Ajker Patrika

ঐতিহ্য টিকলেও কষ্ট ঘুচছে না তাঁদের

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৫৭
ঐতিহ্য টিকলেও কষ্ট ঘুচছে না তাঁদের

আধুনিকায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেলুন গড়ে উঠেছে গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজারে। দেশের অনেক এলাকার মতো মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াতেও এখন পিঁড়িতে বসে নরসুন্দরদের কাজ করা আর দেখা যায় না বললেই চলে। তবুও যাঁরা পুঁজির অভাবে সেলুন দিতে পারেননি তাঁরা টিকিয়ে রেখেছেন সে ঐতিহ্য। তবে ঐতিহ্য টিকলেও কষ্ট ঘুচছে না তাঁদের।

পিঁড়িতে বসে কাজ করা নরসুন্দরেরা প্রতিদিন খুবই অল্প টাকা আয় করতে পারেন। এ টাকা দিয়েই চালান সংসার। ঠিকঠাক করাতে পারেন না নিজেদের চিকিৎসাও। সেলুন দিতে পারলে অর্থকষ্ট কমত বলে জানান একাধিক নরসুন্দর।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাটুরিয়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে পরান শীল, নিমাই শীল ও গোপি শীল পাশাপাশি লাইন ধরে বসে আছেন চুল কাটার জন্য। হতদরিদ্র শ্রেণির লোকজন গ্রাম থেকে চুল কাটতে তাঁদের কাছে আসেন। চুল কাটতে ২০ টাকা ও শেভ করত ১০ টাকা নেন বলে জানান তাঁরা।

চুল কাটতে আসা কৃষক জলিল মিয়া বলেন, ‘ভালো সেলুনে চুল কাটাতে লাগে ৫০ টাকা আর এখানে লাগে ২০ টাকা। তাই এখানে চুল কাটতে আইছি।’

কথা হয় নিমাই শীলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৫০ বছর যাবৎ নরসুন্দরের কাজ করছেন। প্রথম জীবনে এক টাকায় চুল ও পঞ্চাশ পয়সায় শেভ করেছেন। তখন ওই টাকায় সংসার ভালোই চলত কিন্তু বর্তমানে ২০ টাকায় চুল ও ১০ টাকায় শেভ করেও সারা দিনে যে টাকা পান, তা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয় বলে জানান।

নরসুন্দর গোপি শীল বলেন, ৪৫ বছর ধরে এ কাজ করছেন। বর্তমানে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবকিছুর পরিবর্তন হওয়ায় চুল ও দাঁড়ি কাটার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতিরও পরিবর্তন এসেছে। আধুনিক সেলুনগুলোতে এখন আর শান দেওয়া ক্ষুর নেই। এর বদলে এসেছে ব্লেড। এসেছে শেভিং ক্রিম, ফোম, উন্নতমানের লোশন।

গোপি শীল বলেন, ‘যখন আমরা এ কাজ শুরু করি তখন এসব ছিল কল্পনার বাইরে। প্রতিদিন যা উপার্জন করি তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে। কেউ পুঁজি দিয়ে সাহায্য করলে আমাদেরও ভাগ্য বদলে যেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত