দেওয়ার জন্য। এর পাশাপাশি গাছ কাটা রোধে পদক্ষেপ নিচ্ছি। যারা গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত ইতিমধ্যে অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত