Ajker Patrika

টোকেন নিয়ে প্রস্তুত জেলেরা অপেক্ষা সুন্দরবনে ঢোকার

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
টোকেন নিয়ে প্রস্তুত জেলেরা অপেক্ষা সুন্দরবনে ঢোকার

সুন্দরবনে অবৈধভাবে পারশে মাছের পোনা আহরণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জেলেদের। সুন্দরবনে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন এসব জেলেরা। এ ব্যাপারে বন বিভাগের সঙ্গে যাবতীয় চুক্তি সেরে ফেলেছেন তাঁরা।

টোকেন সংগ্রহ করে সুন্দরবনে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা জেলেদের মাধ্যমে জানা গেছে, সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য প্রতিটি ট্রলার মালিককে প্রবেশের অনুমতি পেতে আগাম দিতে হবে ১ লাখ টাকা। তার পরে টোকেন সংগ্রহ করতে হবে পোনা আহরণকারীদের। পুরো মৌসুম এই টোকেনের মাধ্যমে লেনদেন হবে টাকা। প্রতিবার (প্রতি টিপে) পারশে মাছের পোনা নিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করলে তাদের দিতে হবে আরও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ।

জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় জনপদ কয়রা, শ্যামনগর, আশাশুনি, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার অনেকে দীর্ঘদিন ধরে পারশের পোনা আহরণের পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা খুলনাতে যোগদান করার পরে বিগত ২ বছর পোনা আহরণ বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি সহ ব্যবস্থাপনা সংগঠনের সাবেক এক নেতা নলিয়ানে গিয়ে কোন কর্মকর্তাকে কোন স্টেশনে রাখতে হবে সেসব চুক্তি সেরে ফেলেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহারাজপুর ইউনিয়নের এক পোনা আহরণকারী  বলেন, ২০টা বোট সুন্দরবনে প্রবেশ করতে তারা ২০ লাখ টাকা দিতে সম্মত হলেও তাদের চাহিদা ৩০ লাখ টাকা। যে কারণে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে একটু দেরি হচ্ছে। এ মুহূর্তে ট্রলারে ক্ষুদ্র ফাঁসের জাল নিয়ে সুন্দরবন অভ্যন্তরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে পোনা আহরণকারী  জেলে বহর। তাদের ২০-২৫ জনের প্রতিটি বহরে (দলে) রয়েছে দুটি দ্রুতিগামী ট্রলার, তিন-চার সেট ক্ষুদ্র ফাঁসের জাল এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জামাদি।

পোনাআহরনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে সাদা মাছ পরিবহনের জন্য বন অভ্যন্তরে ট্রলার প্রবেশের অনুমতি নিয়ে আসে তারা। ওই অনুমতি পত্র নিয়ে স্থানীয় ফরেস্ট স্টেশন থেকে সাদা মাছ ও কাঁকড়া ধরার পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করে। টানা তিন-চার মাস এভাবেই চলবে গহীন সুন্দরবনে পারশে মাছের পোনা আহরণের নামে ধ্বংসযজ্ঞ।

কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় জানান, ডিসেম্বর মাসের শেষ এবং জানুয়ারি মাসের শুরুতেই সুন্দরবনের নদ-নদী ও শাখা উপ শাখায় সাগর থেকে উঠে আসা মা মাছেরা ডিম ছাড়ে। এ সময় নিষিদ্ধ ক্ষুদ্র ফাঁসের জালের সাহায্যে পোনা আহরণের ফলে এক প্রজাতির পোনা আহরণের সময় অনভিজ্ঞ জেলেরা প্রায় একশ’ প্রজাতির অন্যান্য মাছের পোনা নিধন করে। ফলে মৎস্য সম্পদ ও জলজপ্রানী মারাত্মক হুমকিতে থাকে।

খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডক্টর আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, সাদা মাছ ধরার বৈধ পাস পারমিট নিয়ে নিষিদ্ধ ক্ষুদ্র ফাঁসের জাল দিয়ে পোনা নিধন করার কোন সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া অবৈধ কাজের সঙ্গে বন বিভাগের কারও সম্পৃক্ততা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত